কলকাতা, 25 নভেম্বর : টালা ব্রিজের সংস্কার হবে । তাই ব্রিজের নিচ থেকে বাসিন্দাদের সরানো হয়েছে ৷ তাদের পাঠানো হয়েছে অস্থায়ী শিবিরে । কিন্ত অভিযোগ, অস্থায়ী শিবির বসবাসের অযোগ্য । যথাযথ ব্যবস্থা না করেই সরানো হয়েছে তাদের ৷ বিষয়টি নিয়ে আজ কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই বাসিন্দারা । হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য রাজ্য সরকারকে 15 দিনের মধ্যে হলফনামা দিয়ে জানাতে বলেছেন ওই বাসিন্দাদের জন্য কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ৷ প্রশাসনকে পুরো বিষয়টি মানবিক দিক থেকে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
মামলাকারীদের মধ্যে অন্যতম রাজা হাজরা ও বিশ্বজিৎ মণ্ডল বলেন, "আমাদের মতো প্রায় 200 জন রয়েছেন । তাঁরা টালা ব্রিজের নিচে দীর্ঘদিন ধরে বাস করছেন ৷ তাঁদের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সবই রয়েছে । ব্রিজ সংস্কার করা হবে বলে আমাদের অন্যত্র সরানো হয়েছে । যেখানে আমাদের পাঠানো হয়েছে তা বসবাসের অযোগ্য ৷ যাঁদের সরানো হয়েছে তাঁদের মধ্যে গর্ভবতী মহিলা, ক্যানসার রোগীরা আছেন । একজনের ইতিমধ্যে ডেঙ্গি হয়েছে । "
আজ মামলাটি হাইকোর্টে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্যর সিংগল বেঞ্চে ওঠে । মামলাকারীদের আইনজীবী সায়ন্তী সেনগুপ্ত বলেন, "24 সেপ্টেম্বর বাসিন্দাদের হঠাৎ সরিয়ে দেওয়া হয় । বিষয়টি পুলিশ ও প্রশাসনের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টকে আমরা লিখিত ভাবে জানাই । 6 নভেম্বর স্টেট হাইওয়ে অ্যাক্টে সেখানে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে । সেতু সংস্কারের কাজ করা হবে বলে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় । যদি বাসিন্দাদের ফের আগের জায়গায় ফেরানো হয় তাহলে সেটা স্পষ্ট করে জানানো হোক । না হলে পুনর্বাসনের জন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সেটা বলা হোক ।"
অন্যদিকে রাজ্যের তরফে আইনজীবী শীর্ষাণ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন," কাউকে ফাঁকা জায়গায় রাখা হয়নি । সব বাসিন্দাদের নির্দিষ্ট শিবিরে রাখা হয়েছে । টালা থানার অধীনে থাকা 5 শতাংশ বাসিন্দাকে প্রাণকিশোর রোডের পাশে ও চিৎপুর থানার অধীনে থাকা 95 শতাংশ বাসিন্দাকে রেল ইয়ার্ডের পাশে সরানো হয়েছে । তাঁদের জন্য পলিথিনের শেড ও টয়লেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এসব ক্ষেত্রে ডেঙ্গির কথা বলে সহানুভূতি আদায় করার চেষ্টা ঠিক নয় ।"
দুইপক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য 15 দিনের মধ্যে ওই বাসিন্দাদের জন্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা হলফনামা দিয়ে জানাতে বলেছেন রাজ্যকে । পাশাপাশি আবেদনকারীদের যদি কোনও বক্তব্য থাকে তাহলে সেটা তাঁরা হলফনামা জমা দেওয়ার এক সপ্তাহ পরে জানাবে । 7 জানুয়ারি ফের এই মামলার শুনানি হবে ।