কলকাতা, 24 জুন : ওরা শিশু । ছোটো ছোটো দুটি হাতে খেটে চলে দিনরাত । অথচ আন্তর্জাতিক আইন বলছে, শিশুশ্রম নিষিদ্ধ । কিন্তু আইন ভাঙার খেলা চলছেই । বাংলাদেশ থেকে এদেশে শুধুমাত্র ভাত দেওয়ার বিনিময়ে আনা হচ্ছে শিশু শ্রমিক । অন্তত তেমনই প্রমাণ পেল বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স । ইতিমধ্যেই আটক করা হয়েছে এক নাবালককে ।
সময়টা এখন ওদের পড়াশোনার । সময়টা ফুটবল মাঠ কিংবা ডাংগুলি হাতে দাপিয়ে বেড়ানোর । বয়স কত হবে? বড়োজোর বারো । এমন এক শিশুকে পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে উদ্ধার করল সীমান্তরক্ষী বাহিনী । বাংলাদেশ থেকে আসা একটি পণ্যবাহী রেলের ইঞ্জিনের মাঝে লুকিয়ে ছিল সে । ইন্সপেক্টর শম্ভু রায় সেই বালককে দেখতে পায় । তখনই ওয়াগন থেকে তাকে উদ্ধার করা হয় । তারপর তাকে নিয়ে আসা হয় কোম্পানি কমান্ডারের কাছে । জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় তার নাম আলামিন । বাড়ি বাংলাদেশের ইলিশা ভেদিরায় । তার বাবা-মা কেউ নেই ।
জানা যায় বাংলাদেশি দালালরা তাকে পেট্রাপোল অবধি পৌঁছে দিয়েছে । ওই দালালের নাম লিডার । আলআমিনকে কথা দেওয়া হয়েছিল কলকাতায় তাকে কাজ পাইয়ে দেওয়া হবে । পেটে খাবার জুটবে দুবেলা-দুমুঠো । লিডার তাকে বেনাপোলে পৌঁছে দিলে এক মহিলা রেলের খালি ওয়াগানে তুলে দেয় । বলা হয় এই রেলে তাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হবে ।
ওই নাবালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে সীমান্তরক্ষীর জওয়ানরা জানতে পারে, তাকে বলা হয়েছে কলকাতার হেদুয়া হৃদয় নামে এক ব্যক্তি আছে । যে তাকে গ্যারেজে কাজ দেবে । ওই বালকের কাছে কোনও টাকা পয়সা ছিল না । খালি পকেটে বাঁচার তাগিদে সে ছুটে আসছিল ভারতে । BSF নিশ্চয়ই তাকে শিশু শ্রমিক হিসেবে ব্যবহার করা হত এদেশে । পেট্রাপোল সীমান্ত পার হয়ে গেলেই তাকে পাকড়ে নিত চক্রের কোনও এক মাথা । তারপর তাকে বিক্রি করে আহত ভারতের কোন মানব পাচার চক্রে । ইতিমধ্যেই তাকে তুলে দেওয়া হয়েছে বনগাঁ RPF-র হাতে । শিশু শ্রমিক পাচার চক্রের মাথাদের খোঁজ চলছে ।