কলকাতা, 14 সেপ্টেম্বর: কলকাতায় শহরে মঙ্গলবার কোনওরকমে টিকাকরণ চললেও বুধবার থেকে তা অনিশ্চিতের পর্যায়ে চলে যাবে ৷ এমনই জানানো হয়েছে কলকাতা পৌরনিগমের তরফে । কোভ্যাকসিনের অভাবে 39টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ বন্ধ রাখা হয়েছে । আজ কোভ্যাকসিন ও কোভিশিল্ডের টিকাকরণ চলবে শহরে । তবে খুব কম সংখ্যায় কোভ্যাকসিনের টিকা এসেছে কলকাতা পৌরনিগমের কাছে । সেইসঙ্গে মজুত করে রাখা কোভিশিল্ডের টিকা দিয়ে টিকাকরণ করা হবে । তবে আরও টিকা না এলে বুধবারের পর থেকে টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেবে । সোমবার কলকাতা পৌরনিগমের মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, এদিন 15,000 কোভিশিল্ডের টিকা ও 9,000 কোভ্যাকসিনের টিকা এসেছে । সেইসঙ্গে কলকাতা পৌরনিগমের কাছে যেটুকু মজুত করা ভ্যাকসিন রয়েছে তা দিয়ে শুধুমাত্র মঙ্গলবারই টিকা দেওয়া সম্ভব হবে ।
ফিরহাদ হাকিম অভিযোগ করেছেন, কেন্দ্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের কারণেই রাজ্যে পর্যাপ্ত টিকা পাঠাচ্ছে না । তিনি সরাসরি অভিযোগ করে বলেন, "উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে। তাই কেন্দ্র যেসব রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে সেইসব রাজ্যে করোনার টিকা পাঠাচ্ছে। সেইসঙ্গে উৎপাদনকারী সংস্থার বকেয়া অর্থ পরিশোধ না করায় তারা উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।" পাশাপাশি এদিন তিনি জানিয়েছেন, কলকাতা শহরে ইতিমধ্যেই করোনার প্রথম ডোজ 90 শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এই মুহূর্তে শহরে করোনার দ্বিতীয় ডোজের চাহিদা বেশি। কলকাতা শহরে করোনার দ্বিতীয় ডোজ 39 শতাংশ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রাপকদের বাড়িতে গিয়ে করোনার টিকা নেওয়ার জন্য আবেদন জানাচ্ছে কলকাতা পৌরনিগমের স্বাস্থ্যকর্মীরা। করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগেই তাই যত বেশি সংখ্যক টিকাকরণ করা যাবে তত বেশি নিরাপদ করা যাবে কলকাতা শহরকে। কিন্তু তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের মাথা ব্যাথা নেই। তার কারণ বিজেপি জানে তারা এই রাজ্যে কোনও নির্বাচনে আশাপ্রদ ফল করতে পারবে না। যে রাজ্যগুলিতে ফলাফল তাদের পক্ষে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেই রাজ্যগুলিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ।
আরও পড়ুন: কলকাতায় আগামিকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কোভ্যাকসিন টিকা
কলকাতায় সোমবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল 125 জন । যা নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে বলে দাবি করেছে পুর প্রশাসক। কোভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজের টিকা প্রাপকের সংখ্যা সোমবার পর্যন্ত শহরে 27,987 জন। কোভিশিল্ডের টিকার দ্বিতীয় ডোজের বকেয়া প্রাপকের সংখ্যা সোমবার পর্যন্ত 1 লক্ষ 13 হাজার 953 জন। প্রতিদিনই বকেয়া প্রাপকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই নতুন করে করোনার টিকা এসে না পৌঁছালে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছে কলকাতা পৌরনিগম। এছাড়াও করোনার টিকা দেওয়ার জন্য যে সিরিঞ্জের প্রয়োজন তারও সঙ্কট তৈরি হয়েছে। মুখ্য প্রশাসক অভিযোগ করেছেন, স্থানীয় উৎপাদকদের থেকে কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত সিরিঞ্জ তুলে নিয়েছে। যার ফলে সিরিঞ্জের অভাব দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা দূর করতে ইতিমধ্যেই এক লক্ষ নতুন সিরিঞ্জ তৈরি করার অর্ডার দিয়েছে কলকাতা পৌরনিগম।