কলকাতা 21 জানুয়ারি: অনুপ মাঝি (লালার) বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারে না সিবিআই। হাইকোর্টে এমনই দাবি করলেন বেআইনি কয়লা উত্তোলন ও পাচারে অভিযুক্ত অনুপের আইনজীবী। তাঁর যুক্তি, অপরাধমূলক কাজকর্মে যুক্ত বলে মনে করলেই, কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে তদন্ত করতে পারে না সিবিআই। সিবিআইয়ের সেই এক্তিয়ার নেই।
অনুপের আইনজীবীর দাবি, এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সম্মতি লাগে। 2018 সালে এ ব্যাপারে রাজ্যের যে সম্মতি লাগে রাজ্য তা তুলে নিয়েছে। অনুপ মাঝির তরফে আইনজীবী ফারুক রাজ্জাক বলেন, অনুপের নিজের কোম্পানি রয়েছে, কল কেনা-বেচার কাজ করেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সিবিআই-এর তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল বলেন, "রাজ্য যে কনসেন্ট তুলে নিয়েছে সেটা ছিল রাজ্যের কোনও অফিসারের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করলে সেই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কেন্দ্রীয় আইনে বলা আছে, রেলওয়ে এলাকাতে যদি কোনও অপরাধমূলক কাজকর্ম চলে, সে ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্ত করতে পারে। ইসিএন এরিয়া থেকে বেআইনি কয়লা উত্তোলন এবং কয়লা পাচারের অভিযোগ রয়েছে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে।"
মামলাকারীর আইনজীবী এই বক্তব্যের জবাব দিয়ে বলেন, "যদি এটা ধরতে হয়, তাহলে তো দেশের সব জায়গা়ই রেলের এলাকার মধ্যে পড়ে যাবে।" দু পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য করেন," আপনার মক্কেলকে ওই এলাকা থেকে সরে যেতে বলুন না ! তদন্ত হতে দিন, সমস্যা কোথায়?" কেন্দ্রীয় সরকার অনুপ মাঝিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কোন আইনের বলে সমন পাঠিয়েছিল, সেই নথি তলব করেছে হাইকোর্ট। আগামী 27 জানুয়ারি ফের এই মামলার শুনানি হবে।
গত বছর 27 নভেম্বর ইসিএল অঞ্চলে বেআইনি কয়লা উত্তোলন এবং কয়লা পাচার সংক্রান্ত অভিযোগে অনুপ মাঝির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে নোটিশও পাঠিয়েছিল। অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে সিবিআই দপ্তরে হাজিরা এড়ালেও তারপর থেকেই বেপাত্তা কয়লা মাফিয়া লালা। এরপরই 14 ডিসেম্বর নিজের গ্রেপ্তারি এড়াতে কলকাতা হাইকোর্টে এফআইআর খারিজের আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন:এক সপ্তাহের মধ্যে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
এর আগে গত 13 নভেম্বর অনুপ মাঝি ঘনিষ্ঠ 6 কয়লা ব্যবসায়ীকে নোটিশ পাঠায় আয়কর দপ্তর। অনুপ মাঝির সঙ্গে এই ছয় কয়লা ব্যবসায়ীর ঘনিষ্ঠ সংযোগ সূত্র পাওয়ার পরই তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমন পাঠিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু তিনি দেখা করেননি। সূত্রের খবর, গরু পাচার কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত মুর্শিদাবাদের ব্যবসায়ী এনামুল সিবিআইয়ের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর কয়লা ব্যবসায়ী অনুপ মাঝির সঙ্গে তার যোগসাজশ পেয়েছেন তদন্তকারীরা। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, ইসিএল অঞ্চলে অবৈধ কয়লা খনন ও পাচারে মূল অভিযুক্ত সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে যোগসূত্র করে এই বেআইনী চক্র চালাচ্ছিল। পুরুলিয়ার নিতুরিয়া ভামুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা অনুপ মাঝি ওরফে লালা বেআইনি কয়লা পাচার থেকে শুরু করে বিভিন্ন রিসর্ট ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত ছিল বলে অভিযোগ।