ETV Bharat / city

দুর্গার আগমন ও গমনে বাহন নির্ণয় কীভাবে ও কেন ?

"গুরৌ শুক্রে চ দোলায়াং" ৷ এবার সেই দোলায় আগমন দুর্গার ৷ ফলাফল মড়ক ৷ টের পাচ্ছে কোরোনার দুনিয়া !

vehicle godess durga uses every year
vehicle godess durga uses every year
author img

By

Published : Oct 5, 2020, 7:00 AM IST

মিলে যাচ্ছে ! হুবহু! এবার দুর্গার দোলায় আগমন ৷ আর শাস্ত্রে বলেছে দোলায় আগমন মানে নির্ঘাৎ মড়ক ৷ আপনি সনাতন শাস্ত্র তথা পুরান ইত্যাদিকে পাত্তা দিন আর না দিন, এবারের ভয়াবহ পরিবেশে মানতে তো হবেই--- মহামারীর কথা মিলে গেল কেমন ! কোভিডে দিশেহারা রাজ্য, দেশ তথা গোটা পৃথিবী ৷ আশার কথা হল, সেই শাস্ত্রই বলছে, এবার মা দুর্গার গমন গজে ৷ মানে হাতিতে ৷ যার ফল শুভ ৷ শস্যপূর্ণ সমৃদ্ধ বসুন্ধরা ৷ তাহলে কি মায়ের গমনের পরেপরেই দুঃস্বপ্ন ঘুচবে ? ভ্যাকসিন এসে যাবে ? তারপর সব আগের মতোন ! সংশয়পূর্ণ এই প্রশ্নের উত্তর জানে একমাত্র সময় ৷ কিন্তু, অন্য একটি প্রশ্নের উত্তর আপাতত দেওয়া যায় ৷ প্রশ্ন হল, এই যে মায়ের আগমন ও গমন, যা শাস্ত্র অনুযায়ী অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ৷ তা নির্ভর করে কীসের উপর ৷ আরেক প্রশ্নও মনে জাগে, মায়ের বাহন সিংহ তো রয়েইছে ৷ তবে, এতসব বাহনে গমনাগমন কেন ?

শাস্ত্র বলা হয়েছে---

"রবৌ চন্দ্রে গজারূঢ়া ঘোটকে শনি ভৌময়োঃ৷

গুরৌ শুক্রে চ দোলায়াং নৌকায়াং বুধবাসরে৷"

দু'লাইনের এই মন্ত্রেই রয়েছে দেবীর আগমন ও গমনে বাহন নির্ণয়ের সূত্র ৷ শুরুতেই বলা হয়েছে "রবৌ চন্দ্রে গজারূঢ়া"৷ অর্থাৎ, সপ্তমী যদি রবিবার বা সোমবার হয়, তবে দুর্গার আগমন হবে গজে ৷ মানে হাতিতে ৷ একইভাবে দশমী যদি রবি বা সোমবার পড়ে, দুর্গার গমন হবে গজে ৷ এতে করে ফল কী ?

"গজে চ জলা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা ৷" অর্থাৎ, দেবী যদি গজে গমনাগমন করেন তবে পৃথিবীতে জলের সমতা বজায় থাকবে, শস্য ফলন ভালো হবে ৷ একটা বিষয় স্পষ্ট, প্রাচীন ভারতের অন্যতম পার্থিব সম্পদ ছিল "গজ"রাজ ৷ রাজা মহারাজার বৈভব মাপা হত হাতিশালের হাতির সংখ্যা দিয়ে ৷ "গজ" ছিল সমৃদ্ধির প্রতিক ৷

কিন্তু "ঘোটকে শনি ভৌময়োঃ" ৷ অর্থাৎ, শনি বা মঙ্গলবার সপ্তমী পড়লে দেবীর আগমন হবে ঘোটকে বা ঘোড়ায় ৷ একইভাবে দশমী শনি বা মঙ্গলবারে পড়লে দেবীর গমন হবে ঘোড়ায় ৷ এর ফল?

চরম বিশৃঙ্খলা ও ক্ষয়ক্ষতি ৷ শাস্ত্রের ভাষায় "ছত্রভঙ্গন্তরঙ্গমে" ৷ আসলে ঘোড়া দ্রুতগামী ও প্রভুভক্ত যেমন, তেমনই তার আচরণে কখনও কখনও উদভ্রান্ত ভাবও লক্ষ্য করা যায় ৷ এর উপর শাস্ত্রে বলেছে, মঙ্গল গ্রহের সেনপতি ৷ তেজস্বী ও বীরদর্পী ৷ শনি হল কূট বুদ্ধি সম্পন্ন, প্রায়শই অনিষ্টকারী ৷ অতএব, দেবীর ঘোটকে গমনাগমন হলে দুই গ্রহাধিপতির প্রভাব পড়ে মর্ত্যভূমিতে ৷

তবে, "গুরৌ শুক্রে চ দোলায়াং"৷ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার সপ্তমী পড়লে দেবী দোলায় আসবেন ৷ ওই দুই দিন দশমী পড়লে যাবেন দোলায় ৷ এবং "দোলাং মড়কাং ভবেৎ"৷ যার মানে, দেবী দোলায় চড়ে এলে তার ফল মর্ত্যে বহু মৃত্যু ৷ মৃত্যু হতে পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগে, যুদ্ধে কিংবা মহামারীতে ৷ বুঝতে হবে, দোলা হল পালকির মতো একটি যান ৷ স্থিরতা কম, সদা দোদুল্যমান, অল্পে ভঙ্গুর ৷ এসবই বিপদের কারণ ৷ অতএব দুর্গার দোলায় গমনাগমনে ব্যহত হতে পারে মর্ত্যভূমির স্থিরতা ৷ মৃত্যু হতে পারে বহু মানুষের ৷

মন্ত্রে সবশেষে বলা হয়েছে "নৌকায়াং বুধবাসরে" ৷ বুধবার সপ্তমী পড়লে দেবীর নৌকোয় আগমন ও গমন ৷ আর বুধবার দশমী পড়লে নোকোয় গমন ৷ শাস্ত্র বলছে, "নৌকাং জলবৃদ্ধিশ্চ শস্যবৃদ্ধির্ভবেৎ সদা" ৷ যার অর্থ হল দেবী দুর্গা নৌকায় গমনাগমন করলে মর্ত্যভূমিতে শস্য খুব ভালো হয়ে থাকে ৷ তবে অতি বৃষ্টি তথা বন্যার আশঙ্কা থাকে ৷ সহজ হিসেব হল জল বৃদ্ধির প্রভাব পড়বেই ৷ তাছাড়া নৌকা উৎকৃষ্ট জলযান নয় ৷ তবে, বুধবার হল সৌম্যবার ৷ পণ্ডিতরা বলেন, বারের মধ্যে বুধ হল গিয়ে সরল কিন্তু চঞ্চল মানসিকতা সম্পন্ন ৷ সৌম্য স্বভাবের কারণে মর্ত্যে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে, শস্যসম্পদে ভের ওঠে পৃথিবী ৷ আবার বালখিল্য আচরণে মর্ত্যে দেখা দিতে জলবৃদ্ধি, এবং তা থেকে ক্ষতি হতে পারে ৷

দোলায় কী ক্ষতি হয়েছে তা বুঝতে তো আর বাকি নেই ৷ শুধু মায়ের এসে পড়ার পর বদলাক সব ৷ "নৌকায়াং বুধবাসরে" সমৃদ্ধি ফিরুক ৷ কোরোনামুক্ত হোক পৃথিবী ৷

মিলে যাচ্ছে ! হুবহু! এবার দুর্গার দোলায় আগমন ৷ আর শাস্ত্রে বলেছে দোলায় আগমন মানে নির্ঘাৎ মড়ক ৷ আপনি সনাতন শাস্ত্র তথা পুরান ইত্যাদিকে পাত্তা দিন আর না দিন, এবারের ভয়াবহ পরিবেশে মানতে তো হবেই--- মহামারীর কথা মিলে গেল কেমন ! কোভিডে দিশেহারা রাজ্য, দেশ তথা গোটা পৃথিবী ৷ আশার কথা হল, সেই শাস্ত্রই বলছে, এবার মা দুর্গার গমন গজে ৷ মানে হাতিতে ৷ যার ফল শুভ ৷ শস্যপূর্ণ সমৃদ্ধ বসুন্ধরা ৷ তাহলে কি মায়ের গমনের পরেপরেই দুঃস্বপ্ন ঘুচবে ? ভ্যাকসিন এসে যাবে ? তারপর সব আগের মতোন ! সংশয়পূর্ণ এই প্রশ্নের উত্তর জানে একমাত্র সময় ৷ কিন্তু, অন্য একটি প্রশ্নের উত্তর আপাতত দেওয়া যায় ৷ প্রশ্ন হল, এই যে মায়ের আগমন ও গমন, যা শাস্ত্র অনুযায়ী অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ৷ তা নির্ভর করে কীসের উপর ৷ আরেক প্রশ্নও মনে জাগে, মায়ের বাহন সিংহ তো রয়েইছে ৷ তবে, এতসব বাহনে গমনাগমন কেন ?

শাস্ত্র বলা হয়েছে---

"রবৌ চন্দ্রে গজারূঢ়া ঘোটকে শনি ভৌময়োঃ৷

গুরৌ শুক্রে চ দোলায়াং নৌকায়াং বুধবাসরে৷"

দু'লাইনের এই মন্ত্রেই রয়েছে দেবীর আগমন ও গমনে বাহন নির্ণয়ের সূত্র ৷ শুরুতেই বলা হয়েছে "রবৌ চন্দ্রে গজারূঢ়া"৷ অর্থাৎ, সপ্তমী যদি রবিবার বা সোমবার হয়, তবে দুর্গার আগমন হবে গজে ৷ মানে হাতিতে ৷ একইভাবে দশমী যদি রবি বা সোমবার পড়ে, দুর্গার গমন হবে গজে ৷ এতে করে ফল কী ?

"গজে চ জলা দেবী শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা ৷" অর্থাৎ, দেবী যদি গজে গমনাগমন করেন তবে পৃথিবীতে জলের সমতা বজায় থাকবে, শস্য ফলন ভালো হবে ৷ একটা বিষয় স্পষ্ট, প্রাচীন ভারতের অন্যতম পার্থিব সম্পদ ছিল "গজ"রাজ ৷ রাজা মহারাজার বৈভব মাপা হত হাতিশালের হাতির সংখ্যা দিয়ে ৷ "গজ" ছিল সমৃদ্ধির প্রতিক ৷

কিন্তু "ঘোটকে শনি ভৌময়োঃ" ৷ অর্থাৎ, শনি বা মঙ্গলবার সপ্তমী পড়লে দেবীর আগমন হবে ঘোটকে বা ঘোড়ায় ৷ একইভাবে দশমী শনি বা মঙ্গলবারে পড়লে দেবীর গমন হবে ঘোড়ায় ৷ এর ফল?

চরম বিশৃঙ্খলা ও ক্ষয়ক্ষতি ৷ শাস্ত্রের ভাষায় "ছত্রভঙ্গন্তরঙ্গমে" ৷ আসলে ঘোড়া দ্রুতগামী ও প্রভুভক্ত যেমন, তেমনই তার আচরণে কখনও কখনও উদভ্রান্ত ভাবও লক্ষ্য করা যায় ৷ এর উপর শাস্ত্রে বলেছে, মঙ্গল গ্রহের সেনপতি ৷ তেজস্বী ও বীরদর্পী ৷ শনি হল কূট বুদ্ধি সম্পন্ন, প্রায়শই অনিষ্টকারী ৷ অতএব, দেবীর ঘোটকে গমনাগমন হলে দুই গ্রহাধিপতির প্রভাব পড়ে মর্ত্যভূমিতে ৷

তবে, "গুরৌ শুক্রে চ দোলায়াং"৷ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার বা শুক্রবার সপ্তমী পড়লে দেবী দোলায় আসবেন ৷ ওই দুই দিন দশমী পড়লে যাবেন দোলায় ৷ এবং "দোলাং মড়কাং ভবেৎ"৷ যার মানে, দেবী দোলায় চড়ে এলে তার ফল মর্ত্যে বহু মৃত্যু ৷ মৃত্যু হতে পারে প্রাকৃতিক দুর্যোগে, যুদ্ধে কিংবা মহামারীতে ৷ বুঝতে হবে, দোলা হল পালকির মতো একটি যান ৷ স্থিরতা কম, সদা দোদুল্যমান, অল্পে ভঙ্গুর ৷ এসবই বিপদের কারণ ৷ অতএব দুর্গার দোলায় গমনাগমনে ব্যহত হতে পারে মর্ত্যভূমির স্থিরতা ৷ মৃত্যু হতে পারে বহু মানুষের ৷

মন্ত্রে সবশেষে বলা হয়েছে "নৌকায়াং বুধবাসরে" ৷ বুধবার সপ্তমী পড়লে দেবীর নৌকোয় আগমন ও গমন ৷ আর বুধবার দশমী পড়লে নোকোয় গমন ৷ শাস্ত্র বলছে, "নৌকাং জলবৃদ্ধিশ্চ শস্যবৃদ্ধির্ভবেৎ সদা" ৷ যার অর্থ হল দেবী দুর্গা নৌকায় গমনাগমন করলে মর্ত্যভূমিতে শস্য খুব ভালো হয়ে থাকে ৷ তবে অতি বৃষ্টি তথা বন্যার আশঙ্কা থাকে ৷ সহজ হিসেব হল জল বৃদ্ধির প্রভাব পড়বেই ৷ তাছাড়া নৌকা উৎকৃষ্ট জলযান নয় ৷ তবে, বুধবার হল সৌম্যবার ৷ পণ্ডিতরা বলেন, বারের মধ্যে বুধ হল গিয়ে সরল কিন্তু চঞ্চল মানসিকতা সম্পন্ন ৷ সৌম্য স্বভাবের কারণে মর্ত্যে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকে, শস্যসম্পদে ভের ওঠে পৃথিবী ৷ আবার বালখিল্য আচরণে মর্ত্যে দেখা দিতে জলবৃদ্ধি, এবং তা থেকে ক্ষতি হতে পারে ৷

দোলায় কী ক্ষতি হয়েছে তা বুঝতে তো আর বাকি নেই ৷ শুধু মায়ের এসে পড়ার পর বদলাক সব ৷ "নৌকায়াং বুধবাসরে" সমৃদ্ধি ফিরুক ৷ কোরোনামুক্ত হোক পৃথিবী ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.