কলকাতা, 3 ডিসেম্বর : শনিবার রাতেই ওড়িশা উপকূলে আছড়ে পড়ছে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ (Cyclone Jawad to hit Odisha on Saturday night) ৷ তারপরই তা ধেয়ে আসবে বঙ্গের দিকে, এমনটাই জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস । বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এই ঘূর্ণিঝড় থেকে রাজ্যবাসীকে রক্ষা করতে তৎপর হয়েছে প্রশাসন ৷ কন্ট্রোলরুম খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার । শুক্রবার সকালে বিদ্যুৎ ভবনে বিভিন্ন জেলার বিডিও, এসডিওদের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে একথা জানালেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস । শনিবার থেকে খোলা থাকবে এই কন্ট্রোল রুম । রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের হেল্প নম্বর- 8900793503/04 ৷ সিএসসির হেল্প নম্বর- 9831079666/9831083700 ৷ পরিস্থিতি বিচার করে এই কন্ট্রোল রুম খোলা থাকার মেয়াদ বাড়তে পারে । এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী ৷ পাশাপাশি পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীদের ছুটিও বাতিল করা হয়েছে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৷
শুক্রবারের বৈঠক শেষে অরূপ বলেন, "যেকোন ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য রাজ্যের বিদ্যুৎ বিভাগ প্রস্তুত । শনিবার থেকেই কর্মীরা বিভিন্ন জায়গায় থাকবেন । কলকাতা পৌরসভা-সহ বিভিন্ন জেলার বিভিন্ন প্রান্তে আমাদের কর্মীরা তৈরি রয়েছেন ৷ সংশ্লিষ্ট এলাকার ভিডিয়ো সংগ্রহ চলবে ৷ এসডিও ও জেলার উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ।" দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে সমস্ত কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানালেন বিদ্যুৎমন্ত্রী । অরূপ বলেন, "পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মঙ্গলবার পর্যন্ত সকলের ছুটি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।"
কিছুদিন আগেই বর্ষার জমা জলে বিদ্যুতের তার পড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রয়াত হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন । সাংবাদিকরা সেই ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলে কিছুটা মেজাজ হারান অরূপ । তিনি বলেন, "কেউ যদি আগে থেকে গাছের উপরে উঠে বসে থাকেন তবে সেক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার নেই । আমরা কতদিক দেখব ?" রাজ্যের বিধানসভা ভোটের আগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনায় কিছুটা বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্য সরকারকে ।
বিদ্যুৎ বিভাগের পাশাপাশি শহরে পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৈরি রয়েছে কলকাতা পৌরসভাও ৷ বিদ্যুৎ বিভাগের মতো কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে শহরেও ৷
ঘূর্ণিঝড় নিয়ে কলকাতা পুরসভার সিদ্ধান্ত :
1. কলকাতা সবক'টি বাতিস্তম্ভ খতিয়ে দেখতে হবে । কোথাও কোনও বিদ্যুতের তার খোলা রয়েছে কিনা বা ফিডার বক্স খোলা রয়েছে কিনা তা দেখতে হবে ।
2. কলকাতা পৌরসভার পাশাপাশি সিইএসসি এবং পুলিশও থাকবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে ৷ পৌরসভা, সিইএসসি এবং পুলিশ একত্রে কলকাতায় সমন্বয় রেখে কাজ করে যাবতীয় ঝড় পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী কাজগুলো করবে ।
3. আগামিকাল থেকে কলকাতা পৌরসভার কন্ট্রোল রুমে 24 ঘণ্টা কর্মী থাকবেন ৷
4. নিকাশি পাম্পিং স্টেশনগুলিতে কোনও রকম পাম্প খারাপ হয়েছে কিনা তা আগেভাগে দেখে নেওয়া হবে ৷ প্রয়োজনে অতিরিক্ত পাম্প শুক্রবার থেকেই যুক্ত করতে হবে ।
5. শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলির ওপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে ।
6. বরো অধিকর্তারা নিজ নিজ বরো অধীনস্থ এলাকায় বিশেষ নজর রাখবেন ।
7. শহরে কোথায় কত গাছ ভেঙে পড়ছে তার উপর নজর রাখা হবে ৷ সেগুলি দ্রুত সাফাইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে ।
8. জল জমার জন্য যে এলাকাগুলি কুখ্যাত, সেখানকার জল নিষ্কাশনের জন্য প্রথমে ব্যবস্থা নিতে হবে ।
9. শহরের একাধিক জায়গায় ত্রিফলা বাতিস্তম্ভগুলি বেহাল হয়ে রয়েছে । সেগুলি ঝড় এবং বৃষ্টির সময় সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে ।
10. সাফাই কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হচ্ছে ৷ তাঁদের সর্বদা সতর্ক রাখতে হবে এবং সাফাই গাড়িগুলিকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Cyclone Jawad Updates: শনিবারই আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ, প্রভাব বাংলাতেও