হাসনাবাদ, 4 জুলাই: কোনও অসৎ উদ্দেশ্যে নয়, মানসিক সমস্যার জেরেই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল হাফিজুল মোল্লা । ছেলের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে সোমবার হাসনাবাদের বাড়িতে সাংবাদিকদের এমনই জানালেন ধৃত হাফিজুলের বাবা মইদুল মোল্লা (Hafijul Mollah family urges to the administration)। হাফিজুলের বাবা বলেন, "ও (হাফিজুল) মাঝেমধ্যেই বলত স্ত্রীর সাথে নাকি বনিবনা হচ্ছে না। তাই ওকে ছেড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিয়ে করতে চায় ৷ ছেলের এই পাগলামি দেখে আমরা ওকে বোঝানোর চেষ্টা করতাম।বলতাম এটা কখনও সম্ভব নয়। মাথায় গণ্ডগোল থাকার কারণেই ও এই ধরণের কথাবার্তা বলত। ওর মানসিক রোগের চিকিৎসাও চলছিল"। হাফিজুলের যে মানসিক সমস্যা রয়েছে তা অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন প্রতিবেশী থেকে স্থানীয় পঞ্চায়েতের সদস্যও ।
উত্তর 24 পরগনার হাসনাবাদের আমলানি পঞ্চায়েতের নারায়ণপুরের বাসিন্দা হাফিজুল মোল্লা। বাড়িতে স্ত্রী, চার বছরের একটি কন্যা সন্তান ছাড়াও বৃদ্ধ বাবা, দাদা-বৌদি রয়েছে তাঁর। পরিবার সূত্রে খবর, মাসছ'য়েক আগে হাফিজুলের মানসিক সমস্যা ধরা পড়ে। তখন থেকেই চিকিৎসা চলছে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে। এখনও সে পুরোপুরি সুস্থ নয়। মানসিক সমস্যার জেরে স্ত্রীর সঙ্গে মাঝেমধ্যেই অশান্তি হত হাফিজুলের। পরিবারের দাবি, হাফিজুল কলকাতায় গাড়ি চালাত। বাড়িতেও ঠিকমতো আসত না। যখন আসত তখন সে আজগুবি চিন্তাভাবনায় মগ্ন থাকত। শনিবার রাতে হাফিজুলের সঙ্গে মোবাইলে শেষ কথা হয়েছিল পরিবারের লোকজনের। তারপর থেকে আর কোনও যোগাযোগ হয়নি ।
সোমবার টেলিভিশনের মাধ্যমে হাফিজুলের গ্রেফতারির কথা জানতে পারে পরিবারের সদস্যরা। তারপর থেকেই দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে তাদের। এর আগেও সে নবান্নে ঢোকার চেষ্টা করায় পুলিশের হাতে আটক হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে ৷ পরে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। শুধু তাই নয়, রাতের অন্ধকারে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করার অপরাধে হাসনাবাদ থানার পুলিশের হাতেও পাকড়াও হয়েছিল হাফিজুল ।
আরও পড়ুন : মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়া হাফিজুলকে 11 জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে
এবার তো সবকিছুকে ছাপিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি চত্বরে ঢুকে সে। আপাতত 11 জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে হাফিজুল মোল্লাকে ৷ তবে পরিবারের সদস্য থেকে পাড়া-প্রতিবেশী, সকলেই চাইছেন বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করুক রাজ্য প্রশাসন।