বিধাননগর, 21 মে : একটি বহুজাতিক সংস্থার নথি জাল করে রাজ্য সরকারের কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে সিআইডির জালে এক মহিলা-সহ চারজন (CID Arrest in Bank Fraud Case in Bidhannagar) । কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে শুক্রবার লেকটাউন থেকে এই চারজনকে গ্রেফতার করে সিআইডির সাইবার সেল । গ্রেফতার করা হয় ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ঋত্বিক বেহেতিকে । কিন্তু পরে নাটকীয় ভাবে আদালতে জামিনও পেয়ে যায় এই চার অভিযুক্ত ৷
সিআইডি সূত্রে খবর, 2019 সালে গ্রিনেজ বায়ো প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থার ডিরেক্টর লক্ষ্মী টাটিয়া বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেন যে, কেউ বা কারা তাদের সংস্থার ই-মেইল অ্যাকাউন্ট, ওয়েবসাইট হ্যাক করে সেখান থেকে সংস্থার চার ডিরেক্টরের নাম পরিবর্তন করে দেয় ৷ এর পাশাপশি, সংস্থার লেটারহেড জাল করে তার মাধ্যমে আরওসি পাল্টে দেওয়া হয় ৷ এরপরই সেই সংস্থার নামে নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে প্রতিটি ভেন্ডারের কাছে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠানো হয় ৷ পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে আসা কয়েক কোটি টাকা সেই ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নিয়ে এই ধৃতরা আর্থিক জালিয়াতি করে বলে পুলিশে অভিযোগ করেন সংস্থার ওই ডিরেক্টর ।
আরও পড়ুন : বর্ধমানে জালনোট কারবার, গ্রেফতার তিন
উল্লেখ্য, এই সংস্থা বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের বায়ো হ্যাজার্ডের ডিসপোজালের দায়িত্বে ছিল । তার ফলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কয়েক কোটি টাকার ট্রানজেকশন ছিল এই সংস্থার ৷ ঘটনার তদন্ত প্রথমে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানার পক্ষ থেকে চালানো হলেও তাতে অগ্রগতি হচ্ছিল না বলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সংস্থাটির ডিরেক্টর। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের বেঞ্চ এই তদন্তের দায়িত্ব দেয় সিআইডির সাইবার সেলকে । তবে এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মন্থার সিঙ্গেল বেঞ্চ সিআইডিকে নির্দেশ দেয় 25 মের মধ্যে এই তদন্তের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে । কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরই লেকটাউন এলাকায় হানা দেয় সিআইডির সাইবার সেল। সেখান থেকেই এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত ঋত্বিক বেহেতি, রমাকান্ত বর্মন, ভিনিতা বর্মন এবং অরুণোদয় মজুমদারকে গ্রেফতার করে সিআইডি ।
সিআইডি সূত্রের খবর, মূল অভিযুক্ত ঋত্বিক লেটারহেড জাল করে ও সার্টিফাইড করে আরওসি পরিবর্তন করে এবং সংস্থার চারজন ডিরেক্টরের নাম পরিবর্তন করে ৷ পরিবর্তে সেখানে ধৃত এই এই চারজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় । অভিযোগ, এরপরই রাজ্য সরকারের থেকে আসা কয়েক কোটি টাকা নিজেদের অ্যাকাউন্টে হাতিয়ে নেয় এই চারজন । এদের সঙ্গে আর কাদের যোগ রয়েছে সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি । তবে শুক্রবার এদের গ্রেফতার করেও অভিযুক্তদের নিজেদের হেফাজতে নিতে অস্বীকার সিআইডি । ফলে নাটকীয় ভাবে গ্রেফতারির দিনই জামিনে মুক্ত হয়ে যায় কোটি টাকা প্রতারণা চক্রের এই 4 পান্ডা । ধৃতদের সিআইডি নিজেদের হেফাজতে নিতে চায় না বলেই আদালতে জানান ইনভেস্টিগেটিং অফিসার । বিচারপতি তাঁর কাছে গ্রেফতারির কারণ জানতে চাইলেও তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি ৷