কলকাতা, 1 জানুয়ারি : আবারও বিশ্বকে চিন্তায় ফেলেছে করোনা মহামারী (Covid Pandemic News) । এবার দোসর ওমিক্রন আতঙ্ক (Latest Omicron Update) । তবে এখনও সরকারি অনুমোদিত ও সরকার পোষিত স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীদের 'কোয়ারিন্টিন লিভ'-এর কোনও নির্দেশিকা জারি করা হয়নি (quarantine leave due to covid) । অবিলম্বে এই নির্দেশিকা জারি করার দাবি তুলেছে শিক্ষকমহল (bengal teachers again voices their demand for quarantine leave) ।
একদিকে শীতের ছুটি প্রায় শেষ । রাজ্যের স্কুল-কলেজগুলি আগামী 3 জানুয়ারি থেকে খুলে যাচ্ছে, অন্যদিকে এবার করানোর সঙ্গে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ওমিক্রন । সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামী 3 জানুয়ারি থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারির ইঙ্গিত দিলেও স্কুল বা কলজে বন্ধ করার আপাতত কোনও পরিকল্পনা নেই প্রশাসনের ।
শিক্ষকরা জানিয়েছেন, যেভাবে প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা, তাতে স্কুলভবনগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্যানিটাইজেশন হলেও সংক্রমণের সুযোগ থেকেই যায় । শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর বক্তব্য, "বারবার দাবি জানানো সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের জন্য কোয়ারিন্টিন লিভের নির্দেশিকা জারি হল না । যাঁরা এই ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁদের ছুটির কী হবে, সে ব্যাপারে কোনও স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই । আমরা আগেও দাবি জানিয়েছি ৷ আবারও জানাচ্ছি যে কোভিড উপসর্গের জন্য কোয়ারিন্টিন লিভ দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করুক শিক্ষা দফতর । সরকারি কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এই নির্দেশিকা জারি করা হলেও আমাদের ক্ষেত্রে স্পষ্ট করে তা বলা হচ্ছে না কেন ?"
পাশাপাশি মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, "সরকার পোষিত ও সরকার অনুমোদিত স্কুলের শিক্ষকদেরও সরকারি কর্মী হিসেবে মান্যতা দিতে হবে । শুধুমাত্র কোয়ারিন্টিন লিভই নয়, বহু সুযোগ-সুবিধা থেকে এই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ব্রাত্য করে রাখা হয়েছে । তবে এই বিষয় আমার মনে হয় যে যদি কোনও শিক্ষক, শিক্ষিকা বা শিক্ষাকর্মীর কোনরকম ছোঁয়াচে রোগ হয়, তবে সেই ক্ষেত্রে তাঁদের ছুটি দেওয়া হয় । এই নিয়মটি বহু দিন ধরেই চলে আসছে । এটা নতুন নয় । তবে করোনা সংক্রমণ একটা নতুন পরিস্থিতি । তাই এই ক্ষেত্রে করোনাকে ছোঁয়াচে রোগের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে কি না ?"
সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে কোয়ারিন্টিন লিভ রয়েছে । তাই সেই আয়তায় থাকা সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের ক্ষেত্রে কোয়ারিন্টিন লিভের ব্যবস্থা রয়েছে । এ বিষয় একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়েছে ।
কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসসের পক্ষ থেকে চন্দনকুমার মাইতি বলেন, "গত 22 মাসে ঘোর করোনা পরিস্থিতিতে যখন সমস্ত স্কুল বন্ধ ছিল তখন আমরা মিড-ডে-মিল দিয়ে গেয়েছি । শিক্ষক, শিক্ষিকার, শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগীরা বিভিন্ন সেল্ফ হেল্প গ্রুপের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করে গিয়েছে । প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে গিয়েছেন এঁরা । এর ফলে 38 জন প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা-সহ আরও অনেক শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন । তাঁদের চিকিৎসার জন্য কোনও সাহায্য মেলা তো দূরস্থান, তাঁদের পরিবার সরকার বা শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে ন্যূনতম সহানুভূতিটুকুও পাইনি । তাই অবিলম্বে কোয়ারিন্টিইন লিভ-সহ এঁদের কোভিড যোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে । এছাড়াও এই শিক্ষকদের রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বীমার অধীনে আনা এটা জরুরি বলে আমার মনে হয় ।"
আরও পড়ুন : Omicron Scare : শিয়রে করোনার তৃতীয় ঢেউ, বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে প্রস্তুত হতে নির্দেশ স্বাস্থ্য ভবনের