কলকাতা, 26 ফেব্রুয়ারি: শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ অর্থের বকেয়া স্টাডি সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা স্কুলগুলিকে মিটিয়ে দেওয়ার দাবিতে সোচ্চার হলেন রাজ্যের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের সংগঠন ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর তরফে শুক্রবার এই দাবিতে সল্টলেকের এনআইওএস-এর কলকাতা আঞ্চলিক অফিসে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। পাশাপাশি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদেও স্মারকলিপি জমা দেন প্রধান শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষিকারা ৷ এদিনের কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন তাঁদের শতাধিক প্রতিনিধি ৷
‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস’-এর সাধারণ সম্পাদক চন্দনকুমার মাইতি জানান, 2017 থেকে 2019 সাল পর্যন্ত রাজ্যের প্রায় 17 হাজার প্রশিক্ষণহীন শিক্ষক-শিক্ষিকাকে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিংয়ের (এনআইওএস) মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ডিএলএড কোর্স করানোর জন্য সেই সময় প্রায় 1 হাজার 750টি স্কুলকে স্টাডি সেন্টার হিসাবে ব্য়বহার করা হয়েছিল।
অভিযোগ, এই প্রশিক্ষণকেন্দ্র তথা স্টাডি সেন্টারগুলির জন্য রাজ্য়ের মোট বরাদ্দের পরিমাণ ছিল প্রায় 50 কোটি টাকা ৷ অথচ তারপরও এনআইওএস-এর আঞ্চলিক কার্যালয়ের তরফে এখনও পর্যন্ত কেবলমাত্র 4 কোটি 50 লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে ৷ ফলে প্রতিটি কেন্দ্রের ভাগেই প্রাপ্য়ের তুলনায় অনেক কম পরিমাণ অর্থ জুটেছে ৷ এমনকি, প্রশিক্ষণহীন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে সাড়ে 10 হাজার করে মোট 102 কোটি টাকাও আঞ্চলিক কার্যালয় তুলেছে বলে দাবি ‘অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেস’-এর।
আরও পড়ুন: নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে হাইকোর্টে মামলা প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের
সংগঠনের অভিযোগ, এত টাকা তুললেও যে সাড়ে 1 হাজার 700টি স্কুলকে স্টাডি সেন্টার হিসাবে ব্য়বহার করা হয়েছিল, তাদের প্রাপ্য অর্থ এখনও মেটানো হয়নি। এমনকি গত দু’বছর ধরে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ের হিসাব জমা দিলেও আজ পর্যন্ত ওই প্রশিক্ষণকেন্দ্রগুলি প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত রয়েছে ৷
এই প্রসঙ্গে চন্দন বলেন, ‘‘বারবার যোগাযোগ করা হলেও ওই অর্থের বরাদ্দ কেন্দ্রীয় সংস্থাটির কলকাতার আঞ্চলিক কার্যালয় মেটাচ্ছে না। ফলে, শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য কাজ করা প্রশিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা তাঁদের প্রাপ্য টাকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আর সেই বঞ্চনা, অব্যবস্থা ও বেনিয়মের প্রতিবাদেই এদিন আমরা এনআইওএস-এর আঞ্চলিক কার্যালয়ে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি ৷’’
চন্দনের অভিযোগ, প্রায় 1 হাজার 700টি স্টাডি সেন্টার তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে টাকা খরচ করে এই কোর্সকে সফলভাবে শেষ করেছে ৷ এককালীন কিছু টাকা স্টাডি সেন্টারগুলোকে দেওয়া হলেও বকেয়া টাকা মেটানো নিয়ে এনআইওএস কর্তৃপক্ষ একবার রাজ্য আর একবার কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দায়মুক্ত হতে চাইছে। অবিলম্বে আমাদের সমস্ত দাবি মানা না হলে ভবিষ্যতে আমরা বৃহত্তর আন্দোলন এবং আইনি লড়াইয়ের পথে নামব ৷’’