কলকাতা, 11 ফেব্রুয়ারি : মধুচন্দ্রিমা যে শেষ, সেই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল আগেই । এবার বোধহয় বিচ্ছেদ স্রেফ সময়ের অপেক্ষা । অন্তত পারিপার্শ্বিক ইঙ্গিত যা বলছে, তাতে সেই বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে ।
আইপ্যাক ও তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পর্ককে আপাতত এভাবেই ব্যাখ্যা করা যায় ৷ কারণ, শুক্রবার আইপ্যাকের অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে আনফলো করা হয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (ipac unfollow mamata banerjee on twitter) । একইভাবে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোরের ফলোয়ার লিস্টেও নেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (PK Unfollow Mamata Banerjee on Twitter) । এই নিয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানান, কে কাকে আনফলো করবে, সেটা তাদের ব্যাপার ৷
তাহলে এই সংস্থার সঙ্গে কি তৃণমূল কংগ্রেসের সম্পর্কের ইতি ? সম্প্রতি ভোট কুশলী এই সংস্থার সঙ্গে দলের প্রবীণ নেতাদের দূরত্ব তৈরি হয়েছিল । এমনকি এটাও শোনা যায় যে টেলিফোনে কথা কাটাকাটি হয় প্রশান্ত কিশোর ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে । যদিও এখনও কোনও পক্ষই এই নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেনি ৷
তবে মনে করা হচ্ছে গোয়ায় বিধানসভা নির্বাচনের পরেই পাকাপাকিভাবে সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হতে পারে তৃণমূলের সঙ্গে আইপ্যাকের । তৃণমূলের অন্দরের খবর, সম্ভবত আর থাকছে না আইপ্যাক এবং তৃণমূলের মধ্যে চুক্তি । তৃণমূল সুপ্রিমোকে আনফলো করা তারই ইঙ্গিত । আরও ভাল করে বললে বলা যায়, এটা বিচ্ছেদ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ । কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আনফলো করলেও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আইপ্যাক এবং প্রশান্ত কিশোর উভয়ের ফলোয়ার তালিকায় রয়েছেন । আর এই বিষয়টি যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করা হচ্ছে ।
এই ভোট কুশলী সংস্থাকে তৃণমূলের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে নিয়ে এসেছিলেন বর্তমানে তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই । এমনকি দলীয় সূত্রে এমনও শোনা যাচ্ছে, আইপ্যাকের সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ হলে শেষ পর্যন্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । এই অবস্থায় আগামীতে কি হতে চলেছে, তা বোঝা মুশকিল । তবে একটা বিষয় স্পষ্ট ,হয়তো আইপ্যাকের সঙ্গে আগামিদিনে তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও যোগাযোগ থাকবে না ।
তথ্য বলছে, গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই নির্বাচনী সংস্থার ফলোয়ার তালিকায় ছিল মোট 77 জন । এর মধ্যে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধি, বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের মতো দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীরা রয়েছেন । এদের অনেকের সঙ্গে প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে অতীতেও । কিন্তু তাতেও তাদের আনফলো করেনি আইপ্যাক । কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সম্পর্ক ছিন্ন ঘোষণা করার আগেই তৃণমূল নেত্রীকে আনফলো করল আইপ্যাক । রাজনৈতিক মহলের মতে, এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে নির্বাচনে উপদেষ্টা সংস্থার সঙ্গে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কতটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে ।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, কলকাতার পৌরভোটের সময় থেকেই তৃণমূলের সঙ্গে আইপ্যাকের দূরত্ব বাড়ছিল ক্রমেই । বাকি পৌরভোটের ক্ষেত্রে সেই ফাটল আরও চওড়া হল ।
আরও পড়ুন : One Man One Post In TMC: তৃণমূলের এক ব্যক্তি, এক পদ নীতির পক্ষে পোস্ট তৃণমূল যুব নেতার