কলকাতা, 27 অগস্ট : শুধুমাত্র রাজ্যবাসীর কাছেই নয়, দলের অন্দরেও দ্রুত জনপ্রিয়তা হারাচ্ছেন বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব (Biplab Kumar Deb) ৷ তাঁর দলের বিধায়কদের একটা বড় অংশই মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় না-খুশ ৷ সূত্রের দাবি, এঁদের অনেকেই তলে তলে যোগ রাখছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ৷ এমনকী, বিজেপির বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট ইতিমধ্যেই আগরতলা থেকে পৌঁছে গিয়েছেন কলকাতায় ! তবে কি ভাঙন ধরছে ত্রিপুরা বিজেপিতে ? পদ্ম ছেড়ে ঘাসফুল হাতে তুলে নিতে চলেছেন নেতা, মন্ত্রীরা ? না ৷ এর কোনও সরাসরি জবাব তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে মেলেনি ৷ তবে ফের একবার যে ত্রিপুরার রাজনীতিতে পালাবদলের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে, সেটা একেবারেই স্পষ্ট ৷ তৃণমূলও চাইছে, চুপচাপ ঘর গুছানোর কাজ সেরে ফেলতে ৷
আরও পড়ুন : Tripura : টিএমসিপির সভানেত্রী আক্রান্ত ত্রিপুরায়, তড়িঘড়ি আগরতলা গেলেন কুণাল-শান্তনু
তৃণমূলের একাংশের দাবি, এই মুহূর্তে ত্রিপুরায় বিপ্লব দেবের সরকার সংখ্যালঘু ৷ তৃণমূল কংগ্রেস চাইলে সরকার ফেলে দিতেই পারে ৷ কিন্তু দলীয় নেতৃত্বের নাকি তাতে সায় নেই ৷ তৃণমূলের শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য, জনগণ নির্বাচিত কোনও সরকারকে এভাবে সময়ের আগে ফেলে দেওয়াটা অগণতান্ত্রিক ৷ তাতে ভোটদাতাকেও অসম্মান করা হয় ৷ তৃণমূল সেই পথে হাঁটতে নারাজ ৷ তারা চায়, বিপ্লব দেবের সরকার পূর্ণ সময় ক্ষমতায় থাকুক ৷ তৃণমূল চাইছে, ভোটে লড়ে ত্রিপুরার ক্ষমতায় আসতে ৷ যদিও ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, সময়ের আগে বিপ্লব দেবের সরকার ফেলা যাবে কিনা, সেটা অন্য বিষয় ৷ কিন্তু তৃণমূল সেই চেষ্টা করলে জনপ্রিয়তা হারাবে ৷ বিজেপি-ও তৃণমূলের বিরোধিতায় নতুন অস্ত্র হাতে পেয়ে যাবে ৷ স্বাভাবিকভাবেই সেটা চাইবে না বাংলার শাসকদল ৷
সূত্রের খবর, বিপ্লব দেব যেভাবে সরকার চালাচ্ছেন, তাতে বিজেপি নেতাদের একাংশ খুশি নয় ৷ এই প্রেক্ষাপটে তৃণমূল কংগ্রেসের উত্থান তাঁদের নজর কাড়ছে ৷ ইদানীংকালে তৃণমূলের প্রতি সমর্থন বাড়ছে রাজ্য়ের মানুষের ৷ একইসঙ্গে তৃণমূলকে নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে বিজেপির অন্দরেও ৷ অন্যদিকে, কলকাতা থেকে প্রায় প্রতিদিনই নিয়ম করে তৃণমূলের নেতা, কর্মীরা পৌঁছে যাচ্ছন ত্রিপুরায় ৷ ফলে সে রাজ্যে দলের কর্মী, সমর্থকদের মনোবলও বাড়ছে।
আরও পড়ুন : TMCP : ত্রিপুরা-সহ ভিনরাজ্যেও এবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন
এই অবস্থায় একুশে জুলাই বা খেলা হবে দিবসের পর শনিবার ত্রিপুরায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হবে ৷ আপাতত চলছে শেষ পর্যায়ের প্রস্তুতি ৷ করোনা আবহে বড় জমায়েত এড়িয়ে ছোট ছোট কর্মসূচি পালন করা হবে ৷ সেইসঙ্গে একাধিক জায়গায় করোনাবিধি মেনেই জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানো হবে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee) বক্তৃতা ৷ তবে সম্প্রতি যেভাবে দফায় দফায় ত্রিপুরায় আক্রান্ত হয়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা, তাতে শনিবারও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস পালনের অনুষ্ঠানে অশান্তির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না দলীয় নেতৃত্ব ৷