কলকাতা, 15 জানুয়ারি : ‘‘আমরা তিন মাসের সময়সীমা দিয়েছি সিএজিকে ৷ তারা কবে রিপোর্ট দিতে পারবে জানাক।" আমফান মামলায় মন্তব্য প্রধান বিচারপতির। আজ মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ইতিমধ্যেই রাজ্যে এসে পৌঁছেছেন সিএজি-র আধিকারিকরা৷ তাঁরা বারবার রাজ্যের আধিকারিকদের কাছে তথ্য চেয়ে চাপ দিচ্ছেন ৷ এই অবস্থায় মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তদন্ত প্রক্রিয়ার উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ার আবেদন আদালতের কাছে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়। কিন্তু প্রধান বিচারপতি টিবিএন রাধাকৃষ্ণনের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় সংস্থাকে আমরা দায়িত্ব দিয়েছি৷ তারা কবে রিপোর্ট দিতে পারবে, তা তারা জানাক৷’’ সোমবার ফের মামলার শুনানি হবে বলে আদালত জানিয়েছে।
গত 1 ডিসেম্বর আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কতজনকে টাকা দেওয়া হয়েছে এবং কতজন টাকা পাননি তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সিএজি-কে তিন মাসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়, সিএজি-র সঙ্গে যেন সমস্ত রকমের সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু গত 6 জানুয়ারি সিএজি তদন্তের নির্দেশ ফের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য সরকার। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি হয়৷
গত বছরের 16 মে ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলা। ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই সরকারি ক্ষতিপূরণ পাননি বলে অভিযোগ৷ গত 3 অগাস্ট কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন কাকদ্বীপের বাসিন্দা খয়রুল আনম শেখ নামে এক ব্যক্তি। তাঁর বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আমফানে ৷ কিন্তু তিনি ক্ষতিপূরণের কোনও টাকা পাননি বলে অভিযোগ জানিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টে। পাশাপাশি আরও চার-পাঁচটি মামলা একই দাবিতে দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে।
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে নির্দেশ দিয়েছিল, এখনও পর্যন্ত কতজন মানুষ আমফান ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন তার বিস্তারিত বিবরণ-সহ তালিকা প্রকাশ করতে রাজ্যের ওয়েবসাইটে। পাশাপাশি আবেদন সত্ত্বেও যাঁরা এখনও ক্ষতিপূরণ পাননি তাঁদের চিহ্নিত করতে। কিন্তু মামলার শুরু থেকেই রাজ্যের তেমন তৎপরতা দেখা যায়নি। প্রথম থেকেই রাজ্যের আচরণে অসন্তুষ্ট ছিল আদালত। ক্ষতিগ্রস্তদের কীভাবে অর্থবণ্টন করা হচ্ছে, সেই ব্যাপারে আদালতকে হলফনামা দেয়নি তারা।
আরও পড়ুন : টেট বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা কলকাতা হাইকোর্টে
এরপরই সিএজি তদন্তের নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় এই সংস্থাকে যাতে রাজ্য সরকার সমস্ত রকমের সহযোগিতা করে সেই নির্দেশ দেয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। এরপর 4 ডিসেম্বর রাজ্য সরকার মৌখিকভাবে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে গিয়ে এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছিল৷ কিন্তু প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছিল। রাজ্য সরকার চাইলে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারে বলে প্রধান বিচারপতি জানিয়ে ছিলেন। এর পর আবার রাজ্য সরকার লিখিতভাবে সিএজি তদন্তের নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানায়।