ETV Bharat / city

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে জিহাদের ডাক জঙ্গিদের - Militant organization

আশঙ্কা সত্যি। ডার্ক-ওয়েবকে ব্যবহার করে JMB শীর্ষ নেতারা তাদের মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিল জেহাদের বার্তা।

JMB
প্রতীকী ছবি
author img

By

Published : Dec 24, 2019, 12:11 AM IST

কলকাতা, 23 ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন,2019-র জেরে সক্রিয় হয়ে উঠবে জঙ্গিরা। এমন আশঙ্কাই করছিলেন গোয়েন্দারা। তাদের দুশ্চিন্তা ছিল, সংশোধনী আইন এবং তাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া অশান্তির জেরে নতুন করে ডানা মেলবে জামাতুল মুজাহিদ্দিন বাংলাদেশ (JMB) এবং তাদের ইন্ডিয়া চ‍্যাপ্টার। দেখা গেল আশঙ্কা সত্যি। জামাত শীর্ষ নেতারা ডার্ক-ওয়েবকে ব্যবহার করে JMB তাদের মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিল জেহাদের বার্তা।

জঙ্গিদের মাঝে যে বার্তা দিয়েছে JMB তাতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে "রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠার নয়া ষড়যন্ত্র" হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জামাতের শীর্ষ নেতাদের মেসেজ, "চতুর ভাবে তাদের লক্ষ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে RSS। কিছুদিন আগেই আমাদের চোখের সামনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো হয়েছে গণহত্যা। সবগুলো তথ্য তখন আমাদের কাছে ছিল, কিন্তু আমরা তা উপেক্ষা করেছি। আজ আরেক গণহত্যা কড়া নাড়ছে আমাদের দরজায়।" এসব আশঙ্কার কথা উসকে দিয়ে বলা হয়েছে, "বাংলাদেশের 16 কোটি মুসলিম আর ভারতের 25 কোটি মুসলিমের ভবিষ্যৎ আলাদা নয়। আর তাই গণতন্ত্র আর মিটিং মিছিলে পরিবর্তে বেছে নিতে হবে জিহাদ।"

নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, 2019 নিয়ে বিক্ষোভে অশান্ত গোটা রাজ্য। তবে সবথেকে বড় ঘটনা যে কয়েকটি জেলায় ঘটেছে তার মধ্যে অন্যতম মুর্শিদাবাদ। সেখানে পোড়ানো হয়েছে ট্রেন, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু দোকান, লুটপাট চালানো হয়েছে কয়েকটি জায়গায়, ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়িও । আর এই পরিস্থিতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জঙ্গি মডিউলগুলি। গোয়েন্দা সূত্রে খবর এমনই। বিষয়টি নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে লালবাজারের স্পেশাল টাস্কফোর্সের (STF)।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট বলছে, মুর্শিদাবাদের কিছু মাদ্রাসাকে ব্যবহার করছে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদ্দিন ইন্ডিয়া (JMI)। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, মুর্শিদাবাদের বেশকিছু মাদ্রাসা হয়ে উঠেছে জঙ্গিদের আখড়া। তারা যুবকদের মগজধোলাই করছে। নতুন সদস্য নিয়োগ করছে। এমন কী এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হয় রাজ্য সরকারকে।

মুর্শিদাবাদে জামাত যোগের কথা প্রথম সামনে আসে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর। জানা যায়, মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়েই বাংলাদেশের কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন JMB-র সদস্যরা প্রথমবার ভারতে ঢোকে। সদ্য হলি আর্টিজন মামলায় বাংলাদেশের ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত হাত কাটা নাসিরুল্লাহ ঢুকেছিল লালগোলা সীমান্ত দিয়ে। তারপর সীমান্ত লাগোয়া মোকিমনগরে তৈরি করে ঘাঁটি। একটু একটু করে দখল করে নেয় মোকিমনগর মাদ্রাসা। সেখান থেকেই শুরু করে মগজধোলাইয়ের কাজ। আবার বেলডাঙার বোরখা ঘর নামে পোশাকের দোকানের আড়ালে বোমা সরবরাহের ডেরাও তৈরি করা হয়েছিল। তার আড়ালে ছিল শাকিল গাজি। সেখানে যাতায়াত ছিল হাত কাটা নাসিরুল্লাহের। খাগড়াগড় কাণ্ড নিয়ে NIA র তদন্তে উঠে এসেছিল মুর্শিদাবাদের উমরপুরে JMB সাইবার সেল তৈরির পরিকল্পনা করেছিল নাসিরুল্লাহ। তার জন্য অসম সরকারের তরফে ছাত্রদের দেওয়া লাপটপ জোগাড় করেছিল সে। জোগাড় করেছিল বেশকয়েকজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকেও।


পরে বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে একের পর এক জঙ্গিকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে পয়গম্বর শেখ এবং জমিরুল ইসলামকে ফাঁসিদেওয়া থেকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স (STF)। তাদের কাছ থেকেই জানা যায়, জামাতুল মুজাহিদ্দিন নয়, তাদের ভারতীয় শাখা তৈরি হয়েছে। জামাতুল মুজাহিদ্দিন ইন্ডিয়া। তার আমের নির্বাচিত হয়েছে বোমারু মিজান ওরফে কওসর। পয়গম্বরদের কাছে 50 কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মত বিস্ফোরক পাওয়া যায়। পরে উদ্ধার হয় প্রচুর আইইডি, জিলেটিন স্টিক। তারপর শুরু হয় একের পর এক ধরপাকড়। জানা যায়, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় মডিউল তৈরি করে ফেলেছে জামাতুল মুজাহিদ্দিন ইন্ডিয়া। সবথেকে বেশি মডিউল আছে মুর্শিদাবাদে। সেখানে যুবকদের দাওয়াত দেওয়ার মাধ্যমে চলছে মগজ ধোলাই। ভারত বিরোধী চক্রান্তের বড়সড় কৌশল নেওয়া হচ্ছে মুর্শিদাবাদের মাটিতে বসেই।

গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি কুচক্রীদের হাতে তুলে দিয়েছে অস্ত্র। CAA-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে ৷ আর এই সুযোগে মডিউল বাড়িয়ে নিচ্ছে জামাতুল মুজাহিদ্দিন ইন্ডিয়া। হচ্ছে মগজধোলাই। আর তারপর সামনে চলে এলো জামাতুল মুজাহিদ্দিন বাংলাদেশের শীর্ষ নেতাদের মেসেজ। আর তাতে আশঙ্কাটা জোরদার হচ্ছে, ডামাডোলে সুযোগ নিয়ে বড়সড় কোনও ঘটনা ঘটাবে না তো জামাত?

কলকাতা, 23 ডিসেম্বর : নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন,2019-র জেরে সক্রিয় হয়ে উঠবে জঙ্গিরা। এমন আশঙ্কাই করছিলেন গোয়েন্দারা। তাদের দুশ্চিন্তা ছিল, সংশোধনী আইন এবং তাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া অশান্তির জেরে নতুন করে ডানা মেলবে জামাতুল মুজাহিদ্দিন বাংলাদেশ (JMB) এবং তাদের ইন্ডিয়া চ‍্যাপ্টার। দেখা গেল আশঙ্কা সত্যি। জামাত শীর্ষ নেতারা ডার্ক-ওয়েবকে ব্যবহার করে JMB তাদের মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিল জেহাদের বার্তা।

জঙ্গিদের মাঝে যে বার্তা দিয়েছে JMB তাতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে "রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠার নয়া ষড়যন্ত্র" হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জামাতের শীর্ষ নেতাদের মেসেজ, "চতুর ভাবে তাদের লক্ষ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে RSS। কিছুদিন আগেই আমাদের চোখের সামনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো হয়েছে গণহত্যা। সবগুলো তথ্য তখন আমাদের কাছে ছিল, কিন্তু আমরা তা উপেক্ষা করেছি। আজ আরেক গণহত্যা কড়া নাড়ছে আমাদের দরজায়।" এসব আশঙ্কার কথা উসকে দিয়ে বলা হয়েছে, "বাংলাদেশের 16 কোটি মুসলিম আর ভারতের 25 কোটি মুসলিমের ভবিষ্যৎ আলাদা নয়। আর তাই গণতন্ত্র আর মিটিং মিছিলে পরিবর্তে বেছে নিতে হবে জিহাদ।"

নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন, 2019 নিয়ে বিক্ষোভে অশান্ত গোটা রাজ্য। তবে সবথেকে বড় ঘটনা যে কয়েকটি জেলায় ঘটেছে তার মধ্যে অন্যতম মুর্শিদাবাদ। সেখানে পোড়ানো হয়েছে ট্রেন, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু দোকান, লুটপাট চালানো হয়েছে কয়েকটি জায়গায়, ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়িও । আর এই পরিস্থিতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জঙ্গি মডিউলগুলি। গোয়েন্দা সূত্রে খবর এমনই। বিষয়টি নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে লালবাজারের স্পেশাল টাস্কফোর্সের (STF)।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট বলছে, মুর্শিদাবাদের কিছু মাদ্রাসাকে ব্যবহার করছে জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদ্দিন ইন্ডিয়া (JMI)। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, মুর্শিদাবাদের বেশকিছু মাদ্রাসা হয়ে উঠেছে জঙ্গিদের আখড়া। তারা যুবকদের মগজধোলাই করছে। নতুন সদস্য নিয়োগ করছে। এমন কী এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হয় রাজ্য সরকারকে।

মুর্শিদাবাদে জামাত যোগের কথা প্রথম সামনে আসে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর। জানা যায়, মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়েই বাংলাদেশের কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন JMB-র সদস্যরা প্রথমবার ভারতে ঢোকে। সদ্য হলি আর্টিজন মামলায় বাংলাদেশের ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত হাত কাটা নাসিরুল্লাহ ঢুকেছিল লালগোলা সীমান্ত দিয়ে। তারপর সীমান্ত লাগোয়া মোকিমনগরে তৈরি করে ঘাঁটি। একটু একটু করে দখল করে নেয় মোকিমনগর মাদ্রাসা। সেখান থেকেই শুরু করে মগজধোলাইয়ের কাজ। আবার বেলডাঙার বোরখা ঘর নামে পোশাকের দোকানের আড়ালে বোমা সরবরাহের ডেরাও তৈরি করা হয়েছিল। তার আড়ালে ছিল শাকিল গাজি। সেখানে যাতায়াত ছিল হাত কাটা নাসিরুল্লাহের। খাগড়াগড় কাণ্ড নিয়ে NIA র তদন্তে উঠে এসেছিল মুর্শিদাবাদের উমরপুরে JMB সাইবার সেল তৈরির পরিকল্পনা করেছিল নাসিরুল্লাহ। তার জন্য অসম সরকারের তরফে ছাত্রদের দেওয়া লাপটপ জোগাড় করেছিল সে। জোগাড় করেছিল বেশকয়েকজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারকেও।


পরে বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে একের পর এক জঙ্গিকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে পয়গম্বর শেখ এবং জমিরুল ইসলামকে ফাঁসিদেওয়া থেকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স (STF)। তাদের কাছ থেকেই জানা যায়, জামাতুল মুজাহিদ্দিন নয়, তাদের ভারতীয় শাখা তৈরি হয়েছে। জামাতুল মুজাহিদ্দিন ইন্ডিয়া। তার আমের নির্বাচিত হয়েছে বোমারু মিজান ওরফে কওসর। পয়গম্বরদের কাছে 50 কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মত বিস্ফোরক পাওয়া যায়। পরে উদ্ধার হয় প্রচুর আইইডি, জিলেটিন স্টিক। তারপর শুরু হয় একের পর এক ধরপাকড়। জানা যায়, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় মডিউল তৈরি করে ফেলেছে জামাতুল মুজাহিদ্দিন ইন্ডিয়া। সবথেকে বেশি মডিউল আছে মুর্শিদাবাদে। সেখানে যুবকদের দাওয়াত দেওয়ার মাধ্যমে চলছে মগজ ধোলাই। ভারত বিরোধী চক্রান্তের বড়সড় কৌশল নেওয়া হচ্ছে মুর্শিদাবাদের মাটিতে বসেই।

গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি কুচক্রীদের হাতে তুলে দিয়েছে অস্ত্র। CAA-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে ৷ আর এই সুযোগে মডিউল বাড়িয়ে নিচ্ছে জামাতুল মুজাহিদ্দিন ইন্ডিয়া। হচ্ছে মগজধোলাই। আর তারপর সামনে চলে এলো জামাতুল মুজাহিদ্দিন বাংলাদেশের শীর্ষ নেতাদের মেসেজ। আর তাতে আশঙ্কাটা জোরদার হচ্ছে, ডামাডোলে সুযোগ নিয়ে বড়সড় কোনও ঘটনা ঘটাবে না তো জামাত?

Intro:কলকাতা, 17 ডিসেম্বর: নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সক্রিয় হয়ে উঠবে জঙ্গিরা। এমন আশঙ্কাই করছিলেন গোয়েন্দারা। তাদের দুশ্চিন্তা ছিল, সংশোধনী আইন এবং তাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া অশান্তির জেরে নতুন করে ডানা মেলবে জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ। এবং তাদের ইন্ডিয়া চ‍্যাপ্টার। দেখা গেল আশঙ্কা সত্যি। জামাত শীর্ষ নেতারা ডার্ককে ব্যবহার করে জেএমবি তাদের মিডিয়ার মাধ্যমে ছড়িয়ে দিল জেহাদের বার্তা।



Body:জঙ্গিদের মাঝে যে বার্তা দিয়েছে জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ তাকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে "রামরাজত্ব প্রতিষ্ঠার নয়া ষড়যন্ত্র" হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। জামাতের শীর্ষ নেতাদের মেসেজ, “ চতুর ভাবে তাদের লক্ষ্য কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আরএসএস। ঘুমিয়ে রয়েছে উপমহাদেশের মুসলমানরা। কিছুদিন আগেই আমাদের চোখের সামনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো হয়েছে গণহত্যা। সবগুলো তথ্য তখন আমাদের কাছে ছিল কিন্তু আমরা তা উপেক্ষা করেছি। আজ আরেক গণহত্যা কড়া নাড়ছে আমাদের দরজায়।" এসব আশঙ্কার কথা উসকে দিয়ে বলা হয়েছে,“ বাংলাদেশের 16 কোটি মুসলিম আর ভারতের 25 কোটি মুসলিমের ভবিষ্যৎ আলাদা নয়। আর তাই গণতন্ত্র আর মিটিং মিছিলে পরিবর্তে বেছে নিতে হবে সংগ্রামের জিহাদ ফি সাবিবুল্লাহ। সে পথেই আছে সম্মান আর মুক্তি।"

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বিক্ষোভ অশান্ত গোটা রাজ্য। তবে সবথেকে বড় ঘটনা যে ক'টি জেলায় ঘটেছে তার মধ্যে অন্যতম মুর্শিদাবাদ। সেখানে পোড়ানো হয়েছে ট্রেন, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু দোকান, লুটপাট চালানো হয়েছে কয়েকটি জায়গায়, ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাড়ি। আর এই পরিস্থিতিতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জঙ্গি মডিউল গুলো। গোয়েন্দা সূত্রে খবর এমনটাই। বিষয়টি নিয়ে কপালে ভাঁজ পড়েছে লালবাজারের স্পেশাল টাস্কফোর্সের।

কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট বলছে, মুর্শিদাবাদের কিছু মাদ্রাসাকে ব্যবহার করছে জঙ্গী সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া। কিছুদিন আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি সংসদে দাঁড়িয়ে বলেন, মুর্শিদাবাদের বেশকিছু মাদ্রাসা হয়ে উঠেছে জঙ্গিদের আখড়া। তারা যুবকদের মগজ ধোলাই করছে। নতুন সদস্য নিয়োগ করছে। এমনকি এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেওয়া হয় রাজ্য সরকারকেও।

মুর্শিদাবাদে জামাত যোগের কথা প্রথম সামনে আসে খাগড়াগড় বিস্ফোরণের পর। জানা যায়, মুর্শিদাবাদ সীমান্ত দিয়েই বাংলাদেশের কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের সদস্যরা প্রথমবার ভারতে ঢোকে। সদ্য হলি আর্টিজন মামলায় বাংলাদেশের ফাঁসির সাজা প্রাপ্ত হাত কাটা নাসিরুল্লাহ ঢুকেছিল লালগোলা সীমান্ত দিয়ে। তারপর সীমান্ত লাগোয়া মোকিমনগরে তৈরি করে ঘাঁটি। একটু একটু করে দখল করে নেয় মোকিমনগর মাদ্রাসা। সেখান থেকেই শুরু করে মগজধোলাইয়ের কাজ। আবার বেলডাঙ্গার বোরখা ঘর নামে পোশাকের দোকানের আড়ালে বোমা সরবরাহের ডেড়াও তৈরি করা হয়েছিল। তার আড়ালে ছিল শাকিল গাজী। সেখানে যাতায়াত ছিল হাত কাটা নাসিরুল্লাহের। খাগড়াগড় কাণ্ড নিয়ে NIA র তদন্তে উঠে এসেছিল মুর্শিদাবাদের উমরপুরে জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের সাইবার সেল তৈরির পরিকল্পনা করেছিল নাসিরুল্লাহ। তার জন্য অসম সরকারের তরফে ছাত্র দের দেওয়া লাপটপ জোগাড় করেছিল সে। জোগাড় করেছিল বেশকয়েকজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কেউ।



Conclusion:পরে বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে একের পর এক জঙ্গিকে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে পয়গম্বর শেখ এবং জমিরুল ইসলামকে ফাঁসিদেওয়া থেকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স। তাদের কাছ থেকেই জানা যায়, জামাতুল মুজাহিদীন নয়, তাদের ভারতীয় শাখা তৈরি হয়েছে। জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া। তার আমের নির্বাচিত হয়েছে বোমারু মিজান ওরফে কওসর। পয়গম্বরদের কাছে 50 কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেটের মত বিস্ফোরক পাওয়া যায়। পরে উদ্ধার হয় প্রচুর আইইডি, জিলেটিন স্টিক। তারপর শুরু হয় একের পর এক ধরপাকড়। জানা যায়, রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় মডিউল তৈরি করে ফেলেছে জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া। সবথেকে বেশি মডিউল আছে মুর্শিদাবাদে। সেখানে যুবকদের দাওয়াত দেওয়ার মাধ্যমে চলছে মগজ ধোলাই। ভারত বিরোধী চক্রান্তের বড়োসড়ো কৌশল নেওয়া হচ্ছে মুর্শিদাবাদের মাটিতে বসেই।

গোয়েন্দাদের ধারণা ছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি কুচক্রীদের হাতে তুলে দিয়েছে অস্ত্র। এমনিতেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষজন এই আইনকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। ক্ষোভে ফেটে পড়ে হিংসার আশ্রয় নিচ্ছেন। আর এই সুযোগে মডিউল বাড়িয়ে নিচ্ছে জামাতুল মুজাহিদিন ইন্ডিয়া। বিষয়টিকে সংখ্যালঘু বিরোধী আখ্যা দিয়ে চালানো হচ্ছে মগজ ধোলাই। আর তারপর সামনে চলে এলো জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের শীর্ষ নেতাদের মেসেজ। আর তাতে আশঙ্কাটা জোরদার হচ্ছে, ডামাডোলে সুযোগ নিয়ে বড়োসড়ো কোন ঘটনা ঘটাবে না তো জামাত?
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.