কলকাতা, 27 জানুয়ারি: সিঙ্ঘু বর্ডারে চলা কৃষকদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়ে দেশজুড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে বিরোধীরা ৷ ঠিক সেই সময় কলকাতার ফুটপাথে নিজেদের দাবি নিয়ে অনশন করছেন আন-এডেড মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকারা । প্রশাসন কোনও সদর্থক পদক্ষেপ না নেওয়ায় গতকাল তালা হাতে বেতন ভিক্ষা চান তাঁরা ৷
চোখে ঘুম নেই ৷ পেটে অন্ন নেই ৷ কলকাতার রাজপথে অসুস্থ শরীর নিয়ে বেতন ভিক্ষা করছেন শিক্ষকরা ৷ রাজ্য সরকার অনুমোদিত আন-এডেড মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ, 9 বছর ধরে কোনও বেতন তাঁদের দেওয়া হয়নি ৷ আর সেজন্য সাধারণতন্ত্র দিবসে ভিক্ষুকের বেশে রাস্তায় থালা হাতে বেতন-ভিক্ষা চাইলেন তাঁরা। যোগ দিয়েছিলেন প্রায় 200 জন মাদ্রাসা শিক্ষক। সিংঙ্ঘু বর্ডারে আন্দোলনরত কৃষকদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এমনকী সিঙ্ঘু বর্ডারে দলের সাংসদকে পাঠিয়ে তাঁদের সঙ্গে কিছুদিন আগে ফোনে কথাও বলেন তিনি ৷ কিন্তু অনশনরত শিক্ষকদের প্রতি তাঁর কোনও বার্তা পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ ৷ তাঁর এই দু'রকম অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকরা । মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ জাভেদ মিয়াঁদাদ বলেন,''মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্রতি সদয় হন। তাঁর সরকার আমাদের এক-দুমাস নয়, 9 বছর ধরে কোনও বেতন দেয়নি ৷"
সল্টলেকে সিটি সেন্টারের কাছে ওয়েস্ট বেঙ্গল রেকগনাইজ়ড আন-এডেড মাদ্রাসা টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের অবস্থানের ছিল 17তম দিন। অবস্থানের পাশাপাশি চলা অনশনও গতকাল 11তম দিন পড়ল। তাঁরা এর আগে মৃত্যু পরবর্তী পোশাক পরে কাফন আন্দোলন করছেন ৷ অনশনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তবে এখনও পর্যন্ত রাজ্য সরকার একবারও তাঁদের দাবিদাওয়া নিয়ে আলোচনায় বসেনি। এই পরিস্থিতিতে সাধারণতন্ত্র দিবসে ভিক্ষা আন্দোলন করলেন মাদ্রাসা শিক্ষকরা। সোমবার দুপুর 2টো থেকে 3টে পর্যন্ত ফুটপাথে ভিক্ষুকের বেশে থালা হাতে বসে রইলেন তাঁরা। থালায় "আমরা শিক্ষক, আমাদের ভিক্ষা দিন", "দিদির রাজত্বে আমরা 9 বছর বেতনহীন" মতো বার্তা লেখা।
শেখ জাভেদ মিয়াঁদাদ বলেন, "আমাদের দীর্ঘ 9 বছর বেতন যে অবস্থা করেছে তাতে আমাদের থেকে ভিক্ষুকরা ভালো অবস্থায় আছে। আমাদের এক পয়সাও সাম্মানিক বা বেতন নেই। আমরা ৯ বছর বিনা বেতনে একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাজ করে যাচ্ছি। অথচ আমাদের বলা হচ্ছে আপনাদের দিয়ে দেওয়া হবে। এটা তো 1-2 মাস নয়, 9 বছর ধরে চলছে। আমাদের এমনই আর্থিক অবস্থা যে এর থেকে আমরা যদি রাস্তায় বসে ভিক্ষা করতাম তাহলে দুটি খেতে পেতাম।"