কলকাতা, 6 সেপ্টেম্বর : পূর্ব মেদিনীপুরের CPI(M) জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য শ্যামল মাইতিকে নিয়ে জোর তর্ক-বিতর্ক চলল দলীয় বৈঠকে । সূত্রের খবর, নজিরবিহীনভাবে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির সামনেই তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়লেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রবীন দেব । গতকাল অনলাইনে CPI(M) রাজ্য কমিটির বৈঠকের আয়োজন করা হয় । সেখানেই হলদিয়ার CPI(M) নেতা শ্যামল মাইতির বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে । তাঁর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপ ও শাসকদলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগ জমা পড়েছিল দলীয় নেতৃত্বের কাছে ।
শ্যামল মাইতি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটি ও জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য । তাই তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অভিযোগ নিয়ে তদন্ত কমিশন গঠন করেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটি । আর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর পদ কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে । সূত্রের খবর, তখনই ক্ষোভে ফেটে পড়েন রবীন দেব । বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর কাছে সরাসরি জানতে চান, কী অপরাধে শ্যামল মাইতিকে বহিষ্কার করা হচ্ছে বা তাঁর পদ কেড়ে নেওয়া হচ্ছে ? বিমান বসু জানিয়ে দেন, আগের বৈঠকেই শ্যামল মাইতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে । সেই সময় রবীন দেব তাঁর বক্তব্য পেশ করে বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেছিলেন । বিষয়টি দলের কাছে নথিবদ্ধ রয়েছে । সূত্রের খবর, এরপর বিমান বসুর উদ্দেশে রবীনবাবু বলেন, "পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্ব থেকে আমাকেও অব্যাহতি দেওয়া হোক । আমি আর যেতে চাই না পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় । আসন্ন নির্বাচনে অন্য কাউকে পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্ব দিন ।"
নজিরবিহীনভাবে বৈঠকে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যের সঙ্গে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যানের তর্কাতর্কিতে অস্বস্তিতে পড়েন সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিমরা । সূত্রের খবর, বৈঠকের মাঝখানে বিমান বসু এবং রবীন দেবের তর্কাতর্কি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে মহম্মদ সেলিমকে হস্তক্ষেপ করতে হয় । পরে রবীন দেব শৃঙ্খলা ভেঙেছেন বলে অভিযোগ আনেন তিনি । মেজাজ হারান বিমান বসু । এই পরিস্থিতিতে রবীন দেবকে ধমক দেন মহম্মদ সেলিম । তারপর নিজেকে সামলে নেন তিনি ।