ETV Bharat / city

বাংলা-সহ বিভিন্ন ভাষার ডেস্ক, ব্যাঙ্ক প্রতারণা যেন একটি শিল্প - ব্যাঙ্ক প্রতারণা

জামতারায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রতারণার বিষয়টিকে । রীতিমতো কর্পোরেট কায়দায় খোলা হয়েছে অফিস । সেখানে তৈরি হয়েছে নানা ভাষার ডেস্ক । ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের যুবক-যুবতীদের রীতিমতো চাকরি দেওয়া হয়েছে সেখানে ।

Jamtara gang
ব্যাঙ্ক প্রতারণা
author img

By

Published : Dec 3, 2019, 3:07 PM IST

কলকাতা, 3 ডিসেম্বর : “এ তো রীতিমতো শিল্প ! একেবারে কর্পোরেট আদব-কায়দা ।" ব্যাঙ্ক প্রতারণার তদন্তে নেমে সম্প্রতি জামতারায় গিয়ে এমন কথাই বেরিয়ে আসে কলকাতা পুলিশের দুঁদে গোয়েন্দার মুখ থেকে ।

কী দেখেছেন গোয়েন্দারা ? জামতারায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রতারণার বিষয়টিকে । রীতিমতো কর্পোরেট কায়দায় খোলা হয়েছে অফিস । সেখানে তৈরি হয়েছে নানা ভাষার ডেস্ক । ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের যুবক-যুবতীদের রীতিমতো চাকরি দেওয়া হয়েছে সেখানে । কাজ আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে জামতারা গ্যাংয়ের পাল্লায় পড়তে বাধ্য করা ।

কী ভাবে কাজ চালায় এই প্রতারণা চক্র? কলকাতার গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা জানাচ্ছেন, এদের আছে নানা ধরনের মোডাস অপারেন্ডি । যার মধ্যে সাম্প্রতিকতম হল, অনলাইনে রেস্টুরেন্টের টেবিল বুক করার বিষয়টি কাজে লাগিয়ে প্রতারণা । বিষয়টি বেশ অভিনব । নামী রেস্টুরেন্টের নাম লিখে গুগল ম্যাপকে কাজে লাগিয়ে সেখানেই দিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফোন নম্বর । গ্রাহকরা আসল রেস্টুরেন্টের ফোন নম্বর ভেবে যোগাযোগ করছেন সেখানে । আর পাল্লায় পড়ছেন জামতারা গ্যাংয়ের ।

গত 16 নভেম্বর এক রেস্তরাঁ কর্তা দেবাশিস ঘোষ অভিযোগ দায়ের করেন লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় । জানান, তাঁর রেস্তরাঁর নামে কেউ বা কারা গুগলে বিজ্ঞাপন দিয়েছে । সেখানে দেওয়া হয়েছে একটি ফোন নম্বরও । তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন বহু কাস্টমার ওই বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে বহু টাকা খুইয়েছেন । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, কাস্টমাররা যখন ওই মোবাইল নম্বরটিতে যোগাযোগ করতেন তখন তাঁদের বলা হত বুকিং চার্জ হিসেবে 10 টাকা দিতে হবে । কাস্টমারের মোবাইল নম্বরে পাঠিয়ে দেওয়া হত একটি লিঙ্ক । সেই লিঙ্কই বুকিং চার্জ দেওয়ার জন্য বলা হত । লিঙ্কে 10 টাকা ট্রান্সফার করলেই কাস্টমারের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছিল হাজার হাজার টাকা । তদন্তে নেমে পুলিশ গুগলের বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরের কল ডিটেলস রেকর্ড খতিয়ে দেখে । খতিয়ে দেখা হয় অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী একটি সংস্থার রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরও । আর তখনই বোঝা যায় এটি 'জামতারা গ্যাং' -এর কাজ । কারণ ওই অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বর এবং বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরের লোকেশন ঝাড়খণ্ডের জামতারাতেই দেখা যায় । অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী একটি সংস্থায় লেনদেন খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে বেশিরভাগ টাকা সরানো হয়েছে জামতারার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কারুয়া শাখায় । ওই অ্যাকাউন্ট রহিম আনসারি নামে একজনের । সহজেই পাওয়া যায় ওই ব্যক্তির ঠিকানা । আর তারপরই জামতারায় অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ । আজ জামতারা থেকে রহিম ছাড়াও গ্রেপ্তার করা হয়েছে নুরুল আনসারি এবং মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে ।

যাদবপুরে ATM প্রতারণার যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, সেক্ষেত্রেও ক্লোন কার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর । সেই সূত্রে সন্দেহ মাথাচাড়া দিচ্ছে ঘটনার পেছনে জামতারা গ্যাং নেই তো?

কলকাতা, 3 ডিসেম্বর : “এ তো রীতিমতো শিল্প ! একেবারে কর্পোরেট আদব-কায়দা ।" ব্যাঙ্ক প্রতারণার তদন্তে নেমে সম্প্রতি জামতারায় গিয়ে এমন কথাই বেরিয়ে আসে কলকাতা পুলিশের দুঁদে গোয়েন্দার মুখ থেকে ।

কী দেখেছেন গোয়েন্দারা ? জামতারায় শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রতারণার বিষয়টিকে । রীতিমতো কর্পোরেট কায়দায় খোলা হয়েছে অফিস । সেখানে তৈরি হয়েছে নানা ভাষার ডেস্ক । ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের যুবক-যুবতীদের রীতিমতো চাকরি দেওয়া হয়েছে সেখানে । কাজ আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে জামতারা গ্যাংয়ের পাল্লায় পড়তে বাধ্য করা ।

কী ভাবে কাজ চালায় এই প্রতারণা চক্র? কলকাতার গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা জানাচ্ছেন, এদের আছে নানা ধরনের মোডাস অপারেন্ডি । যার মধ্যে সাম্প্রতিকতম হল, অনলাইনে রেস্টুরেন্টের টেবিল বুক করার বিষয়টি কাজে লাগিয়ে প্রতারণা । বিষয়টি বেশ অভিনব । নামী রেস্টুরেন্টের নাম লিখে গুগল ম্যাপকে কাজে লাগিয়ে সেখানেই দিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফোন নম্বর । গ্রাহকরা আসল রেস্টুরেন্টের ফোন নম্বর ভেবে যোগাযোগ করছেন সেখানে । আর পাল্লায় পড়ছেন জামতারা গ্যাংয়ের ।

গত 16 নভেম্বর এক রেস্তরাঁ কর্তা দেবাশিস ঘোষ অভিযোগ দায়ের করেন লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় । জানান, তাঁর রেস্তরাঁর নামে কেউ বা কারা গুগলে বিজ্ঞাপন দিয়েছে । সেখানে দেওয়া হয়েছে একটি ফোন নম্বরও । তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন বহু কাস্টমার ওই বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে বহু টাকা খুইয়েছেন । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, কাস্টমাররা যখন ওই মোবাইল নম্বরটিতে যোগাযোগ করতেন তখন তাঁদের বলা হত বুকিং চার্জ হিসেবে 10 টাকা দিতে হবে । কাস্টমারের মোবাইল নম্বরে পাঠিয়ে দেওয়া হত একটি লিঙ্ক । সেই লিঙ্কই বুকিং চার্জ দেওয়ার জন্য বলা হত । লিঙ্কে 10 টাকা ট্রান্সফার করলেই কাস্টমারের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছিল হাজার হাজার টাকা । তদন্তে নেমে পুলিশ গুগলের বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরের কল ডিটেলস রেকর্ড খতিয়ে দেখে । খতিয়ে দেখা হয় অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী একটি সংস্থার রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরও । আর তখনই বোঝা যায় এটি 'জামতারা গ্যাং' -এর কাজ । কারণ ওই অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বর এবং বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরের লোকেশন ঝাড়খণ্ডের জামতারাতেই দেখা যায় । অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী একটি সংস্থায় লেনদেন খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে বেশিরভাগ টাকা সরানো হয়েছে জামতারার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কারুয়া শাখায় । ওই অ্যাকাউন্ট রহিম আনসারি নামে একজনের । সহজেই পাওয়া যায় ওই ব্যক্তির ঠিকানা । আর তারপরই জামতারায় অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ । আজ জামতারা থেকে রহিম ছাড়াও গ্রেপ্তার করা হয়েছে নুরুল আনসারি এবং মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে ।

যাদবপুরে ATM প্রতারণার যে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, সেক্ষেত্রেও ক্লোন কার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর । সেই সূত্রে সন্দেহ মাথাচাড়া দিচ্ছে ঘটনার পেছনে জামতারা গ্যাং নেই তো?

Intro:কলকাতা, ৩ ডিসেম্বর: “এ তো রীতিমতো শিল্প! একেবারে কর্পোরেট আদব-কায়দা।" সম্প্রতি ব্যাংক প্রতারণার তদন্তে নেমে জামতারায় গিয়ে এমন কথাই বেরিয়েছিল কলকাতা পুলিশের দুঁদে গোয়েন্দার মুখ থেকে। Body:কি দেখেছে গোয়েন্দারা?

জামতারায় কুটির শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রতারণার বিষয়টিকে। রীতিমতো কর্পোরেট কায়দায় খোলা হয়েছে অফিস। সেখানে তৈরি হয়েছে নানা ভাষার ডেস্ক। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের যুবক-যুবতীদের রীতিমতো চাকরি দেওয়া হয়েছে সেখানে। কাজ আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলে জামতারা গ্যাংয়ের পাল্লায় পড়তে বাধ্য করা।

কিভাবে কাজ চালায় এই প্রতারণা চক্র?

কলকাতার গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মা জানাচ্ছেন, এদের আছে নানা ধরনের মোডাস অপারেন্ডি। কার মধ্যে সাম্প্রতিকতম অনলাইনে রেস্টুরেন্টের টেবিল বুক করার বিষয়টি কে কাজে লাগিয়ে প্রচারণা। বিষয়টি বেশ অভিনব। নামি রেস্টুরেন্টের নাম লিখে গুগল ম্যাপকে কাজে লাগিয়ে সেখানেই দিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফোন নাম্বার। গ্রাহকরা আসল রেস্টুরেন্টের ফোন নাম্বার ভেবে যোগাযোগ করছেন সেখানে। আর পাল্লায় পড়ছেন জামতারা গ্যাংয়ের।

গত 16 নভেম্বর এক রেস্তরাঁ কর্তা দেবাশিস ঘোষ অভিযোগ দায়ের করেন লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় । জানান, তাঁর রেস্তরাঁর নামে কেউ বা কারা গুগলে দিয়েছে বিজ্ঞাপন । সেখানে দেওয়া হয়েছে একটি ফোন নম্বরও । তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন বহু কাস্টমার ওই বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে বহু টাকা খুইয়েছেন । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, কাস্টমাররা যখন ওই মোবাইল নম্বরটিতে যোগাযোগ করতেন তখন তাঁদের বলা হত বুকিং চার্জ হিসেবে 10 টাকা দিতে হবে । কাস্টমারের মোবাইল নম্বরে পাঠিয়ে দেওয়া হত একটি লিঙ্ক । সেই লিঙ্কই বুকিং চার্জ দেওয়ার জন্য বলা হত । লিঙ্কে 10 টাকা ট্রান্সফার করলেই কাস্টমারের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছিল হাজার হাজার টাকা । তদন্তে নেমে পুলিশ গুগলের বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরের কল ডিটেলস রেকর্ড খতিয়ে দেখে । খতিয়ে দেখা হয় অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী একটি সংস্থায় রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরও । আর তখনই বোঝা যায় এটি 'জামতারা গ‍্যাং-এর কাজ । কারণ ওই অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বর এবং বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরের লোকেশন ঝাড়খণ্ডের জামতারাতেই দেখা যায় । অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী একটি সংস্থায় লেনদেন খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে বেশিরভাগ টাকা সরানো হয়েছে জামতারার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কারুয়া শাখায় । ওই অ্যাকাউন্ট রহিম আনসারি নামে একজনের । সহজেই পাওয়া যায় ওই ব্যক্তির ঠিকানা । আর তারপরই জামতারায় অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ । আজ জামতারা থেকে রহিম ছাড়াও গ্রেপ্তার করা হয়েছে নুরুল আনসারি এবং মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে। 

আরো আছে। কিছুদিন আগের কথা। সোনারপুর থানা এলাকার বাসিন্দা সুপর্ণা রায় নামে এক স্বাস্থ্যকর্মীকে ফোন করে তাঁর আধার ও প্যান কার্ডের নম্বর নেয় জামতারা গ্যাং-এর দুই পাণ্ডা। অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা গায়েব করে নেয় তারা। ঘটনার তদন্তে নেমে জামতারা গ্যাংয়ের যুগল মাহাতো ও সুরেশ মণ্ডল নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জানা যায়, সুপর্ণা দেবী প্রতারকদের জানিয়েছিলেন ওটিপি। সেই সূত্র ধরেই পেটিএমের মাধ্যমে টাকা সরিয়ে ফেলা হয়।Conclusion:আবার সটলেক এ ঘটনায় সরাসরি এটিএমে হানা দিয়েছিল এই জামতারা গ্যাং। সল্টলেক এফডি ব্লকের কাছে শ্রীরামপুরের এক বাসিন্দা এটিএম থেকে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন। 8000 টাকা তুলতে চেয়েছিলেন তিনি। মেশিনের কিবোর্ডে হাত দিতেই কালো হয়ে যায় এটিএমের স্ক্রিন। বাধ্য হয়ে এটিএম থেকে বেরিয়ে যান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে দু’জন যুবক কিছুটা তাড়াহুড়ো করেই এটিএমে ঢুকে যায়। সন্দেহ হয় ওই ব্যক্তির। কিছুটা দূরে অপেক্ষা করতে থাকেন। কয়েক মুহূর্ত পরেই তিনি একটি এসএমএস পান। তাতে বলা হয়, অ্যাকাউন্ট থেকে আট হাজার টাকা তোলা হয়েছে। দৌড়ে এটিএমে গিয়ে একজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। তার কাছ থেকে ক্লোনড্ এটিএম কার্ড। ধৃত সঞ্জয় মণ্ডল জামতারা গ্যংয়ের সদস্য ছিল।

যাদবপুরে এটিএম প্রতারণার যে অভিযোগ দায়ের হচ্ছে সেক্ষেত্রেও এই ক্লোন কার্ড ব্যবহার করা হচ্ছে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। সেই সূত্রে সন্দেহ মাথাচাড়া দিচ্ছে ঘটনার পেছনে জামতারা গ্যাং নেই তো?








ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.