কলকাতা, 14 সেপ্টেম্বর : বউবাজারে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা নিয়ে বিভ্রান্তি । ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের জন্য যে সব বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে । কিন্তু ক্ষতিপূরণের তালিকা তৈরি করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ । স্থানীয় কাউন্সিলর সত্যেন্দ্রনাথ দে জানিয়েছেন, অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার বলে টাকা দাবি করছেন । আর তাতেই শুরু হয়েছে জটিলতা । অনেকেই বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন বহু বছর আগে । ক্ষতিপূরণের কথা শুনে অনেকেই এসে তা দাবি করছেন । তিনি জানিয়েছেন অনেক ক্ষেত্রে একটি বাড়িতে তিন ভাই থাকেন ৷ তিন ভাই-ই এসে টাকা দাবি করছেন । অনেক বাড়ির ক্ষেত্রে মালিক ভাড়াটে বসিয়ে চলে গেছেন । একদিকে যেমন ভাড়াটে দাবি করছেন ক্ষতিপূরণের অন্যদিকে বাড়ির মালিক দাবি করছেন । কারা ক্ষতিপূরণ পাবেন আর কারা পাবেন না তাই নিয়ে বিভ্রান্তকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে । তিনি জানিয়েছেন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ একটি ফর্ম দিয়েছে । সেই ফর্ম পূরণ করে আবেদন জমা দিতে হবে । ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদাররা ট্রেড লাইসেন্স জমা দেবেন ফর্মের সঙ্গে । বাসিন্দাদের দিতে হবে তাদের ট্যাক্সের বিল ।
সত্যেন্দ্রনাথবাবু জানিয়েছেন ফর্মে তিনি অনুমোদন দিলে তবেই মিলবে ক্ষতিপূরণের অর্থ । কারণ, স্থানীয় কাউন্সিলর হিসেবে তিনি জানেন কোন বাড়িতে কোন কোন বাসিন্দা থাকেন । সেই ভাবেই উনি ফর্মে সই করে অনুমোদন দেবেন । এখনও পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত 123 জনের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে । যে সংখ্যাটি 150 ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে । ইতিমধ্যেই 101 জনকে ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হয়ে গেছে ।
বউবাজারের পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার নবান্নতে মেয়র ও কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । স্থানীয় কাউন্সিলর সত্যেন্দ্রনাথ দে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যে সব বাড়ি মেরামত করা সম্ভব সেগুলো দ্রুত ঠিক করে সংশ্লিষ্ট পরিবারদের ফিরিয়ে আনার জন্য । বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে বাসিন্দাদের হোটেলে থাকা অসুবিধাজনক । তাই ফ্ল্যাট বা বাড়ি ভাড়া করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে থাকতে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে । সত্যেন্দ্রনাথ দে নিজে বিষয়টি নিয়ে মেট্রো রেলের সঙ্গে কথা বলবেন ।
আগেই পাঁচটি বাড়িকে বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছিল । এই পাঁচটি বাড়ি ভেঙে ফেলার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে । আরও 16টি বাড়িকে চিহ্নিত করা হয়েছে । পাঁচটি বাড়ি ভাঙার কাজ শেষ হলে ওই 16টি বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হবে । সত্যেন্দ্রনাথবাবু জানিয়েছেন এই বাড়ি ভাঙার কাজ করতে অনেকটা সময় লাগবে । সে সময়টা হোটেলের থাকা সম্ভব নয়, তাই অন্যত্র পুনর্বাসন দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে ।