কলকাতা, 24 ডিসেম্বর: সিলিং থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা ৷ মাঝেমধ্য়েই চোখের সামনে ভেঙে পড়ছে চাঙড় ৷ অভিজাত শেক্সপিয়ার সরণি (Shakespeare Sarani post office) এলাকার বাড়িটি কোনও পোড়োবাড়ি নয় ৷ ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী ডাকঘর (poor condition of post office) ৷ যেখানে গ্রাহক সংখ্যাও প্রচুর ৷ প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই পরিষেবা দিয়ে চলেছেন কর্মীরা ৷ মাথার উপর ত্রিপল চড়িয়ে চলছে নিত্যদিনের কাজ ৷
শেক্সপিয়ার সরণির (Kolkata news) মতো একটি অভিজাত এলাকায় গ্রাহক সংখ্যার প্রবল চাপের মধ্যেই মাত্র চারজন কর্মী নিয়ে ডাকঘরের কাজ চলছে ৷ তার উপর ডাকঘরটির শোচনীয় অবস্থা ৷ কার্যত প্রাণ হাতে করে হাসিমুখে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার থেকে শুরু করে প্রতিটি কর্মী ।
ডাকঘরের এই বাড়িটি তৈরি হয় ব্রিটিশ আমলে । পোস্ট অফিসের ভেতরে ঢুকলে এখনও দেখা যাবে সেই সময়ের কাঠের কাজের রেলিং । এমনকী এই ডাকঘরটি চালু হওয়ার পর ইংরেজ পোস্টমাস্টার যেই চেয়ারটিতে বসতেন, সেটি আজও রাখা রয়েছে সযত্নে । তবে এখনকার পোস্টমাস্টার এবং কর্মীদের প্রতি ধরা পড়ল চূড়ান্ত অবহেলার ছবি ৷ কর্মীদের মাথার উপর চাঁই ভেঙে পড়ে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সিলিং-এর নিচে টাঙানো রয়েছে ত্রিপল । আর তার ভরসাতেই নিচে বসে কাজ করছেন সবাই । ঝুঁকি নিয়েই পরিষেবা নিতে আসতে হচ্ছে গ্রাহকদেরও ৷
আরও পড়ুন: WB Governor Jagdeep Dhankhar : এখানে শাসকের আইনই আইন, শিক্ষা নিয়ে রাজ্যকে আক্রমণ রাজ্যপালের
দৃশ্যত একটি পোড়োবাড়ির চেহারা ধারণ করলেও পৌরনিগমের তরফে বাড়িটিকে এখনও বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করা হয়নি । এই বাড়ির যে অংশটি অর্থাৎ গাড়ি বারান্দাটি ফুটপাথ ঢেকে রয়েছে, সেখানেও মাঝেমধ্যেই খসে পড়ে বড় বড় চাঁই । আবার বৃষ্টির সময় ছাদ দিয়ে ঝরঝর করে জল পড়ে । তাই মাঝেমধ্যেই চিঠিপত্র-সহ প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যায় ৷ বাড়িটির দু‘টি থামকে জড়িয়ে জটলা বেঁধে থাকা অসংখ্য বিদ্যুতের খোলামুখ তার যে কোনও সময় বড়সড় বিপদ ডেকে আনতে পারে । পোস্ট অফিসের এমন বেহাল দশার কথা বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বহুবার জানানো হয়েছে, তবে কোনও লাভ হয়নি ৷
যদিও এবিষয়ে পোস্ট মাস্টার বা এখনকার কর্মীরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি । এই বিষয়ে চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল ওয়েস্টবেঙ্গল সার্কেল জয়রাম চারুকেশীর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তা করা যায়নি ৷ তাঁকে হোয়াটসঅ্যাপ করা হলেও তিনি উত্তর দেননি ।
কিছু পুরোনো এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে যে, বহুদিন ধরে বাড়িটির ভাড়া মাসে 700 টাকা । যদিও এই টাকা বেড়ে 5000 হওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু মালিকপক্ষের সঙ্গে কিছু জটিলতার সৃষ্টি হয় । এই জন্য সংস্কারের কাজও বন্ধ হয়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।