কলকাতা, 26 জুন : আনলকের প্রথম দফায় লকডাউনের নিয়ম ক্রমশ শিথিল হচ্ছে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো, গতমাস থেকেই খুলেছে বেশ কয়েকটি বিউটি পার্লার ও স্যালোঁ । প্রথম ঝলকে জায়গাটিকে দেখলে মনে হবে না যে এটি একটি বিউটি পার্লার বা স্যালোঁ ৷ বরং মনে হবে যে এটি একটি ক্লিনিক ৷ তবে, এখানেও কঠোরভাবেই মেনে চলা হচ্ছে একাধিক স্বাস্থ্যবিধি ৷ প্রবেশের সময় নিয়ম মেনেই প্রথমে ভালো করে হাত-পা ধুয়ে নিতে বলা হচ্ছে ৷ পরোনো হচ্ছে শু-কভার ৷ এছাড়াও করা হচ্ছে থার্মাল স্ক্রিনিং ৷ সঠিক তাপমাত্রা থাকলে তবেই মিলছে ঢোকার অনুমতি ৷ রূপচর্চায় ব্যবহৃত চেয়ারগুলি রাখা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব মেনেই ৷ চেয়ারে বসে পরিষেবা নেওয়ার আগে বলা হচ্ছে নিজেকে স্বয়ংক্রিয় স্যানিটাইজ়ারের মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করতে ৷ সমস্ত নিয়ম মানার পরই শুরু হচ্ছে পরিচর্যা। শুধুমাত্র গ্রাহকরা নন, পার্লার কর্মীরাও মানচ্ছেন সংক্রমণ না ছড়ানোর নিয়ম ৷ সকলেই পরছেন PPE, ফেস শিল্ড, শু-কভার, গ্লাভস, টুপি ও মাস্ক।
বিউটিশিয়ান শর্মিলা সিং ফ্লোরা পার্লারে প্রবেশ করার নিয়মগুলি জানিয়ে বলেন, " 4 জন গ্রাহককে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে ৷ আগে থেকে অ্যাপয়েনমেন্ট নিয়ে , তবেই প্রবেশ করা যাচ্ছে ৷ মানা হচ্ছে সরকারি নিয়ম ও স্বাস্থ্যবিধি । গ্রাহকদের দেহের তাপমাত্রা মেপেই তাঁদের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে ৷ যে সমস্ত গ্রাহকের সর্দি-কাশি বা জ্বর হচ্ছে তাঁদের দেওয়া হচ্ছে না ভিতরে প্রবেশের অনুমতি ৷" নিজেদের পরিষেবা সংক্রান্ত বিষয়ে বলতে গিয়ে শর্মিলা সিং ফ্লোরা বলেন , "বর্তমানে আমরা বডি ম্যাসাজ ও বডি স্পা করছি না। অন্যদিকে থ্রেডিং করার সময় যে সুতটি ব্যবহার করা হচ্ছে সেটি এখন মুখে না ধরে গলা দিয়ে চেপে ধরা হচ্ছে। তবে অন্যান্য পরিচর্যা যেমন ফেসিয়াল, চুল কাটা, স্ট্রেটনিং, কালারিং, পেডিকিওর ও মেনিকিওর করা হচ্ছে। " পার্লারকে স্যানিটাইজ়ার করার বিষয়টি নিয়ে তিনি জানান, "এছাড়াও আমরা নিয়মিত গোটা জায়গা ও এখানকার যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জাম স্যানিটাইজ় করছি। শুধুমাত্র গ্রাহকদের জন্যই নয়, কর্মীদের শরীরিক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই সব স্তরে মানা হচ্ছে সতর্কতা। ব্যবহার করা হচ্ছে ওয়ান টাইম ইউজ় টাওয়ালও ।"
দোকানে একজন গ্রাহক শুভাগতা বলেন , "আমি ও আমার মা এই পার্লারে গত 10 বছর ধরে আসছি। এখানে এসে দেখলাম যে পরিষ্কার পরিছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি খুব ভালোভাবেই মানা হচ্ছে ৷ সেটা দেখে আমি নিশ্চিন্ত যে অন্তত এখান থেকে কোনও সংক্রমণ ছড়াবে না।"
শর্মিলা সিং ফ্লোরার মতো শহরের এ এন জ়োন স্যালোঁ অ্যান্ড অ্যাকাডেমির ডিরেক্টর রমন ভরদ্বাজ বলেন, "আমরা বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পার্লার আবার চালু করেছি। যাতে গ্রাহকরা পার্লারে এসে নিশ্চিন্ত বোধ করেন সেই বিষয় নজর দেওয়া হচ্ছে।"
তবে , এই লকডাউনের জেরে পার্লার মালিকরা যে ধরনের সমস্যার মধ্যে পড়েছিলেন তা এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তাঁরা। তাই এবার আইনিভাবে সংগঠিত হওয়ার কথা ভাবছেন তাঁরা। সংগঠনটি তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছেন এ আর স্যালোঁর কর্ণধার অর্চনা মিশ্র । তিনি বলেন, "দীর্ঘ আড়াই মাসের লকডাউনের মধ্যে আমরা যে তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হলাম তারপরই আমরা অনেকে মিলে আইনিভাবে একটি সংগঠন তৈরি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। বর্তমানে আমাদের সদস্য সংখ্যা 60।"