কলকাতা, 24 জুন : গত 5 মে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কিন্তু তিনি এই মুহূর্তে বিধায়ক নন ৷ তাই মুখ্যমন্ত্রী পদে থাকতে গেলে তাঁকে নভেম্বরের 5 তারিখের মধ্যে ভোটে জিতে বিধায়ক হতে হবে ৷
এই প্রক্রিয়া নিয়ে এমনিতে কোনও সমস্যা তৈরি হওয়ার কথা নয় ৷ কারণ, রাজ্যের সাতটি বিধানসভা আসন ফাঁকা রয়েছে ৷ সেখানে আগামী ছ’মাসের মধ্যে উপনির্বাচন হওয়ার কথা ৷ সেই আসনগুলির মধ্যে রয়েছে ভবানীপুরও ৷ তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই আসন থেকেই ভোটে লড়তে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
আরও পড়ুন : নন্দীগ্রাম মামলা অন্য বেঞ্চে সরানোর আবেদনের রায়দান স্থগিত হাইকোর্টের
কিন্তু মমতা আদৌ 5 নভেম্বরের আগে ভোটের ময়দানে নামতে পারবেন তো ! এই নিয়ে অনিশ্চিয়তার মেঘ ক্রমশ জমতে শুরু করেছে ৷ নিন্দুকেরা বলছে যে, করোনা পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি ৷ তার উপর তৃতীয় ঢেউ আসার পূর্বাভাস রয়েছে ৷ এটাকেই কারণ দেখিয়ে বিজেপি ভোট পিছোতে নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে ৷ সেক্ষেত্রে রাজ্যের সাত আসনে উপনির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আগামী বছরের গোড়ায় ৷ কারণ, সেই সময় উত্তরপ্রদেশ-সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভার নির্বাচন রয়েছে ৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন যে, সাধারণত এই ধরনের উপনির্বাচন নিয়ে কোনও রাজনৈতিক বিবাদ হয় না ৷ 2011 সালেও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় উপনির্বাচনে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন ৷ সেই ভোট হয়েছিল ওই বছর সেপ্টেম্বর নাগাদ ৷ ততদিনে মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে মমতা কাটিয়ে ফেলেছেন প্রায় সাড়ে চারমাস ৷
আরও পড়ুন : কোভ্যাকসিন প্রধানমন্ত্রীর মাথা থেকে আবিষ্কার হয়েছে : মমতা
একই কথা বলছেন বর্ষীয়ান সাংবাদিক তথা রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাশিস মৈত্র ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমার ধারণা ভোট হবে ৷ সাংঘাতিক কিছু না ঘটলে উপনির্বাচন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হবে ৷’’
এবার প্রশ্ন হচ্ছে যে, ‘সাংঘাতিক’ কিছু কি ঘটতে পারে ? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ অবশ্য সেই দিকেই ইঙ্গিত করছেন ৷ তাঁদের বক্তব্য, এবারের নির্বাচনে গোড়া থেকেই মমতাকে টার্গেট করেছিল বিজেপি ৷ মমতা হেরে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় তাঁকে নানা সময় নানা কটাক্ষে বিদ্ধ করছে বিজেপি ৷ ফলে করোনার কারণ দেখিয়ে উপ নির্বাচন আটকে দিতে পারলে তারা মমতাকে অপদস্থ করার সুযোগ পেয়ে যাবে ৷
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee : বঙ্গে দ্রুত উপ-নির্বাচনের দাবিতে সরব মুখ্যমন্ত্রী
কারণ, তখন পদত্যাগ করতে হবে মমতাকে ৷ বদলে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দিতে হবে দলের অন্য কাউকে ৷ সেটাকে বিজেপি রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে ৷ তবে এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে তৃণমূলের কোনও ক্ষতি হবে না বলেই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক শুভাশিস মৈত্র ৷ তাঁর কথায়, ‘‘যদি ভোট না হয়, তাতে কী আর হবে ! নবান্নে যেই বসুন, চালাবেন তো মমতা ৷ তবে অনেক অপশন আছে ৷ সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পথ খোলা থাকবে ৷’’
এমন পরিস্থিতি আঁচ করেই সম্ভবত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপনির্বাচন নিয়ে মুখ খুলেছেন ৷ গত বুধবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক থেকে দ্রুত উপনির্বাচন করানোর আর্জি জানান তিনি ৷ তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই উপনির্বাচন হয়ে যাক ৷ সাতদিন প্রচার করতে দিক ৷ সকাল 10টা থেকে সন্ধে 7টা পর্যন্ত প্রচার হোক ৷ আমাদের কোনও অসুবিধা নেই ৷’’