ETV Bharat / city

মতুয়াদের এড়াতেই সিএএ কার্যকরে সময়সীমা বৃদ্ধি কেন্দ্রের, অভিযোগ তৃণমূলের

এ রাজ্যে সিএএ কার্যকর হলে অসমের বাঙালি হিন্দুদের মতো অবস্থা হবে মতুয়াদের৷ সেই আশঙ্কাতেই নয়া আইন প্রণয়নের সময়সীমা জুলাই পর্যন্ত বাড়িয়েছে কেন্দ্র৷ যাতে বাংলায় ভোটপ্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরই এ নিয়ে পদক্ষেপ করা যায়৷ এমনই অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকারের৷ বুধবার এ নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্য়ের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা ব্রাত্য় বসু৷ তাঁর ইঙ্গিত, মতুয়াদের এড়াতেই সাম্প্রতিক বঙ্গসফর বাতিল করেছেন অমিত শাহ৷

trinomool on caa implementation
বড়মার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়৷ ফাইল ছবি
author img

By

Published : Feb 3, 2021, 9:43 PM IST

কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি : তৃণমূল হোক বা বিজেপি, পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়াভোট বাগে আনতে মরিয়া দু’পক্ষই৷ মতুয়াদের নাগরিকত্বের দাবিই যুধুধান দুই পক্ষের তুরুপের তাস৷ তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, মতুয়ারা ভারতের নাগরিক৷ তাই নতুন করে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কোনও প্রয়োজনই নেই৷ অন্য়দিকে, বিজেপির দাওয়াই, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ৷ গেরুয়া শিবিরের দাবি, এই আইনবলেই ভারতের বৈধ নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি পাবেন মতুয়ারা৷ তৃণমূলের প্রশ্ন, তবে কি এতদিন মতুয়ারা দেশের নাগরিক ছিলেন না ? অথচ তাঁদের প্রতিনিধিরা তো ইতিমধ্যেই ভোটে জিতে মন্ত্রিত্ব পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছেন ।

বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে ঠিক এই প্রশ্নটাই তুলেছেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷ উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই সিএএ ইশুতে ফের একবার সরব হন লোকসভার বিরোধী সাংসদরা৷ আইন প্রণয়নের এতদিন পরও কেন তা কার্যকর হল না, তা জানতে চান লোকসভার কংগ্রেস সাংসদ ভিকে শ্রীকন্ডন৷ তার জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, এই আইন সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি নির্ধারণের পাশাপাশি তা প্রয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য কেন্দ্রকে 9 এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছে রাজ্যসভা৷ আর লোকসভার সংশ্লিষ্ট কমিটি এরজন্য ধার্য করেছে 9 জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা৷

ঠিক এখানেই সন্দেহ প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য়র অভিযোগ, মতুয়াদের নাগরিকত্বের দাবিকে আপাতত ঝুলিয়ে রাখতেই এই দু’টি নির্দিষ্ট তারিখের কথা বলা হয়েছে৷ কারণ, ওই সময়ের মধ্য়ে হয় এ রাজ্য়ে ভোটপ্রক্রিয়া চলবে৷ অথবা নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে৷ তৃণমূলের যুক্তি, যেভাবে অসমে সিএএ কার্যকর করতে গিয়ে লাখ লাখ হিন্দুকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে, এ রাজ্য়ে একই প্রক্রিয়া কার্যকর হলে মতুয়াদের অবস্থাও অসমের বাঙালি হিন্দুদের মতো হবে৷ সেটা বুঝতে পেরেই এখন ঢোঁক গিলছে বিজেপি৷ মতুয়াদের বৈধ নাগরিকত্বের গাজর দেখিয়ে আসলে ভোটের বৈতরণী পার হতে চাইছে তারা৷ ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে সিএএ কার্যকরের প্রক্রিয়া৷

ব্রাত্য়র দাবি, মতুয়াদের পাশে প্রথম থেকেই থেকেছেন তৃণমূলনেত্রী৷ এমনকী, সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় বড়মা বীণাপানি দেবী কিভাবে মমতার অনশন মঞ্চে ছুটে গিয়েছিলেন, সেই প্রসঙ্গও টেনেছেন তিনি৷ তৃণমূলের হয়ে তাঁর দাবি, মমতার সরকারই প্রথম মতুয়া প্রতিনিধিদের মন্ত্রিত্ব পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে৷ মতুয়াদের জন্য তৈরি হয়েছে আলাদা উন্নয়ন বোর্ড৷ তৈরি হচ্ছে নতুন বিশ্ববিদ্য়ালয়৷ এমনকী আগামী দিনে বাগদার হেলেঞ্চায় হরিচাঁদ ঠাকুরের মূর্তি বসানো ও তাকে ঘিরে পার্ক এবং পর্যটনকেন্দ্র গঠনেরও পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের৷

মতুয়া ইশুতে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন ব্রাত্য৷ তাঁর অভিযোগ, নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে ভিক্টোরিয়ায় হরিচাঁদ ঠাকুরের নাম ভুল উচ্চারণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি৷ ব্রাত্যর ইঙ্গিত, মতুয়াদের এড়াতেই তাঁর সাম্প্রতিক বঙ্গসফর বাতিল করেছেন অমিত শাহ৷ রাজ্য়ের মন্ত্রীর চ্য়ালেঞ্জ, বাংলায় এসে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে কী প্রতিশ্রুতি দেন অমিত, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে রাজ্যের সরকারও৷

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী প্রয়োগে সময়সীমা বৃদ্ধি কেন্দ্রের

বিজেপির আসন্ন রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ব্রাত্য৷ তবে বিষয়টি আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত হওয়ায় রথযাত্রার অনুমতি প্রদান নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি৷ যদিও ব্রাত্যর বক্তব্য়, বাংলায় রথযাত্রার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন শ্রী চৈতন্যমহাপ্রভু৷ তিনি ধর্মীয় বিভাজনে বিশ্বাসী ছিলেন না৷ ব্রাত্য়র হুঁশিয়ারি, বাংলায় রথযাত্রা করবেন, অথচ শ্রী চৈতন্যর ভাবাদর্শ মানবেন না, এটা চলবে না৷ পাশাপাশি, এই ইশুতে লালকৃষ্ণ আদবানির প্রসঙ্গও টানেন ব্রাত্য৷ তাঁর অভিযোগ, যে নেতার হাত ধরে একদিন রথয়াত্রা কর্মসূচি শুরু করেছিল বিজেপি, আজ তিনিই দলে অপ্রাসঙ্গিক৷

এদিন তৃণমূলের রাজ্য কার্যালয়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করেন তিনজন৷ তাঁদের মধ্য়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের শ্য়ালক অন্যতম৷

কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি : তৃণমূল হোক বা বিজেপি, পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়াভোট বাগে আনতে মরিয়া দু’পক্ষই৷ মতুয়াদের নাগরিকত্বের দাবিই যুধুধান দুই পক্ষের তুরুপের তাস৷ তৃণমূল সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, মতুয়ারা ভারতের নাগরিক৷ তাই নতুন করে তাঁদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কোনও প্রয়োজনই নেই৷ অন্য়দিকে, বিজেপির দাওয়াই, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বা সিএএ৷ গেরুয়া শিবিরের দাবি, এই আইনবলেই ভারতের বৈধ নাগরিক হিসাবে স্বীকৃতি পাবেন মতুয়ারা৷ তৃণমূলের প্রশ্ন, তবে কি এতদিন মতুয়ারা দেশের নাগরিক ছিলেন না ? অথচ তাঁদের প্রতিনিধিরা তো ইতিমধ্যেই ভোটে জিতে মন্ত্রিত্ব পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছেন ।

বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে ঠিক এই প্রশ্নটাই তুলেছেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু৷ উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই সিএএ ইশুতে ফের একবার সরব হন লোকসভার বিরোধী সাংসদরা৷ আইন প্রণয়নের এতদিন পরও কেন তা কার্যকর হল না, তা জানতে চান লোকসভার কংগ্রেস সাংসদ ভিকে শ্রীকন্ডন৷ তার জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, এই আইন সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি নির্ধারণের পাশাপাশি তা প্রয়োগের প্রক্রিয়া শেষ করার জন্য কেন্দ্রকে 9 এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছে রাজ্যসভা৷ আর লোকসভার সংশ্লিষ্ট কমিটি এরজন্য ধার্য করেছে 9 জুলাই পর্যন্ত সময়সীমা৷

ঠিক এখানেই সন্দেহ প্রকাশ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ বুধবারের সাংবাদিক বৈঠকে ব্রাত্য়র অভিযোগ, মতুয়াদের নাগরিকত্বের দাবিকে আপাতত ঝুলিয়ে রাখতেই এই দু’টি নির্দিষ্ট তারিখের কথা বলা হয়েছে৷ কারণ, ওই সময়ের মধ্য়ে হয় এ রাজ্য়ে ভোটপ্রক্রিয়া চলবে৷ অথবা নির্বাচন শেষ হয়ে যাবে৷ তৃণমূলের যুক্তি, যেভাবে অসমে সিএএ কার্যকর করতে গিয়ে লাখ লাখ হিন্দুকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো হয়েছে, এ রাজ্য়ে একই প্রক্রিয়া কার্যকর হলে মতুয়াদের অবস্থাও অসমের বাঙালি হিন্দুদের মতো হবে৷ সেটা বুঝতে পেরেই এখন ঢোঁক গিলছে বিজেপি৷ মতুয়াদের বৈধ নাগরিকত্বের গাজর দেখিয়ে আসলে ভোটের বৈতরণী পার হতে চাইছে তারা৷ ঝুলিয়ে রাখা হচ্ছে সিএএ কার্যকরের প্রক্রিয়া৷

ব্রাত্য়র দাবি, মতুয়াদের পাশে প্রথম থেকেই থেকেছেন তৃণমূলনেত্রী৷ এমনকী, সিঙ্গুর আন্দোলনের সময় বড়মা বীণাপানি দেবী কিভাবে মমতার অনশন মঞ্চে ছুটে গিয়েছিলেন, সেই প্রসঙ্গও টেনেছেন তিনি৷ তৃণমূলের হয়ে তাঁর দাবি, মমতার সরকারই প্রথম মতুয়া প্রতিনিধিদের মন্ত্রিত্ব পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে৷ মতুয়াদের জন্য তৈরি হয়েছে আলাদা উন্নয়ন বোর্ড৷ তৈরি হচ্ছে নতুন বিশ্ববিদ্য়ালয়৷ এমনকী আগামী দিনে বাগদার হেলেঞ্চায় হরিচাঁদ ঠাকুরের মূর্তি বসানো ও তাকে ঘিরে পার্ক এবং পর্যটনকেন্দ্র গঠনেরও পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য সরকারের৷

মতুয়া ইশুতে প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন ব্রাত্য৷ তাঁর অভিযোগ, নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে ভিক্টোরিয়ায় হরিচাঁদ ঠাকুরের নাম ভুল উচ্চারণ করেছেন নরেন্দ্র মোদি৷ ব্রাত্যর ইঙ্গিত, মতুয়াদের এড়াতেই তাঁর সাম্প্রতিক বঙ্গসফর বাতিল করেছেন অমিত শাহ৷ রাজ্য়ের মন্ত্রীর চ্য়ালেঞ্জ, বাংলায় এসে মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে কী প্রতিশ্রুতি দেন অমিত, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে রাজ্যের সরকারও৷

আরও পড়ুন: নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী প্রয়োগে সময়সীমা বৃদ্ধি কেন্দ্রের

বিজেপির আসন্ন রথযাত্রা কর্মসূচি নিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি ব্রাত্য৷ তবে বিষয়টি আদালতের এক্তিয়ারভুক্ত হওয়ায় রথযাত্রার অনুমতি প্রদান নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তিনি৷ যদিও ব্রাত্যর বক্তব্য়, বাংলায় রথযাত্রার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন শ্রী চৈতন্যমহাপ্রভু৷ তিনি ধর্মীয় বিভাজনে বিশ্বাসী ছিলেন না৷ ব্রাত্য়র হুঁশিয়ারি, বাংলায় রথযাত্রা করবেন, অথচ শ্রী চৈতন্যর ভাবাদর্শ মানবেন না, এটা চলবে না৷ পাশাপাশি, এই ইশুতে লালকৃষ্ণ আদবানির প্রসঙ্গও টানেন ব্রাত্য৷ তাঁর অভিযোগ, যে নেতার হাত ধরে একদিন রথয়াত্রা কর্মসূচি শুরু করেছিল বিজেপি, আজ তিনিই দলে অপ্রাসঙ্গিক৷

এদিন তৃণমূলের রাজ্য কার্যালয়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগদান করেন তিনজন৷ তাঁদের মধ্য়ে বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের শ্য়ালক অন্যতম৷

For All Latest Updates

TAGGED:

bratya
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.