কলকাতা, 8 জুলাই : বেআইনিভাবে শ্মশানের জমি বিক্রি সংক্রান্ত মামলায় স্বস্তি পেলেন কাঁথি পৌরসভার (Contai Municipality) প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারী (Soumendu Adhikari) ৷ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) জানিয়েছে যে আগামী বুধবার পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না ৷ তবে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার বাধা নেই । পাশাপাশি রাজ্যকে এই মামলার কেস ডায়েরি জমা দিতে বলা হয়েছে আদালতের তরফে ৷
পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির রাঙামাটি এলাকার একটি শ্মশানের জমিতে বেআইনি দোকান ঘর বসিয়ে তা প্লট বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ৷ এই নিয়ে এফআইআরও হয়েছে ৷ তিনি ছাড়াও আরও দু’জনের নাম রয়েছে এফআইআরে ৷
সৌমেন্দু বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Bengal Opposition Leader Suvendu Adhikari) ভাই ৷ তার উপর তাঁর বাবা শিশির অধিকারী (Sisir Adhikari) ও দাদা দিব্যেন্দু অধিকারী (Dibyendu Adhikari) সাংসদ ৷ তাঁরা তৃণমূলে থাকলেও শুভেন্দু-সৌমেন্দু এখন বিজেপিতে (BJP) ৷ ফলে এই খবর সামনে আসতেই রাজ্য রাজনীতিতে হইচই পড়ে ৷ তৃণমূলের (Trinamool Congress) তরফে সরাসরি অধিকারী পরিবারকে কটাক্ষ করা হয় ৷ আবার বিজেপির তরফে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার পালটা অভিযোগ তোলা হয় ৷
এই পরিস্থিতিতে ওই এফআইআর খারিজ করার জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন সৌমেন্দু ৷ বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর এজলাসে শুনানি হয় ৷ তাঁর হয়ে সওয়াল করেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ৷ তিনি বলেন, "এই নিয়ে তিনবার সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর করা হল । রাজনৈতিক কারণেই বারবার এফআইআর করা হচ্ছে । এর আগে ত্রিপল চুরি এবং কাঁথির প্রভাত কুমার মহাবিদ্যালয়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছিল । দু’বারই তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ।"
অন্যদিকে কাঁথি পৌরসভার বর্তমান চেয়ারম্যানের দাবি, "জমির চরিত্র বদলের কোনও অনুমতি পৌরসভা দেয়নি, বা এই সংক্রান্ত বৈঠকও পৌরসভায় হয়নি । দোকান বানাবার কোনও ওয়ার্ক অর্ডার পৌরসভায় নেই । কোনও টেন্ডার ডাকা হয়নি । দোকানের মালিকরা বলেছেন যে তাঁরা এই দোকানের জন্য 8 থেকে 10 লাখ টাকা দিয়েছেন । দোকান মালিকদের থেকে নেওয়া কোনও টাকা পৌরসভায় জমা পড়েনি ।"
রাজ্যের তরফে আইনজীবী শাশ্বতগোপাল মুখোপাধ্যায় বলেন, "অনেক ক্ষেত্রেই এই ধরনের পদাধিকারীরা সরে যাওয়ার পর দেখা যায় তাঁদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । অভিযোগ উঠেছে ব্যক্তিগত ভাবে প্রায় 1 কোটি টাকা দোকান মালিকদের থেকে নেওয়া হয়েছে । সেই টাকা পৌরসভার কোষাগারে গিয়েছে কি না সেটা দেখতে হবে । এই স্টলগুলো বসানো বাবদ কোটি কোটি টাকা নেওয়া হয়েছে । দু'জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এই ব্যাপারে ।"
বিচারপতি বিবেক চৌধুরী সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর রাজ্যকে কেস ডায়েরি আনার নির্দেশ দিয়েছেন । আগামী 13 জুলাই ফের শুনানি হবে এই মামলার । আপাতত সৌমেন্দুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারের মতো কড়া পদক্ষেপ নিতে পারবে না পুলিশ । তবে তদন্ত চালিয়ে যাওয়ার বাধা নেই ।