কলকাতা, 17 জানুয়ারি : কলকাতায় ফের "গয়া গ্যাং"-র হানাদারি । নতুন প্রযুক্তিতে সজ্জিত হয়ে ATM প্রতারণা । আর এতেই কপালে ভাঁজ পড়েছে গোয়েন্দাদের । ইতিমধ্যেই 2 গ্যাং সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের কাছে উদ্ধার হয়েছে স্কিমার মেশিন । পাওয়া গেছে ক্লোন করা ATM কার্ড ।
গয়া গ্যাং । একটা সময় কলকাতায় ত্রাস হয়ে উঠেছিল এই চক্র । মূলত বিহারের গয়ার দুষ্কৃতীরা এই প্রতারণার সঙ্গে যুক্ত আছে । এজন্য কলকাতা পুলিশ এর নাম গয়া গ্যাং দেয় । পরে গোটা ভারতেই ছড়িয়ে পড়ে এই কাজকর্ম । এখন ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশের কাছে তারা গয়া গ্যাং হিসেবেই পরিচিত । আগে মূলত ATM- কি প্যাডে আঠা লাগিয়ে কিংবা সাহায্য করার নামে তথ্য হাতিয়ে অপারেশন চালাত এই চক্রটি । সেই সময় কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে চালানো হয় ধরপাকড় । পুলিশ সূত্রে খবর, দুষ্কৃতীরা শহরের বাইরে হাওড়া, উত্তর 24 পরগনা, দক্ষিণ 24 পরগনার বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রতারণা চালাচ্ছে। পুলিশের ধরপাকড়ের একটা সময় কলকাতা ছাড়ে চক্র। আবার অনেকদিন পর তারা কলকাতায় হানা দিয়েছে । এবার তারা পালটে ফেলেছে অপারেশনের ছক।
জানা গেছে, গয়ার মুদাসার খান এবং ইরফানউদ্দিন এই দুই দুষ্কৃতী যাদবপুর এবং তিলজলা এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেছিল। তারা অল্প শিক্ষিত এবং বয়স্কদের টার্গেট করেছিল । ATM-এর আশপাশে ঘুরঘুর করত দু'জন। শিকারের সন্ধান পেলেই সক্রিয় হয়ে উঠছিল সাহায্য করার বেশে। মূলত অরক্ষিত ATM-গুলোই তাদের টার্গেট ছিল। সাহায্য করার নামে নিমেষের মধ্যে স্কিমিং মেশিন দিয়ে হাতিয়ে এনেছিল ATM-এর তথ্য। আর সাহায্য করার অছিলায় জেনে নিচ্ছিল পিন। তারপর ক্লোন কার্ড দিয়ে তুলে নিচ্ছিল টাকা। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযোগ পাওয়ার পর, কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা বুঝতে পারে সাহায্য করার ছক। CCTV ফুটেজে দেখে গয়া গ্যাংয়ের সক্রিয় হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারে পুলিশ।
গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, ধৃতদের কাছ থেকে মোট 38 টি ক্লোন করা কার্ড পাওয়া গেছে। একটা স্কিমার মেশিন এবং ল্যাপটপ উদ্ধার হয়েছে। এই ল্যাপটপ দিয়েই কার্ডের তথ্য কপি করত দুষ্কৃতীরা। গতকাল বিকালে দার্জিলিং মেইল ধরতে শিয়ালদা স্টেশনে আসে ওই দুষ্কৃতীরা। আর তখনই গোয়েন্দারা ঘিরে ধরে তাদের। ধৃতদের গ্রেপ্তার করে আজ ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়েছে।