ETV Bharat / city

Drug Dealing in Kolkata : বিমানে ঝুঁকি বাড়ায় কলকাতা বন্দরই এখন মাদক পাচারকারীদের পছন্দের শীর্ষে - West Bengal Police

কলকাতা বিমানবন্দরে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করা হয়েছে ৷ তারপরই বেশ কয়েক কোটি টাকার মাদক ধরাও পড়েছে ৷ এরপরই শহরে মাদক পাচারের ক্ষেত্রে নতুন ধরন লক্ষ্য করা যাচ্ছে ৷ পাচারকারীরা বিমানবন্দর ছেড়ে সেফ করিডর বানিয়েছে কলকাতা বন্দর এবং সংসগ্ন এলাকাকে ৷ বন্দরে জাহাজে বিদেশ থেকে মালপত্র আসার সময় তার মধ্যেই লুকিয়ে ঢুকছে মাদক ৷ নিরাপত্তাবাহিনীর নজর এড়িয়ে তারপর সেগুলি সড়ক পথে ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ৷ আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের হদিশ মিলতেই তদন্তে নেমেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স ৷

কলকাতায় মাদক পাচার
কলকাতায় মাদক পাচার
author img

By

Published : Aug 14, 2021, 9:27 PM IST

কলকাতা, 14 অগস্ট : কলকাতার ক্ষেত্রে করিডর রুট পরিবর্তন করেছে আন্তর্জাতিক মাদক সরবরাহকারীরা । কলকাতা বিমানবন্দরে লাগাতার কড়া নিরাপত্তার ফলে এখন কলকাতা বন্দর (Kolkata Port) এলাকার দিকেই ঝুঁকেছে তারা । মাদক পাচার থেকে শুরু করে মাদক সরবরাহ, কী চলছে না এখানে । ধীরে ধীরে কলকাতা বন্দর এলাকাকে নিজেদের সেফ করিডর হিসাবে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীরা ৷

মূলত মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, আরব-সহ একাধিক দেশ থেকে ঢুকছে মাদক ৷ বিমানবন্দর এলাকায় যেটা করতে পারছিল না, সেটা বন্দর এলাকায় সহজেই করতে পারছে মাদক সরবরাহকারীরা । আর তা হল, সরবরাহকারীদের সহজলভ্যতা । বন্দর এলাকায় একাধিক ব্যক্তি মাদককাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে দাবি পুলিশের । তাদের মূল কাজ হল, বন্দর থেকে মাদক সযত্নে বের করে, তা বলে দেওয়া ঠিকানায় সড়ক পথে পৌঁছে দেওয়া ।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এসটিএফের (STF) গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে আন্তর্জাতিক মাদক সরবরাহের অভিযোগে গ্রেফতার করেন ৷ ধৃতদের সূত্র ধরেই এই মাদক কাণ্ডের তদন্তে অগ্রগতি পেতে চাইছে ৷ এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম নগরপাল (এসটিএফ) ভি সলোমন নেশাকুমার ফোনে জানান, "আমাদের তদন্ত চলছে । বন্দর এলাকায় আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের একটা হদিশ মিলেছে । তল্লাশি অভিযান অত্যন্ত গোপনে চলছে । এই মুহূর্তে কিছু বলা ঠিক হবে না ।"

প্রশ্ন উঠেছে, কেন আন্তর্জাতিক মাদক সরবরাহকারীরা বা পাচারকারীরা নিজেদের সেফ করিডর হিসাবে কলকাতা বন্দরকেই বেছে নিল ? জানা গিয়েছে, আগে কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে এরাজ্যে বিদেশ থেকে ঢুকত মাদক । কিন্তু বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করার পরই বেশ কয়েক কোটি টাকার মাদক ধরা পড়ে কলকাতা বিমানবন্দরে ।

ফলে কিছুটা হলেও নিজেদের অস্বিত্ব হারিয়েছিল আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীরা । কিন্তু সম্প্রতি কলকাতা বন্দর এলাকাকে তারা নিজেদের স্বর্গরাজ্য হিসাবে দেখতে শুরু করে । লালবাজার সূত্রে খবর, বন্দর এলাকার মধ্যে মূলত গার্ডেনরিচ এবং একবালপুরে মাদক কারবারীদের আনাগোনা । কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ মাদক সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে সেভাবে কোনও ব্যবস্থা নেয় না ৷ তবে কলকাতা পুলিশের এসএসপিডি বা স্টাফ স্পেশাল পোর্ট ডিভিশনের (SSPD) গোয়েন্দারা মাদক পাচারকারীদের রুখতে তৎপর । সম্প্রতি এসএসপিডি'র হাত ধরে বন্দর এলাকায় কয়েকজন মাদক সরবরাহকারীদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে সাফল্য এনে দিয়েছে ।

লালবাজার জানাচ্ছে, বন্দর এলাকায় নিয়মিত জাহাজ চলাচলের সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে মাদক কারবারিরা । বিদেশ থেকে সামগ্রী বন্দর হয়ে এরাজ্যে ঢোকে । সেই সব সামগ্রীর সঙ্গেই নিজেদেরই লোক মারফত মাদক চোরা পথে এরাজ্যে নিয়ে চলে আসে তারা । বন্দরে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (CISF) দ্বারা তল্লাশির সময় ধরা পড়লে তা সড়ক পথে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে ৷

জলপথ ছাড়াও বাবুঘাটের বাসস্ট্যান্ডকেও মাদক পাচারকারীরা ব্যবহার করে বলে অভিযোগ । কলকাতার বাবুঘাটের বাসস্ট্যান্ড উত্তর বন্দর থানার আওতাধীন ৷ তবে সেখানে সেই ভাবে চেকিং হয় না । পাশাপাশি বাবুঘাট বাসস্ট্যান্ডে একাধিক লম্বা রুটের বাস ঢোকা-বেরনো করে ৷ সেই সুযোগকেও তারা কাজে লাগায় । মূলত মাঝ রাস্তায় বাসে সামগ্রী লোডিং হওয়ার সময় লুকিয়ে মাদকও লোড করে নেওয়া হয় ৷ এবং তা শহরে নিয়ে আসা হয় ৷ অতীতে একাধিকবার বাবুঘাটের বাসস্ট্যান্ড থেকে মাদক ও মাদক সরবরাহকারীদের গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে ৷ তাছাড়াও গঙ্গা নদীর মাঝে নৌকা নিয়ে গিয়েও মাদক সরবরাহ হয় বলে অভিযোগ । গোটাটাই চলে বাবুঘাটের সংলগ্ন এলাকাজুড়ে ।

আরও পড়ুন : Illegal call centers : শহরে বাড়ছে অবৈধ কলসেন্টার, জালিয়াতদের ফাঁদে বেকার যুবক-যুবতীরা

কলকাতা, 14 অগস্ট : কলকাতার ক্ষেত্রে করিডর রুট পরিবর্তন করেছে আন্তর্জাতিক মাদক সরবরাহকারীরা । কলকাতা বিমানবন্দরে লাগাতার কড়া নিরাপত্তার ফলে এখন কলকাতা বন্দর (Kolkata Port) এলাকার দিকেই ঝুঁকেছে তারা । মাদক পাচার থেকে শুরু করে মাদক সরবরাহ, কী চলছে না এখানে । ধীরে ধীরে কলকাতা বন্দর এলাকাকে নিজেদের সেফ করিডর হিসাবে ব্যবহার করছে আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীরা ৷

মূলত মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, আরব-সহ একাধিক দেশ থেকে ঢুকছে মাদক ৷ বিমানবন্দর এলাকায় যেটা করতে পারছিল না, সেটা বন্দর এলাকায় সহজেই করতে পারছে মাদক সরবরাহকারীরা । আর তা হল, সরবরাহকারীদের সহজলভ্যতা । বন্দর এলাকায় একাধিক ব্যক্তি মাদককাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বলে দাবি পুলিশের । তাদের মূল কাজ হল, বন্দর থেকে মাদক সযত্নে বের করে, তা বলে দেওয়া ঠিকানায় সড়ক পথে পৌঁছে দেওয়া ।

পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) এসটিএফের (STF) গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে আন্তর্জাতিক মাদক সরবরাহের অভিযোগে গ্রেফতার করেন ৷ ধৃতদের সূত্র ধরেই এই মাদক কাণ্ডের তদন্তে অগ্রগতি পেতে চাইছে ৷ এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম নগরপাল (এসটিএফ) ভি সলোমন নেশাকুমার ফোনে জানান, "আমাদের তদন্ত চলছে । বন্দর এলাকায় আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের একটা হদিশ মিলেছে । তল্লাশি অভিযান অত্যন্ত গোপনে চলছে । এই মুহূর্তে কিছু বলা ঠিক হবে না ।"

প্রশ্ন উঠেছে, কেন আন্তর্জাতিক মাদক সরবরাহকারীরা বা পাচারকারীরা নিজেদের সেফ করিডর হিসাবে কলকাতা বন্দরকেই বেছে নিল ? জানা গিয়েছে, আগে কলকাতা বিমানবন্দর হয়ে এরাজ্যে বিদেশ থেকে ঢুকত মাদক । কিন্তু বিমানবন্দরে নিরাপত্তা জোরদার করার পরই বেশ কয়েক কোটি টাকার মাদক ধরা পড়ে কলকাতা বিমানবন্দরে ।

ফলে কিছুটা হলেও নিজেদের অস্বিত্ব হারিয়েছিল আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীরা । কিন্তু সম্প্রতি কলকাতা বন্দর এলাকাকে তারা নিজেদের স্বর্গরাজ্য হিসাবে দেখতে শুরু করে । লালবাজার সূত্রে খবর, বন্দর এলাকার মধ্যে মূলত গার্ডেনরিচ এবং একবালপুরে মাদক কারবারীদের আনাগোনা । কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ মাদক সরবরাহকারীদের বিরুদ্ধে সেভাবে কোনও ব্যবস্থা নেয় না ৷ তবে কলকাতা পুলিশের এসএসপিডি বা স্টাফ স্পেশাল পোর্ট ডিভিশনের (SSPD) গোয়েন্দারা মাদক পাচারকারীদের রুখতে তৎপর । সম্প্রতি এসএসপিডি'র হাত ধরে বন্দর এলাকায় কয়েকজন মাদক সরবরাহকারীদের নিজেদের হেফাজতে নিয়ে সাফল্য এনে দিয়েছে ।

লালবাজার জানাচ্ছে, বন্দর এলাকায় নিয়মিত জাহাজ চলাচলের সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে মাদক কারবারিরা । বিদেশ থেকে সামগ্রী বন্দর হয়ে এরাজ্যে ঢোকে । সেই সব সামগ্রীর সঙ্গেই নিজেদেরই লোক মারফত মাদক চোরা পথে এরাজ্যে নিয়ে চলে আসে তারা । বন্দরে সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (CISF) দ্বারা তল্লাশির সময় ধরা পড়লে তা সড়ক পথে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে ৷

জলপথ ছাড়াও বাবুঘাটের বাসস্ট্যান্ডকেও মাদক পাচারকারীরা ব্যবহার করে বলে অভিযোগ । কলকাতার বাবুঘাটের বাসস্ট্যান্ড উত্তর বন্দর থানার আওতাধীন ৷ তবে সেখানে সেই ভাবে চেকিং হয় না । পাশাপাশি বাবুঘাট বাসস্ট্যান্ডে একাধিক লম্বা রুটের বাস ঢোকা-বেরনো করে ৷ সেই সুযোগকেও তারা কাজে লাগায় । মূলত মাঝ রাস্তায় বাসে সামগ্রী লোডিং হওয়ার সময় লুকিয়ে মাদকও লোড করে নেওয়া হয় ৷ এবং তা শহরে নিয়ে আসা হয় ৷ অতীতে একাধিকবার বাবুঘাটের বাসস্ট্যান্ড থেকে মাদক ও মাদক সরবরাহকারীদের গ্রেফতারের ঘটনা ঘটেছে ৷ তাছাড়াও গঙ্গা নদীর মাঝে নৌকা নিয়ে গিয়েও মাদক সরবরাহ হয় বলে অভিযোগ । গোটাটাই চলে বাবুঘাটের সংলগ্ন এলাকাজুড়ে ।

আরও পড়ুন : Illegal call centers : শহরে বাড়ছে অবৈধ কলসেন্টার, জালিয়াতদের ফাঁদে বেকার যুবক-যুবতীরা

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.