কলকাতা, 17 ডিসেম্বর : লাভপুর হত্যা মামলায় মুকুল রায়ের গ্রেপ্তারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বড়দিনের ছুটির পর 2 জানুয়ারি হাইকোর্ট খুলবে । সেই দিন থেকে পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত মুকুল রায়কে গ্রেপ্তার করা যাবে না - আজ এই নির্দেশ দিল উচ্চ আদালত । হাইকোর্ট আরও জানিয়েছে, আপাতত বোলপুর থানা, শান্তিনিকেতন থানা ও লাভপুর থানা এলাকায় মুকুল রায়ের ঢোকার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে । তদন্তের প্রয়োজনে পুলিশ মুকুলবাবুকে ডাকতে পারে । বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও শুভ্রা ঘোষের ডিভিশন বেঞ্চ বড়দিনের ছুটির চার সপ্তাহ পর ফের এই মামলার শুনানি হবে জানিয়েছে ।
বীরভূমের লাভপুরে 3 জন CPI(M) কর্মীকে খুনের মামলায় 4 ডিসেম্বর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করে বোলপুর আদালত । তাতে নাম রয়েছে বীরভূম জেলার তৎকালীন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা মনিরুল ইসলামের । পাশাপাশি হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে মামলায় নাম উঠেছে তৃণমূল ছেড়ে BJP-তে যোগ দেওয়া মুকুল রায়েরও । রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই তাঁর নাম যোগ করা হয়েছে চার্জশিটে - এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মুকুল রায় ।
2010 সালের 4 জুন লাভপুরের নবগ্রামে সালিশি সভার নাম করে তিন ভাইকে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ৷ সেই সময় মনিরুল ইসলাম ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লক দলের নেতা । এরপর তিনি যোগ দেন তৃণমূলে । কুটুন শেখ, ধানু শেখ ও তুরুক শেখকে পিটিয়ে মারার অভিযোগে লাভপুর মামলায় পুলিশ মোট 52 জনের নামে চার্জশিট জমা দেয় । কিন্তু তাতে নাম ছিল না মনিরুলের । এরপর হাইকোর্টের নির্দেশে পুনরায় এই মামলার তদন্ত শুরু হয় । কারণ মৃত তিন সন্তানের মা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিচারের দাবিতে ।
আরও পড়ুন : হাইকোর্টের নির্দেশে লাভপুর হত্যাকাণ্ডের চার্জশিটে মণিরুল-মুকুলের নাম
এই মামলায় 4 ডিসেম্বর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা পড়ে । তাতে নাম জড়ায় মনিরুল ইসলামের । হত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে BJP নেতা মুকুল রায়ের নামও যুক্ত হয়েছে । এর বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন মুকুলবাবু । তাঁর দাবি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই তাঁর নাম জড়ানো হয়েছে । আজ মামলার শুনানিতে আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায় বলেন," 2010 সালের ঘটনা । 2014 সালে যখন প্রথম চার্জশিট পেশ হয়েছিল, কোথাও মুকুলবাবুর নাম ছিল না । কিন্তু আবার নতুন করে চলতি বছরের 4 ডিসেম্বর যে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট পেশ করা হয়েছে তাতে তাঁর নাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ।" অন্যদিকে সরকার পক্ষের আইনজীবী শাশ্বত গোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, " লাভপুর এবং বোলপুর অঞ্চলে একাধিক সাক্ষী রয়েছেন ৷ তাদের অভিযোগের ভিত্তিতেই এই চার্জশিট পেশ করা হয়েছে । ফলে এই মামলার আরও তদন্তের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করছি ।" দুই পক্ষের বক্তব্য শোনার পর ডিভিশন বেঞ্চ বড়দিনের ছুটির পর পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত মুকুল রায়ের গ্রেপ্তারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেন ।