কলকাতা, 29 জুন : পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে এবার কাশ্মীরের (Kashmir) তুলনা টানলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ৷ তাঁর অভিযোগ, বিধানসভা নির্বাচন (West Bengal Assembly Election) মিটে যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গে যত হিংসার ঘটনা ঘটেছে, তত ঘটনা এত বছরে কাশ্মীরেও ঘটেনি ৷
মঙ্গলবার বেলায় বিজেপির (BJP) রাজ্য কার্যকারিণী সমিতির বৈঠক শুরু হয়েছে ৷ সেই বৈঠকের শুরুতে ভাষণ দিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি এই মন্তব্য করেন ৷ একই সঙ্গে ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence)-সহ একাধিক ইস্যুতে তিনি রাজ্য সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন ৷
আরও পড়ুন : রাজ্য কমিটির বৈঠকে ভাগ্য নির্ধারণ কৈলাসদের, নজরে রাজীব-সহ অন্যান্য
উল্লেখ্য, চলতি বছরের 2 মে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয় ৷ সেই ফলাফলে দেখা যায় যে দু’শোর বেশি আসনে জিতে ফের ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) ৷ বিজেপির অভিযোগ, এর পর থেকে দলের কর্মীদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে ৷ অনেকে ঘরছাড়া হয়েছেন ৷ মহিলাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছে ৷ বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে ৷
এদিন দিলীপ ঘোষের ভাষণে উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গগুলিও ৷ ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হওয়ার জন্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে (Governor Jagdeep Dhankhar) কুকথা শুনতে হচ্ছে বলে তিনি এদিন দাবি করেছেন ৷ তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ও (Mamata Banerjee) রাজ্যপাল সম্পর্কে কুকথা বলছেন ৷ রাজনৈতিক স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিকে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : 2 জুলাই রাজ্যপাল কি মমতার সরকারের দেওয়া ভাষণ পাঠ করবেন ?
এদিকে বিজেপির একাধিক জনপ্রতিনিধি থেকে নেতা উত্তরবঙ্গকে (North Bengal) আলাদা রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ৷ এই দাবি বিজেপি সমর্থন করে না বলে আগেই জানিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ ৷ এদিনও তিনি একই কথা বলেছেন ৷ তাঁর বক্তব্য, একটাই রাজ্য আগেও ছিল আগামিদিনেও থাকবে ৷
একই সঙ্গে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে কেন উত্তরবঙ্গের মানুষ আলাদা রাজ্যের (Separate Statehood) দাবি তুলছেন ৷ তাঁর কথায়, সেখানকার মানুষের অধিকার সুরক্ষিত নয় ৷ তাই তাঁরা রাজ্যের দাবি তুলেছেন ৷ কিন্তু এর জন্য তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপাচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন ৷
আরও পড়ুন : জিটিএতে দুর্নীতির অভিযোগ, ক্যাগকে দিয়ে স্পেশাল অডিট করানোর হুঁশিয়ারি রাজ্যপালের
অন্যদিকে বিজেপি এবার পশ্চিমবঙ্গে সরকার গড়ার স্বপ্ন ফেরি করেও সফল হয়নি ৷ প্রথমবার বঙ্গ-বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে ৷ এই নিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘মানুষ আমাদের সরকারে নয়, দায়িত্বশীল বিরোধী হিসেবে দেখতে চায় ৷ তাই আমাদের বিরোধী হিসেবে বিধানসভায় পাঠিয়েছে৷’’ তাই বিজেপি বিধানসভার অন্দরে ও বাইরে মানুষের অধিকারের দাবিতে লড়াই করবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন ৷
কিন্তু তাঁর বিশ্বাস, বিজেপির যে কার্যকর্তারা দলকে এতদূর নিয়ে এসেছেন, তাঁরাই আগামিদিনে দলকে বঙ্গের প্রশাসনিক ক্ষমতায় অলিন্দেও প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন ৷
আরও পড়ুন : কেন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে এত টানাপোড়েন ?
প্রসঙ্গত, ভোটের পর এই প্রথম বিজেপির রাজ্য কার্যকারিণী সমিতির বৈঠক হচ্ছে ৷ এই বৈঠকে দলের সাম্প্রতিক বিপর্যয় নিয়ে কাটাছেঁড়া হবে বলে খবর ৷ দিলীপ ঘোষ ছাড়াও এই বৈঠকে ভাষণ দেওয়ার কথা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ৷ এছাড়া বিকেল সাড়ে 4টেয় ভাষণ দেবেন বিজেপির জাতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা (JP Nadda) ৷
তার আগে শুরুতে দিলীপ ঘোষ বিভিন্ন ইস্যুতে কাঠগড়ায় তুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ৷ ভ্যাকসিন-দুর্নীতি নিয়েও বিঁধলেন মমতাকে ৷ তাঁর অভিযোগ, ভ্যাকসিন কাণ্ডের শিকড় মুখ্যমন্ত্রী পর্যন্ত বিস্তৃত ৷