কলকাতা, 10 জুলাই : রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে 15 জুলাই ভার্চুয়াল বৈঠকের ডাক দিয়েছেন আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । 7 জুলাই বৈঠকের ডাক দেওয়ার পর থেকেই বৈঠক নিয়ে একাধিক টুইট করে চলেছেন তিনি । ছাত্রদের সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যেই যে তিনি এই বৈঠক করতে চান তা বার বার তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন । উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠকে রাজ্য সরকারের সক্রিয় অংশগ্রহণ চেয়ে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি । যদিও, উপাচার্যরা তার ডাকা এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন কি না তা এখনও জানা যায়নি । তবে, আচার্যের একের পর এক টুইটের পালটা জবাব টুইটারেই বৃহস্পতিবার দেওয়া হয় উচ্চশিক্ষা দপ্তরের থেকে।
7 জুলাই রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে 15 জুলাই সকাল 11 টায় ভার্চুয়াল কনফারেন্সে যোগ দিতে বলেন আচার্য । তারপরের দিনই সেই বৈঠক নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে টুইট করেছিলেন জগদীপ ধনকড় । টুইটে তিনি লিখেছিলেন, "কোরোনা, আমফান এবং লকডাউনের জেরে রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের খুবই সমস্যা হয়েছে । তাঁদের নিয়ে আমারও চিন্তার শেষ নেই । এই কঠিন সময়েও আপনাদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে । উপাচার্যদের সেই কারণেই ডেকেছি । আপনাদের সব সমস্যা উপাচার্যদের দ্রুত জানান । যাতে 15 জুলাইয়ের বৈঠকে সে সব আলোচনা করা যায় । প্রয়োজন হলে আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলব । কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী ও UGC-র সঙ্গে কথা বলে সমাধান বের করব । সংকটে শিক্ষা । বিদ্যার্থীদের কথাই সর্বাগ্রে ভাবতে হবে ।"
আবার বৃহস্পতিবার সকালে একটি টুইটে তিনি লিখেছেন, "বিভিন্ন সূত্র থেকে ছাত্রদের উদ্বেগের কথা আমাকে জানানো হয়েছে । 15 জুলাই উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চুয়াল কনফারেন্সের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলব । সমাধান জরুরি । প্রয়োজনে UGC এবং কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রীর সঙ্গেও কথা বলব । আমি ছাত্রদের প্রতি দায়বদ্ধ ।"
এই টুইটের চার ঘণ্টা পরেই আরও একটি টুইট করেন তিনি । সেই টুইটে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠির প্রতিলিপি তুলে ধরেন আচার্য । চিঠিতে তাঁর বক্তব্য, "পড়ুয়াদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করার লক্ষ্যে আমি 15 জুলাই রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের সঙ্গে ভার্চুয়াল কনফারেন্স করা যুক্তিযুক্ত মনে করেছি । এই প্রক্রিয়ায় রাজ্য সরকারের সক্রিয় অংশগ্রহণ জনস্বার্থের জন্য কাম্য এবং তা রাজ্যের ছাত্র সমাজের সামনে সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধানে অবদান রাখবে । এরপর আমরা একত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গেও আলোচনায় বসতে পারি । আমি নিশ্চিত, বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথোপযুক্ত নির্দেশ দেওয়া হবে ।"
রাজ্যের সক্রিয় অংশগ্রহণ চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই টুইটের মাধ্যমে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে পালটা জবাব দেওয়া হয় আচার্যকে । পরপর তিনটি টুইট করা হয় । প্রথম টুইটে লেখা হয়েছে, "রাজ্য সরকার ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সমাধানে বদ্ধপরিকর । মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে সকল উপাচার্যদের সঙ্গে একাধিক বার অনলাইন আর সরাসরি আলোচনার পর UGC-র 29 এপ্রিলের নির্দেশিকা অনুসারে ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।"
দ্বিতীয় টুইটে লেখা হয়, "ইতিমধ্যে 18 জুন মাননীয় রাজ্যপালের দপ্তরে অনুরোধ জানানো হয়েছে যে, ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা সংক্রান্ত কোনও চিঠি তাঁদের কাছে থাকলে তা শিক্ষা দপ্তরে পাঠানোর জন্য । যাতে যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে সেগুলি বিবেচনা করা যায় । 2 জুলাই পুনরায় তা চেয়ে পাঠানো হয় । উত্তর প্রতীক্ষিত ।"
তৃতীয় টুইটে লেখা হয়েছে, "রাজ্য সরকার শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা আর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য বদ্ধপরিকর ।"
সবমিলিয়ে এবার আচার্য ও উচ্চশিক্ষা দপ্তরের টুইট যুদ্ধের সূচনা হল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল ।