কলকাতা, 7 এপ্রিল: রাজ্যে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল 91। এই তথ্য স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। যদিও, স্বাস্থ্য দপ্তরের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, এ রাজ্যে COVID-19-এ আক্রান্তের সংখ্যা 61। তথ্যের এতখানি ফারাক নিয়ে রীতিমতো চিন্তিত রাজ্যের চিকিৎসকরা। তাঁদের মতে, এটা যে কারণেই হোক, এতে করে ক্ষতি হবে সাধারণ মানুষের, এমনকী চিকিৎসকদের। এই বিষয়ে এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠনের প্রতিনিধিদের মন্তব্য, সঠিক তথ্য প্রকাশ করা না হলে কিন্তু বিপদ আরও বাড়বে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চিকিৎসার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত রয়েছেন, তাঁরাও বিপদে পড়বেন।
মঙ্গলবার, 7 এপ্রিল সকাল ন'টায় সর্বশেষ আপডেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইট বলছে, এই রাজ্যে COVID-19-এ আক্রান্তের সংখ্যা 91। 13 জন সুস্থ হয়েছেন বা হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েছেন। তবে, সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী স্বাস্থ্য মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে এখনও রাজ্যে 3 জন COVID-19 আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এ দিকে, গতকাল সোমবার, 6 এপ্রিল স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, এই রাজ্যে COVID-19-এ আক্রান্তের সংখ্যা 61। বুলেটিনে জানানো হয়নি কতজন COVID-19 আক্রান্ত সুস্থ হয়েছেন অথবা হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েছেন। জানানো হয়নি, কতজন COVID-19 আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে।
এই বিষয়েই এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, "এটা একটা ইন্টারন্যাশনাল প্রোটোকল। শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের ব্যাপার নয়। COVID-19-কে প্যানডেমিক ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ( WHO)। গোটা পৃথিবীতে কোথায় কী পরিস্থিতি সেই বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতেই হবে। যাতে প্যানডেমিক কন্ট্রোলের জন্য আন্তর্জাতিক স্তরের স্বাস্থ্য সংগঠনগুলি নির্দেশিকা তৈরি করতে পারে। এবং দেশের বা রাজ্যের স্বাস্থ্য সংগঠনগুলি যাতে ব্যবস্থা নিতে পারে। কিন্তু, প্রতিদিন যদি তথ্য না দেওয়া হয় কিংবা তথ্যের মধ্যে যদি লুকোচুরি থাকে, তা হলে প্যানডেমিক কন্ট্রোলের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেই বিষয়ে মিসগাইডেড করা হবে।"
চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, "এটা শুধু রাজ্যের ব্যাপার নয়। কেন্দ্রীয় সরকারও রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কোন তথ্য পাঠানো হচ্ছে কেন্দ্রকে, বা স্বাস্থ্য মন্ত্রক কীভাবে তথ্য পাচ্ছেন, এই বিষয়ে আমরা জানি না। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে যদি তথ্য পাঠানো হয়ে থাকে, তা হলে সেই তথ্য এ রাজ্যের চিকিৎসার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, তাঁরা জানতে পারবেন না! এটাও আশ্চর্যের বিষয়।"
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, "ওয়েবসাইটে এক রকম তথ্য থাকবে এবং ঘোষণায় অন্য রকম তথ্য থাকবে, এটা হলে সমস্যা।" তাঁর কথায়, "দুই তথ্যের মধ্যে যে ফারাক থাকছে, তাতে বুঝতে হবে কোথাও না কোথাও একটা গরমিল রয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত যাঁরা তথ্য দেন, হয় তাঁরা দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছেন। অথবা, অন্য কোনও উদ্দেশে তথ্য দেওয়া হচ্ছে না।"
এই রাজ্যেরই সরকারি চিকিৎসকদের অন্য একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "যে কোনও এপিডেমিকে সঠিক তথ্য চেপে যাওয়া হলে বিপদ বেড়ে যায়। আমরা আশঙ্কায় রয়েছি। অবিলম্বে সঠিক তথ্য প্রকাশ করা হোক।"