কলকাতা, 21 ফেব্রুয়ারি : হেরিটেজ ট্রামের জন্য তৈরি হতে চলেছে একটি নতুন লুপ । তবে শহরের ট্রাম বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, কলকাতায় ট্রাম চলাচলের ক্ষেত্রে এমন বহু রাস্তা বা রুট রয়েছে যেগুলো অকারণেই বন্ধ হয়ে রয়েছে যেগুলি পুনরায় না চালু করে হেরিটেজ ট্রামের জন্য নতুন লুপ তৈরির কোনও যুক্তি নেই ।
সম্প্রতি ময়দান ও রেস কোর্সের কাছে একটি একটি নতুন লুপ তৈরি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্যালকাটা ট্রাম কম্পানি (CTC)। কাজের জন্য টেন্ডারও বেরিয়েছে । এতে খরচ হবে প্রায় 1 কোটি টাকা । ক্যালকাটা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য (Calcutta Tram Users Association) ও ট্রাম গবেষক দেবাশিস ভট্টাচার্য মনে করছেন যে, প্রশাসনের চরম উদাসীনতার জন্যই শহরের গুরুত্বপূর্ণ সাউথ লিঙ্ক ও বেশ কয়েকটি সংযোগস্থান বন্ধ হয়ে রয়েছে আজ দীর্ঘদিন । দেবাশিসবাবু বলেন, "যদি হাতে টাকা থাকে এবং লাইন পাততে হয় তাহলে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে থাকা কিছু গুরুত্বপূর্ণ কানেকশনগুলিকে মেরামত করে চালু করা উচিত । অন্যদিকে, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের জন্য সাউথ লিঙ্ক ট্রামগুলি যে লুপ দিয়ে সেন্ট্রাল ট্রাম ডিপো নোনাপুকুরে ঢুকতো সেটিকে তুলে ফেলা হয়েছে । তাই সাউথ লিঙ্ক না থাকায় বালিগঞ্জ ও টালিগঞ্জ মিলিয়ে বিকল হয়ে থাকা ট্রামগুলিকে মেরামতের জন্য নোনাপুকুরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না ।"
পরিবহন সচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগাম বলেন, "ট্রামকে জনপ্রিয় করার জন্য বিভিন্ন হেরিটেজ ট্রামকার চালান হয় । খিদিরপুর ব্রিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে । তাই ওই ব্রিজ মেরামতের কাজ শুরু হলে এসপ্ল্যানেড থেকে যে ট্রামগুলি আসবে সেগুলি তখন আর খিদিরপুর পর্যন্ত যেতে পারবে না তখন সেগুলিকে আবার ঘুরিয়ে এসপ্ল্যানেড নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা থেকেই ময়দানে এই লুপটি তৈরি করা হচ্ছে । ব্রিজ মেরামতের কাজ যদি চালু হয় তখন যাতে ওই লাইনটি পুরোপুরি বন্ধ না হয় তাই এই ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়েছে ।" তিনি আরও বলেন, "গড়িয়াহাটের ওয়াই কানেকশনটি যানজটের কারণে ট্রাফিক বিভাগ থেকে বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।"
হেরিটেজ ট্রামের বিষয়ে দেবাশিসবাবু বলেন, "হেরিটেজ ট্রাম চালানোর ক্ষেত্রে সবকটি ট্রাম কয়েকদিন চলে বসে যায় । শহরের বুকে বনলতা, বলাকা বা ভিক্টোরিয়ার মতো হেরিটেজ ট্রামগুলির কদাচিৎ দেখা মেলে । এই হেরিটেজ ট্রামগুলি কোথা দিয়ে চলে বা সেগুলির সময়সূচি কিছুই জানা যায় না ।"