ETV Bharat / city

অভ্যর্থনা জানাল না কেউ, ফাঁকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে ফিরলেন রাজ্যপাল - Jagdeep Dhankar

আজ দুপুরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি পরিদর্শনে আসেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ কিন্তু সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য সহ কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিকই । উপাচার্যের ঘর ছিল লক করা । ফলে, আচার্যকে উপাচার্যের ঘরের বাইরের অপেক্ষা করার জায়গাতেই বসে থাকতে হয় । তারপরে তিনি লাইব্রেরি পরিদর্শনে যান । কিন্তু, সেখানেও কর্মচারীরা উপস্থিত থাকলেও, উপস্থিত ছিলেন না লাইব্রেরিয়ান সহ কোনও আধিকারিকই । সবমিলিয়ে বলা যেতে পারে ফাঁকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে আজ ফিরে গেলেন রাজ্যপাল । যা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি ।

Governor's visit to University of Calcutta
জগদীপ ধনকড়
author img

By

Published : Dec 4, 2019, 6:58 PM IST

কলকাতা, 4 ডিসেম্বর : গতকালই হঠাৎ করে স্থগিত করে দেওয়া হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বৈঠক । এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনকড়ের । বৈঠক বাতিলের পর আজ সকালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে জানান, তিনি লাইব্রেরি পরিদর্শনে আসবেন দুপুর 2টো নাগাদ । সেই অনুযায়ী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তিনি এলেও, তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য সহ কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক । উপাচার্যের ঘর ছিল লক করা । ফলে, আচার্যকে উপাচার্যের ঘরের বাইরের অপেক্ষা করার জায়গাতেই বসে থাকতে হয় । তারপর তিনি লাইব্রেরি পরিদর্শনে যান । কিন্তু, সেখানেও কর্মচারীরা উপস্থিত থাকলেও, উপস্থিত ছিলেন না লাইব্রেরিয়ান সহ কোনও আধিকারিকই । সবমিলিয়ে বলা যেতে পারে ফাঁকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে আজ ফিরে গেলেন রাজ্যপাল । যা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি ।

আজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দ্বারভাঙা বিল্ডিংয়ে উপাচার্যের ঘরে ঢুকে বসতে যান আচার্য । জানা গেছে, উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি ৷ সহ-উপাচার্য এসেও কিছুক্ষণ পর চলে যান । ছিলেন না রেজিস্ট্রার সহ কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিকই । উপাচার্যের ঘরও লক করা ছিল । উপাচার্যের ঘর খোলার চাবি কোথায় তা জানাতে পারেননি কর্মচারীরা । তারপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন আচার্য জগদীপ ধনকড় । তিনি প্রথমেই সেনেট বৈঠক বাতিলের বিষয়ে বলেন, "আমায় একটা আবেদন করা হয়েছিল যে, আমি 4 ডিসেম্বর দুপুর 3 টের সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বৈঠকে উপস্থিত থেকে সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করব কি না । শিক্ষার পরিবেশকে উন্নত করা আচার্য হিসেবে আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য । তাই আমি রাজি হই সেনেট বৈঠকে সভাপতিত্ব করতে । এই মর্মে 29 নভেম্বরে বার্তাও পাঠানো হয় । এটা পাঠানো হয় সেনেটের 102 জন সদস‍্যকে বিশ্ববিদ্যালয় নোটিশ পাঠানোর পরদিনই ৷ আমি ভেবেছিলাম, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার সঙ্গে আলোচনা করার উপযুক্ত সুযোগ । আমার দপ্তর কাল আশ্চর্য হয়ে যায় চিঠি পেয়ে যে, অনিবার্য কারণবশত বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে । আমি এটাকে হাস্যকর, অস্বাভাবিক মনে করছি । 102 জন সদস‍্যকে নিয়ে একটা সেনেট বৈঠক ডাকার পর, আচার্যকে সভাপতিত্ব করতে বলার পর, যাতে আচার্য রাজি হয়েছিলেন, তারপরে শুধু একটা ক্রিপ্টিক মেসেজ লিখে সেই বৈঠক বাতিল করে দেওয়া হয় ।" তিনি জানান, কাল বৈঠক বাতিলের বার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন । তিনি বলেন, " আমি উত্তর পাই, রাজ্য সরকারের শিক্ষাদপ্তর উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছে আচার্যের সঙ্গে দেখা না করতে । আমি নিশ্চিত, এটা ইতিহাসে প্রথম । দেশের কোনও জায়গায় সরকারি দপ্তর, মানে অবশ্যই মন্ত্রী উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছেন আচার্যের সঙ্গে দেখা না করতে । আচার্য যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ও ক্ষমতা রয়েছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়ার । তো আমি ভাবলাম, আমার কাছে সময় রয়েছে, এই সময়টা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল । তাই আমি উপাচার্যকে আজ সকালে বার্তা পাঠাই যে আমি 2 টোর সময় পরিদর্শনে আসছি । আমি লাইব্রেরিতে যাব । আর যারা আমার সঙ্গে দেখা করতে চায়, করব । কারণ এই সময়টা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রাখা ছিল । একটা রেগুলার বার্তাও পাঠানো হয়েছে । অবিশ্বাস্যভাবে তারপরেই মোবাইল আনরিচেবল হয়ে যায় ৷ ল্যান্ডলাইন কাজ করেনি ৷ ই-মেইল ফেরত আসে । কিন্তু আমি বলেছিলাম আমি আসব ৷ তাই এসেছি ।"

কিন্তু আসার পর তাঁকে অভ্যর্থনা জানাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক । আচার্যের বসার জায়গাও ছিল না । জগদীপ ধনকড় আরও বলেন, " আমি এখানে যখন আসি আমায় রিসিভ করতে কেউ ছিল না । আমিও প্রোটোকল ওরিয়েন্টেড মানুষ নই । কিন্তু আচার্য ও রাজ্যপাল প্রোটোকল ওরিয়েন্টেড । হয়তো কোনও সমস্যা হয়েছে । উপাচার্যের রুম লক করা । আমায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় রুমের বাইরে । আমি জিজ্ঞেস করি, চাবি কোথায়? উপাচার্য কি চাবি তাঁর সঙ্গে নিয়ে গেছেন? নিশ্চয়ই তা হবে না । কারও কাছে কোনও উত্তর ছিল না । আমার কর্মচারীদের নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই । তারা আমায় এক কাপ চা দেয় আমি চাওয়ার পর । আমরা কোথায় যাচ্ছি? ইতিমধ্যেই শিক্ষাক্ষেত্রে পলিসি প‍্যারালিসিস চলছে । আমি সরকারের কাছে হাতজোড় করে আবেদন করছি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রাজনীতিকরণ করবেন না । আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হল ন্যায় মন্দির । উপাচার্যদের আইন মেনে চলতে দিন । প্রত্যেকের নিজস্ব রোল আছে । তাঁদের তা পালন করতে দিন ।"

উপাচার্যের বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক কোনও ব্যবস্থা নেবেন? জগদীপ ধনকড় বলেন, "আমায় সদর্থক মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে । আমি কারণ খোঁজার চেষ্টা করব । আমি চেষ্টা করব তাঁদের বোঝানোর । শেষ পর্যন্ত যদি কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়, সেটা আমার জন্য বেদনাদায়ক দায়িত্ব হবে ।" উপাচার্য ও অন্য আধিকারিকরা আজ কেউ ছিলেন না ৷ অথচ, আজ কোনও ছুটির দিন নয় । এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জগদীপ ধনকড় বলেন, " আজকে ছুটির দিন ছিল না । তাঁদের এখানে না থাকা একটা সিরিয়াস বিষয় । আমি শিলিগুড়ি গেছি দু'বার ৷ 9 টি জেলায় গেছি ৷ সব জায়গায় ডিস্ট্রিক্ট ম‍্যাজিস্ট্রেট ও উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা অনিবার্য কারণবশত আসতে পারেননি । একই জিনিস এখানে হল । কিন্তু, ওখানকার বিষয় আমি বুঝি ৷ তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে । কিন্তু কী করে এটা একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হয়? এখানে যেটা হয়েছে সেটা নজিরবিহীন ও নিন্দনীয় ।"

বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কি রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে? উত্তরে জগদীপ ধনকড় বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে ৷ রিমোট কন্ট্রোল করা হচ্ছে ৷ গলা টিপে দেওয়া হচ্ছে ‌। এটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে । যদি একজন আচার্য বসার জায়গা না পান নোটিশ পাঠানোর পরেও সেটা অবিশ্বাস্য । কোনও রেসপন্সও নেই উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারের থেকে । কী করে এই রকম নির্মম ব্যবহার করা হল? তা নিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রশ্ন করবে ।" সাংবাদিকদের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি যান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি পরিদর্শন করতে । কিন্তু সেখান থেকেও কিছুক্ষণের মধ্যে বেরিয়ে এসে জানান, লাইব্রেরিয়ান ও লাইব্রেরির অন্য আধিকারিকরা উপস্থিত নেই । শুধু কর্মচারীরা রয়েছেন । তারপরেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে যান আচার্য ।

কলকাতা, 4 ডিসেম্বর : গতকালই হঠাৎ করে স্থগিত করে দেওয়া হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বৈঠক । এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল রাজ্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনকড়ের । বৈঠক বাতিলের পর আজ সকালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে জানান, তিনি লাইব্রেরি পরিদর্শনে আসবেন দুপুর 2টো নাগাদ । সেই অনুযায়ী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তিনি এলেও, তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য সহ কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক । উপাচার্যের ঘর ছিল লক করা । ফলে, আচার্যকে উপাচার্যের ঘরের বাইরের অপেক্ষা করার জায়গাতেই বসে থাকতে হয় । তারপর তিনি লাইব্রেরি পরিদর্শনে যান । কিন্তু, সেখানেও কর্মচারীরা উপস্থিত থাকলেও, উপস্থিত ছিলেন না লাইব্রেরিয়ান সহ কোনও আধিকারিকই । সবমিলিয়ে বলা যেতে পারে ফাঁকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে আজ ফিরে গেলেন রাজ্যপাল । যা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি ।

আজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দ্বারভাঙা বিল্ডিংয়ে উপাচার্যের ঘরে ঢুকে বসতে যান আচার্য । জানা গেছে, উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি ৷ সহ-উপাচার্য এসেও কিছুক্ষণ পর চলে যান । ছিলেন না রেজিস্ট্রার সহ কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিকই । উপাচার্যের ঘরও লক করা ছিল । উপাচার্যের ঘর খোলার চাবি কোথায় তা জানাতে পারেননি কর্মচারীরা । তারপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন আচার্য জগদীপ ধনকড় । তিনি প্রথমেই সেনেট বৈঠক বাতিলের বিষয়ে বলেন, "আমায় একটা আবেদন করা হয়েছিল যে, আমি 4 ডিসেম্বর দুপুর 3 টের সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বৈঠকে উপস্থিত থেকে সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করব কি না । শিক্ষার পরিবেশকে উন্নত করা আচার্য হিসেবে আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য । তাই আমি রাজি হই সেনেট বৈঠকে সভাপতিত্ব করতে । এই মর্মে 29 নভেম্বরে বার্তাও পাঠানো হয় । এটা পাঠানো হয় সেনেটের 102 জন সদস‍্যকে বিশ্ববিদ্যালয় নোটিশ পাঠানোর পরদিনই ৷ আমি ভেবেছিলাম, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার সঙ্গে আলোচনা করার উপযুক্ত সুযোগ । আমার দপ্তর কাল আশ্চর্য হয়ে যায় চিঠি পেয়ে যে, অনিবার্য কারণবশত বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে । আমি এটাকে হাস্যকর, অস্বাভাবিক মনে করছি । 102 জন সদস‍্যকে নিয়ে একটা সেনেট বৈঠক ডাকার পর, আচার্যকে সভাপতিত্ব করতে বলার পর, যাতে আচার্য রাজি হয়েছিলেন, তারপরে শুধু একটা ক্রিপ্টিক মেসেজ লিখে সেই বৈঠক বাতিল করে দেওয়া হয় ।" তিনি জানান, কাল বৈঠক বাতিলের বার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন । তিনি বলেন, " আমি উত্তর পাই, রাজ্য সরকারের শিক্ষাদপ্তর উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছে আচার্যের সঙ্গে দেখা না করতে । আমি নিশ্চিত, এটা ইতিহাসে প্রথম । দেশের কোনও জায়গায় সরকারি দপ্তর, মানে অবশ্যই মন্ত্রী উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছেন আচার্যের সঙ্গে দেখা না করতে । আচার্য যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ও ক্ষমতা রয়েছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়ার । তো আমি ভাবলাম, আমার কাছে সময় রয়েছে, এই সময়টা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ ছিল । তাই আমি উপাচার্যকে আজ সকালে বার্তা পাঠাই যে আমি 2 টোর সময় পরিদর্শনে আসছি । আমি লাইব্রেরিতে যাব । আর যারা আমার সঙ্গে দেখা করতে চায়, করব । কারণ এই সময়টা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রাখা ছিল । একটা রেগুলার বার্তাও পাঠানো হয়েছে । অবিশ্বাস্যভাবে তারপরেই মোবাইল আনরিচেবল হয়ে যায় ৷ ল্যান্ডলাইন কাজ করেনি ৷ ই-মেইল ফেরত আসে । কিন্তু আমি বলেছিলাম আমি আসব ৷ তাই এসেছি ।"

কিন্তু আসার পর তাঁকে অভ্যর্থনা জানাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক । আচার্যের বসার জায়গাও ছিল না । জগদীপ ধনকড় আরও বলেন, " আমি এখানে যখন আসি আমায় রিসিভ করতে কেউ ছিল না । আমিও প্রোটোকল ওরিয়েন্টেড মানুষ নই । কিন্তু আচার্য ও রাজ্যপাল প্রোটোকল ওরিয়েন্টেড । হয়তো কোনও সমস্যা হয়েছে । উপাচার্যের রুম লক করা । আমায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় রুমের বাইরে । আমি জিজ্ঞেস করি, চাবি কোথায়? উপাচার্য কি চাবি তাঁর সঙ্গে নিয়ে গেছেন? নিশ্চয়ই তা হবে না । কারও কাছে কোনও উত্তর ছিল না । আমার কর্মচারীদের নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই । তারা আমায় এক কাপ চা দেয় আমি চাওয়ার পর । আমরা কোথায় যাচ্ছি? ইতিমধ্যেই শিক্ষাক্ষেত্রে পলিসি প‍্যারালিসিস চলছে । আমি সরকারের কাছে হাতজোড় করে আবেদন করছি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রাজনীতিকরণ করবেন না । আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হল ন্যায় মন্দির । উপাচার্যদের আইন মেনে চলতে দিন । প্রত্যেকের নিজস্ব রোল আছে । তাঁদের তা পালন করতে দিন ।"

উপাচার্যের বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক কোনও ব্যবস্থা নেবেন? জগদীপ ধনকড় বলেন, "আমায় সদর্থক মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে । আমি কারণ খোঁজার চেষ্টা করব । আমি চেষ্টা করব তাঁদের বোঝানোর । শেষ পর্যন্ত যদি কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হয়, সেটা আমার জন্য বেদনাদায়ক দায়িত্ব হবে ।" উপাচার্য ও অন্য আধিকারিকরা আজ কেউ ছিলেন না ৷ অথচ, আজ কোনও ছুটির দিন নয় । এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে জগদীপ ধনকড় বলেন, " আজকে ছুটির দিন ছিল না । তাঁদের এখানে না থাকা একটা সিরিয়াস বিষয় । আমি শিলিগুড়ি গেছি দু'বার ৷ 9 টি জেলায় গেছি ৷ সব জায়গায় ডিস্ট্রিক্ট ম‍্যাজিস্ট্রেট ও উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা অনিবার্য কারণবশত আসতে পারেননি । একই জিনিস এখানে হল । কিন্তু, ওখানকার বিষয় আমি বুঝি ৷ তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে । কিন্তু কী করে এটা একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হয়? এখানে যেটা হয়েছে সেটা নজিরবিহীন ও নিন্দনীয় ।"

বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কি রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে? উত্তরে জগদীপ ধনকড় বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে ৷ রিমোট কন্ট্রোল করা হচ্ছে ৷ গলা টিপে দেওয়া হচ্ছে ‌। এটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে । যদি একজন আচার্য বসার জায়গা না পান নোটিশ পাঠানোর পরেও সেটা অবিশ্বাস্য । কোনও রেসপন্সও নেই উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারের থেকে । কী করে এই রকম নির্মম ব্যবহার করা হল? তা নিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রশ্ন করবে ।" সাংবাদিকদের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি যান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি পরিদর্শন করতে । কিন্তু সেখান থেকেও কিছুক্ষণের মধ্যে বেরিয়ে এসে জানান, লাইব্রেরিয়ান ও লাইব্রেরির অন্য আধিকারিকরা উপস্থিত নেই । শুধু কর্মচারীরা রয়েছেন । তারপরেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে যান আচার্য ।

Intro:কলকাতা, 4 ডিসেম্বর: গতকালই হঠাৎ করে স্থগিত করে দেওয়া হয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বৈঠক। এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করে সভাপতিত্ব করার কথা ছিল রাজ‍্যপাল তথা আচার্য জগদীপ ধনকড়ের। বৈঠক বাতিলের পর আজ সকালে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে জানান, তিনি লাইব্রেরি পরিদর্শনে আসবেন দুপুর 2টোয়। সেই অনুযায়ী কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তিনি এলেও, তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য উপস্থিত ছিলেন না উপাচার্য সহ কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিকই। উপাচার্যের ঘর ছিল লক করা। ফলে, আচার্যকে উপাচার্যের ঘরের বাইরের অপেক্ষা করার জায়গাতেই বসে থাকতে হয়। তারপরে তিনি লাইব্রেরি পরিদর্শনে যান। কিন্তু, সেখানেও কর্মচারীরা উপস্থিত থাকলেও, উপস্থিত ছিলেন না লাইব্রেরিয়ান সহ কোনও আধিকারিকই। সবমিলিয়ে বলা যেতে পারে ফাঁকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করে আজ ফিরে গেলেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি।


Body:আজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দ্বারভাঙা বিল্ডিংয়ে উপাচার্যের ঘরে ঢুকে বসতে যান আচার্য। জানা গেছে, উপাচার্য সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি, সহ-উপাচার্য এসেও কিছুক্ষণ পর চলে যান। ছিলেন না রেজিস্ট্রার সহ কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিকই। উপাচার্যের ঘরও লক করা ছিল। উপাচার্যের ঘর খোলার চাবি কোথায় তা জানাতে পারেননি কর্মচারীরা। তারপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন আচার্য জগদীপ ধনকড়। তিনি প্রথমেই সেনেট বৈঠক বাতিলের বিষয়ে বলেন, "আমায় একটা আবেদন করা হয়েছিল যে, আমি 4 ডিসেম্বর দুপুর 3টের সময় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বৈঠকে উপস্থিত থেকে সেই বৈঠকে সভাপতিত্ব করব কিনা। শিক্ষার পরিবেশকে উন্নত করা আচার্য হিসেবে আমার দায়িত্ব ও কর্তব্য। তাই আমি রাজি হই সেনেট বৈঠকে সভাপতিত্ব করতে। এই মর্মে 29 নভেম্বরে বার্তাও পাঠানো হয়। এটা পাঠানো হয় সেনেটের 102 জন সদস‍্যকে বিশ্ববিদ্যালয় নোটিশ পাঠানোর পরের দিনই। আমি ভেবেছিলাম, এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার সঙ্গে আলোচনা করার উপযুক্ত সুযোগ। আমার দপ্তর কাল আশ্চর্য হয়ে যান চিঠি পেয়ে যে, অনিবার্য কারণবশত বৈঠকটি স্থগিত করা হয়েছে। আমি এটাকে হাস‍্যকর, অস্বাভাবিক মনে করছি। 102 জন সদস‍্যকে নিয়ে একটা সেনেট বৈঠক ডাকার পর, আচার্যকে সভাপতিত্ব করতে বলার পর, যাতে আচার্য রাজি হয়েছিলেন, তারপরে শুধু একটা ক্রিপ্টিক মেসেজ লিখে সেই বৈঠক বাতিল করে দেওয়া।" আচার্য জানাচ্ছেন, কাল বৈঠক বাতিলের বার্তা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি উপাচার্য ও রেজিস্ট্রারকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন। জগদীপ ধনকর বলেন, "আমি উত্তর পাই, রাজ‍্য সরকারের শিক্ষা দপ্তর উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছে আচার্যের সঙ্গে দেখা না করতে। আমি নিশ্চিত, এটা ইতিহাসে প্রথম। দেশের কোনও জায়গায় সরকারি দপ্তর, মানে অবশ্যই মন্ত্রী উপাচার্যকে নির্দেশ দিয়েছেন আচার্যের সঙ্গে দেখা না করতে। আচার্য যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ও ক্ষমতা রয়েছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নেওয়ার। তো আমি ভাবলাম, আমার কাছে সময় রয়েছে, এই সময়টা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন‍্য বরাদ্দ ছিল। তাই আমি উপাচার্যকে আজ সকালে বার্তা পাঠাই, আমি 2টোর সময় পরিদর্শনে আসছি। আমি লাইব্রেরিতে যাব। আর যাঁরা আমার সঙ্গে দেখা করতে চান করব। কারণ, এই সময়টা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রাখা ছিল। একটা রেগুলার বার্তাও পাঠানো হয়েছে। অবিশ্বাস্যভাবে তারপরেই মোবাইল আনরিচেবল হয়ে যায়, ল‍্যান্ডলাইন কাজ করেনি, ইমেইল ফেরত আসে। কিন্তু, আমি বলেছিলাম আমি আসব, তাই আমি এসেছি।" কিন্তু, আসার পরে তাঁকে অভ‍্যর্থনা করেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও উচ্চপদস্থ আধিকারিক। আচার্যের বসার জায়গাও ছিল না। জগদীপ ধনকর সে বিষয়ে বলেন, "আমি এখানে যখন আসি আমায় রিসিভ করতে কেউ ছিল না। আমি প্রটোকল ওরিয়েন্টেড মানুষ নই। কিন্তু, আচার্য ও রাজ‍্যপাল প্রটোকল ওরিয়েন্টেড। আমায় আমার অফিসকে রক্ষা করতে হবে। তবুও, আমি উপরে আসি। হয়তো কোনও সমস‍্যা হয়েছে। উপাচার্যের রুম লক করা। আমায় কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় রুমের বাইরে। আমি জিজ্ঞেস করি, চাবি কোথায়? উপাচার্য কি চাবি তাঁর সঙ্গে নিয়ে গেছেন? নিশ্চয়ই তা হবে না। কারোর কাছে কোনও উত্তর ছিল না। আমার কর্মচারীদের নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই। তাঁরা আমায় এক কাপ চা দেন আমি চাওয়ার পর। আমরা কোথায় যাচ্ছি? ইতিমধ্যেই শিক্ষাক্ষেত্রে পলিসি প‍্যারালিসিস চলছে। এটা ঠিক করার জন্য সবস্তরে আমার করা যোগাযোগ ব্ল‍্যাকহোল অর্থাৎ সরকারের কাছে চলে যাচ্ছে। আমি সরকারের কাছে হাতজোড় করে আবেদন করছি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রাজনীতিকরণ করবেন না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হল ন‍্যায় মন্দির। উপাচার্যদের আইন মেনে চলতে দিন। প্রত‍্যেকের নিজস্ব রোল আছে। তাঁদের তা পালন করতে দিন।" তবে, হাল ছাড়তে রাজি নন আচার্য। কেন উপাচার্য আজ উপস্থিত ছিলেন না তা তিনি জানার চেষ্টা করবেন বলে জানান, "সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। হয়তো উপাচার্যের কাছে উপযুক্ত কারণ আছে এখানে না থাকার। আমি জানি না। হয়তো, এড়ানো যাবে না এমন কিছু রয়েছে। আমি খোঁজার চেষ্টা করব। আমি জাজমেন্টাল হব না তথ‍্য জানার আগে। যেটা নিয়ে আমি জাজমেন্টাল সেটা হল, নাম করা এই বিশ্ববিদ‍্যালয়ে উপাচার্যের রুমে তালা মারা, অভ‍্যর্থনা জানানোর জন্য কেউ না থাকা। একমাত্র ফুলের তোড়া পেয়েছি আমি কর্মচারী সংগঠনের থেকে।" উপাচার্যের বিরুদ্ধে কী শাস্তিমূলক কোনও ব‍্যবস্থা নেবেন? জগদীপ ধনকড় বলেন, "আমায় পজিটিভ মাইন্ডে কাজ করতে হবে। আমি কারণ খোঁজার চেষ্টা করব। আমি চেষ্টা করব তাঁদের বোঝানোর। শেষ পর্যন্ত যদি কোনও শাস্তিমূলক ব‍্যবস্থা নিতে হয়, সেটা আমার জন্য বেদনাদায়ক দায়িত্ব হবে।" উপাচার্য ও অন‍্যান‍্য আধিকারিক আজ কেউ ছিলেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের। অথচ, আজ কোনও ছুটির দিন নয়। তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জগদীপ ধনকড় বলেন, " আজকে ছুটির দিন ছিল না। তাদের এখানে না থাকা একটা সিরিয়াস বিষয়। আমি শিলিগুড়ি গেছি দু'বার, 9টি জেলায় গেছি, সব জায়গায় ডিস্ট্রিক্ট ম‍্যাজিস্ট্রেট ও উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা অনিবার্য কারণবশত আসতে পারেননি। একই জিনিস এখানে হল। কিন্তু, ওখানকার বিষয় আমি বুঝি, তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। কিন্তু, কী করে এটা একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হয়? এখানে যেটা হয়েছে সেটা নজিরবিহীন, শকিং, নিন্দনীয়।" বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কি রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে? উত্তরে জগদীপ ধনকড় বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে, তাঁদের রিমোট কন্ট্রোল করা হচ্ছে, গলা টিপে দেওয়া হচ্ছে‌। এটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। যদি একজন আচার্য বসার জায়গা না পান নোটিশ পাঠানোর পরেও সেটা আমেজিং। কোনও রেসপন্সও নেই উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রারের থেকে। কী করে এই রকম নির্মম ব‍্যবহার করা হল? তা নিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম প্রশ্ন করবে।" সাংবাদিকদের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি যান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরি পরিদর্শন করতে। কিন্তু, সেখান থেকেও কিছুক্ষণের মধ্যে বেরিয়ে এসে জানান, লাইব্রেরিয়ান ও লাইব্রেরির অন‍্যান‍্য আধিকারিকরা উপস্থিত নেই। শুধু কর্মচারীরা রয়েছেন। তারপরেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চলে যান আচার্য।


Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.