কলকাতা, 1 অক্টোবর : 2011 সাল থেকে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হয়েছে পাঁচবার ৷ প্রতিবার ভোটদানের হারের তুল্যমূল্য বিচার করে দেখা যাচ্ছে যে এবার সেখানে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে ৷ গতকাল, ভবানীপুর বিধানসভার উপনির্বাচনে শেষ পর্যন্ত 57.09 শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ৷
স্বাভাবিকভাবেই এই নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ ৷ 2011 সালের মে মাস থেকে যদি ধরা হয়, তাহলে দেখা যাচ্ছে ওই বছর সেপ্টেম্বরে যে উপনির্বাচন হয়েছিল, তাতেই ভবানীপুরে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছিল ৷ সেবার ওই এলাকার 84 শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছিলেন ৷ তার ঠিক কয়েকমাস আগে ‘পরিবর্তন’-এর নির্বাচনে ভবানীপুরের 64 শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছিলেন ৷
আরও পড়ুন : Babul Supriyo : অধ্যক্ষর সময় পাননি নাকি চাননি বাবুল, লোকসভা সচিবালয়ের বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক
এখানে বলে রাখা দরকার যে 2011 সালে সুব্রত বক্সি ভবানীপুর থেকে বিধায়ক হন ৷ কিন্তু সেবার ভোটে লড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ যেহেতু তাঁর নেতৃত্বেই বাম জমানার অবসান হয়েছিল ৷ তাই তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন ৷ মুখ্যমন্ত্রিত্বে থাকার জন্য সেবার উপনির্বাচনে ভবানীপুরে প্রার্থী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷
2016 সালে ভবানীপুরের বিধায়ক হিসেবেই ভোটে লড়েন মমতা ৷ সেবার 67 শতাংশ ভোট পড়েছিল ভবানীপুরে ৷ আর চলতি বছরের বিধানসভা ভোটে ভবানীপুরের 62 শতাংশ মানুষ ভোট দেন ৷ যদিও সেই নির্বাচনে ভবানীপুরে লড়েননি মমতা ৷ তিনি লড়েছিলেন নন্দীগ্রাম থেকে ৷ আর ভবানীপুর থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়ে জেতেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ৷
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh : অবাঙালি তত্ত্ব উড়িয়ে প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের লড়াইকে কুর্নিশ দিলীপের
ফলে কয়েকমাসের ব্যবধানে ভবানীপুরে ভোটদানের হার কমে দাঁড়াল প্রায় 5 শতাংশ ৷ কিন্তু কেন এমন হল ? তাহলে কয়েকমাসের ব্যবধানে দু’বার ভোটের লাইনে দাঁড়াতে অনীহা ছিল এলাকার ভোটারদের ? নাকি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে ভবানীপুরবাসীর অধিকাংশ বুথমুখো হননি ?
প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামে লড়াইয়ে মমতাকে হারতে হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ৷ কিন্তু প্রতিবারের মতো নির্বাচনে তিনিই তৃণমূলের কান্ডারি ছিলেন ৷ তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চেয়েই 213টি কেন্দ্রের ঘাসফুল প্রার্থীদের জিতিয়েছেন বাংলার ভোটাররা ৷ সেই কারণে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ভবানীপুর থেকে পদত্যাগ করে মমতাকে লড়ার সুযোগ করে দিয়েছেন ৷
আরও পড়ুন : raiganj bjp mla resigned : বিজেপি ছাড়লেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী
কিন্তু ভোটদানের হার কম হওয়ার জন্য তৃণমূলের কপালে কি চিন্তার ভাঁজ পড়েছে ? সেই উত্তর অবশ্য এখনও পাওয়া যায়নি ৷ তবে বৃহস্পতিবার দিনভর তৃণমূলের তরফে অবশ্য ভোটারদের বুথমুখী করতে চেষ্টা করা হয়েছে বহুবার ৷ টুইট করে ভোটেরদের বুথমুখী করার চেষ্টা করেন ফিরহাদ হাকিম ও শান্তনু সেন । তৃণমূল কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট দিতে যাওয়ার কথাও বলে আসেন ।
নন্দীগ্রামে বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েছিলেন ৷ ভবানীপুরে বিজেপির প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল ৷ তাঁকে দিনভর ভবানীপুরের বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করতে দেখা গিয়েছে ৷ তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগও তিনি করেন ৷ একই অভিযোগ বিজেপির তরফেও নির্বাচন কমিশনে করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Mamata Banerjee: রাজ্যকে না-জানিয়ে ডিভিসি জল ছাড়ায় ফের ম্যানমেড বন্যার তত্ত্ব মমতার
অন্যদিকে, গতকাল মুর্শিদাবাদের দুই বিধানসভা আসন জঙ্গিপুর ও সামশেরগঞ্জেও ভোট ছিল ৷ সেখানে প্রার্থীদের মৃত্যুর কারণে এপ্রিল-মে মাসে ভোট হয়নি ৷ সেখানে ভোট হয় গতকাল ৷ সামসেরগঞ্জ 79.92 শতাংশ এবং জঙ্গিপুরে 77.63 শতাংশ ভোট পড়েছে ।