কলকাতা, 16 জুন : গতকাল দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে (Presidential Election 2022) সামনে রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উদ্যোগ কতটা সফল, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে জাতীয় রাজনীতির অন্দরমহলে । বিজেপি (BJP) এই বৈঠককে ব্যর্থ বলে কটাক্ষ করেছে ৷ তাদের ব্যাখ্যা, কোনও একটি নাম চূড়ান্ত করতে পারেনি বিরোধীরা ৷ কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) অবশ্য এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নয় । তাদের বক্তব্য, বিরোধীদের অধিকাংশ দলকে একসঙ্গে আলোচনার টেবিলে আনতে পারাই সাফল্য ৷ এই বিরোধী জোটই 2024-এর লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha Elections 2024) সাফল্যের মুখ দেখাবে ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, নয়াদিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে গতকাল যে বৈঠক হয়, সেই বৈঠকের মূল উদ্যোক্তা ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি নিজেই চিঠি লিখে 22টি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ৷ বৈঠকে উপস্থিত ছিল 17টি দল ৷ সেখানে বিরোধীদের পক্ষ থেকে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারকে রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয় ৷ কিন্তু তিনি সেই প্রস্তাব নাকচ করে দেন ৷
পরে একাধিক নাম নিয়ে আলোচনা হয় ৷ কিন্তু কোনও ঐকমত্য পৌঁছতে পারেনি বিরোধীরা ৷ আর সেই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে গেরুয়া শিবির বৈঠককে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় ব্যর্থতা হিসেবে দেখছে । তাদের মতে, 24-এর লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে বিচার করা সঠিক হবে না । কারণ, লোকসভা নির্বাচনের আগে হাতে এখনও অনেক সময় রয়েছে । বিরোধী ঐক্য ভেঙে যেতে বেশি সময় লাগবে না ৷ 24-এর সম্ভাবনা নিয়ে এত ভাবনা অনর্থক ।
যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সত্যি কথা বলতে কী এই মুহূর্তে বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী শক্তিগুলি একজোট হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে । অতীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের একজোট হওয়ার ডাক দিয়েছিলেন । কিন্তু তাদের এক জায়গায় আনতে তিনি পারেনি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও জানেন যে চেষ্টা তিনি করছেন, তা সফল হওয়া অত সহজ নয় । আর সে কারণেই এক মঞ্চে 17টি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে আসাকে তৃণমূল কংগ্রেস নিজের সাফল্য হিসেবে দেখছে ।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘অন্যদিকে বিজেপিও এটা জানে তারা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একক প্রার্থী দিতে না পারলেও এনডিএর বাইরে নবীন পট্টনায়ক বা আরও কয়েকটি যে বন্ধু রাজনৈতিক দল রয়েছে, তাদের সমর্থন পেলে বিরোধীরা যাই বলুক তাদের কাছে নিজেদের প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে সমস্যা হবে না । আর সে কারণেই এই কটাক্ষ করেছে বিজেপি ।’’
অন্যদিকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক রথীন মণ্ডল বলেছেন, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপি দু’পক্ষই রাজনীতিক দিক থেকে ঠিক এখানে । তবে 17টি বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে এক জায়গায় করা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটা বড় সাফল্য হিসেবেই দেখতে হবে ৷’’
আরও পড়ুন : Presidential Election 2022 : নারাজ পাওয়ার, রাষ্ট্রপতি পদে সর্বসম্মত প্রার্থীর খোঁজে বিরোধীরা