কলকাতা, 19 ডিসেম্বর : "তোলাবাজ ভাইপো হটাও।" শনিবার মেদিনীপুর কলেজ ময়দানের সভা থেকে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী এই স্লোগানই তুলেছেন। নাম না করলেও "ভাইপো" বলতে যে শুভেন্দু আসলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যেই এই স্লোগান ছুঁড়ে দিয়েছেন, তা বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না রাজ্যের সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক নেতাদের। আর তাই পশ্চিমঙ্গের বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা সমস্বরে প্রশ্ন তুলছেন, "শুভেন্দু এতদিন জানতেন না যে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তোলাবাজ ? "
বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সরাসরি আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু অধিকারীকে। বলেছেন, "বিজেপিতে গিয়ে শুভেন্দু এখন নতুন সততার কথা বলছেন। আজ যাঁদের সম্বন্ধে কুৎসা করছেন, পরশুদিন পর্যন্তই তো তাঁদের সঙ্গে শুভেন্দু ছিলেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম লগ্ন থেকেই শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই ছিলেন। আজ হঠাৎ করে মনে পড়ে গেল ভাইপো অভিষেক তোলাবাজ। আসলে পিঠ বাঁচানোর খেলা।" নিজের ভাগে কম পড়াতেই কি শুভেন্দু তোপ দাগলেন ভাইপোর বিরুদ্ধে, সেই প্রশ্নই তুলেছেন বর্ষীয়ান এই সিপিএম নেতা।
অন্যদিকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আবদুল মান্নান বলেন, "আজ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে শুভেন্দু অধিকারীর যোগদান পর্ব দেখছিলাম। আর ভাবছিলাম ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হয়। এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধীদের ঘর ভেঙেছিলেন। আজ ওঁর ঘর ভাঙল। ভাইপো যে তোলাবাজ সেকথা তিনি আজকে জানলেন ? ভাইপোকে তোলা তুলে দিতেন শুভেন্দু অধিকারী স্বয়ং। আজ মনে হচ্ছে ভাইপো তোলাবাজ।"
শনিবার অমিত শাহের সভায় শুভেন্দুর সঙ্গে তৃণমূলের বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদ, একাধিক বিধায়ক ও একাধিক নেতা-জনপ্রতিনিধি বিজেপিতে যোগদান করেছেন। এছাড়া বাম-কংগ্রেস ছেড়েও বেশ কয়েকজন গেরুয়া শিবিরে এদিন নাম লিখিয়েছেন।
কেন এমনটা হল ? তা জানতে চাওয়ায় বিমান বসুর বক্তব্য, জনগণের কাজ করার জন্য বাম কর্মী সমর্থকরা এবং জনপ্রতিনিধিরা উদ্যোগ নেন। বামপন্থী হলে ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করা যায় না। লাভ-ক্ষতি দেখে বামপন্থা হয় না। বিজেপিতে যাওয়ায় আখেরি লাভ হবে বলেই দল বদল করেছেন দুই বাম বিধায়ক।
অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে মান্নান জানিয়েছেন, একজন বিধায়ক চলে গেলে কংগ্রেসের কোনও সংকট হবে না। কংগ্রেস জাতীয় দল। প্রসঙ্গত, এদিন পুরুলিয়ার বিধায়ক সুদীপ মুখোপাধ্যায় কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন। তাঁর নাম না করেই মান্নান জানান, অস্তিত্ব সংকটে পড়বেন পুরুলিয়ার বিধায়ক।