কলকাতা, 8 জুলাই: আদালতে মুখ পুড়ল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Visva Bharati University) ৷ তাদের বিরুদ্ধে এক ঠিকা কর্মীকে বিনা কারণে অপসারণের অভিযোগ উঠেছিল ৷ এরপরই সুবিচারের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা রুজু করেন শ্রাবণী গঙ্গোপাধ্য়ায় নামে ওই মহিলা ৷ তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আগামী সাতদিনের মধ্যে তাঁকে কাজে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷ দিতে হবে মামলার খরচও ৷ শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ ৷
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, 2013 সালের মার্চ মাসে বিশ্বভারতীর ভাষা ভবনে ঠিকা কর্মী হিসাবে নিযুক্ত হন শ্রাবণী ৷ সংশ্লিষ্ট বিভাগের নথিপত্র দেখাশোনার কাজ করতেন তিনি ৷ কিন্তু, 2014 সালের মার্চ মাস থেকে অগস্ট মাস পর্যন্ত তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় ৷ পরে ওই বছরই ফের শর্তসাপেক্ষে শ্রাবণীকে কাজে নিয়োগ করা হয় ৷ কিন্তু, 2020 সালের মার্চ মাসে তাঁকে শো-কজ করেন বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার ৷ শ্রাবণীর বিরুদ্ধে তহবিল তছরুপ এবং চুক্তি ভেঙে অন্যত্র কাজ করার অভিযোগ ওঠে ৷ শ্রাবণী শো-কজের জবাব দেন ৷ তারপরও সংশ্লিষ্ট কমিটির সুপারিশ মেনে শ্রাবণীকে বরখাস্ত করা হয় ৷
শ্রাবণীর বক্তব্য ছিল, তাঁকে অন্যায়ভাবে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷ তাঁর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল ৷ কিন্তু, যে রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁকে বরখাস্ত করা হয়, সেই অনুসন্ধান রিপোর্টের প্রতিলিপি তাঁকে দেওয়া হয়নি ৷ 2020 সালের 4 জুলাই চাকরি হারান শ্রাবণী ৷ এরপরই আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি ৷
এদিন আদালত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চায়, কেন শ্রাবণীকে চাকরি থেকে সরানো হল ? যার কোনও সদুত্তর মেলেনি ৷ এমনকী, আদালতে কোনও নথিও পেশ করতে পারেনি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ৷ বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন, এখানে কোনওরকম প্রমাণপত্র ছাড়াই মামলাকারীকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে ৷ যদিও মামলাকারীকে আংশিক সময়ের জন্য নিয়োগ করা হয়েছিল ৷ কিন্তু এটা স্বাভাবিক ন্যায়ের বিরোধী ৷ তাই মামলাকারীকে আগামী সাতদিনের মধ্যে পুনরায় কাজে নিয়োগ করতে হবে ৷ মামলাকারীর যদি কোনও টাকা বকেয়া থাকে, তাও মিটিয়ে দিতে হবে ৷
এরই পাশাপাশি আদালত জানায়, মামলা করার জন্য শ্রাবণী যে টাকা খরচ হয়েছে, সেই বাবদ আরও 25 হাজার টাকা দিতে হবে তাঁকে ৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই তাঁকে এই টাকা দেবে ৷