কলকাতা, 24 মার্চ : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেই নড়েচড়ে বসল পুলিশ-প্রশাসন । 10 দিনের স্পেশাল ড্রাইভ, বাংলাকে অস্ত্র-মুক্ত করতে তৎপর হল রাজ্য পুলিশ । বীরভূমের বগটুই গ্রামে দাঁড়িয়ে ডিজি মনোজ মালব্যকে বাংলা থেকে বেআইনি অস্ত্র ও বোমা উদ্ধারের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee) । তারপরেই শুদ্ধিকরণের স্পেশাল ড্রাইভ । আগামী দশ দিন এই কাজেই অগ্রাধিকার পুলিশের । বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হল, বেআইনি অস্ত্র ও বোমা উদ্ধার করতে হবে (Bengal Police will Conduct Special Raid to recover Illegal Arms-Bomb) ।
এই মুহূর্তে জোড়া কাউন্সিলর খুন, আনিস কাণ্ড এবং রামপুরহাট কাণ্ডের পর কিছুটা ব্যাকফুটে রাজ্য প্রশাসন । গত কয়েক মাসে রক্ত ঝরেছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে । আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা । তাদের অভিযোগ, বোমা-বারুদের স্তূপে দাঁড়িয়ে আছে বাংলা । 10 দিনে রাজ্যে খুন হয়েছেন প্রায় 28 জন । এই অবস্থায় রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি তুলেছে বিজেপি ৷ রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Prime Minister Narendra Modi) । এই অবস্থায় বগটুইকে সামনে রেখে গোটা রাজ্যের পুলিশের জন্য কড়া অবস্থান গ্রহণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী । পুলিশকে কড়া নির্দেশ, সারা রাজ্য জুড়ে তল্লাশি চালাতে হবে বেআইনি অস্ত্র এবং বোমা উদ্ধার করতে হবে । এখানেই শেষ নয় হিংসা রুখতে দু’দিনের মধ্যে অপরাধীদের তালিকা তৈরি করতে হবে ।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর তৎপর হল রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন । হিংসা রুখতে অভিযানের পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য পুলিশ । থানায় থানায় গিয়ে নজরদারি করবেন এডিজি, আইজি, ডিআইজি এবং সিপি-রা । আর একে সামনে রেখেই রাজ্যকে হিংসা মুক্ত করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে । সাধারণত পুলিশ রুটিন মাফিক বেআইনি অস্ত্র বা বোমা উদ্ধারের লক্ষ্যে তল্লাশি চালায় । তবে গোটা রাজ্যে সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে তল্লাশির নির্দশন দেশে কবে হয়েছে, তা ওয়াকিবহাল মহল মনে করতে পারছে না ৷ সে দিক থেকে দেখতে গেলে রাজধর্ম পালন করছেন মমতা । এখন দেখা যাক কীভাবে রাজ্য জুড়ে তল্লাশি চালানো হবে ?
পুলিশের তরফ থেকে যে রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে বলা হয়েছে, কোথায় কোথায় রাজনৈতিক রেষারেষি রয়েছে, কাদের মধ্যে রয়েছে, তাও চিহ্নিত করতে হবে । তার পর তল্লাশি চালাতে হবে । তা ছাড়া এলাকায় যত সমাজবিরোধী রয়েছে, তাদের উপর নজর রাখতে হবে । এই ব্যাপারে একটি রেজিস্টার মেনটেন করতে হবে । সেই রেজিস্টার নিয়মিত আপডেট করতে হবে ।
বিভিন্ন থানার আওতায় যে সব পরিচিত সমাজবিরোধী ও দুষ্কৃতি রয়েছে, তাদের পুরনো অপরাধের ধরন অনুযায়ী পৃথক রেজিস্টার তৈরি করতে হবে— এ, বি এবং সি । তাদের বিরুদ্ধে আগে কোন কোন ধারায় মামলা করা হয়েছে । সেই সব মামলার স্ট্যাটাস কী, তা ওই রেজিস্টারে লিখতে হবে । জেলা স্তরে পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন কমিশনারেটের পুলিশ কমিশনার যেমন এই তল্লাশির নেতৃত্ব দেবেন, তেমনই সমস্ত জোনাল ডিআইজিকে বলা হয়েছে, তাদের অধীনে থাকা জেলাগুলিতে সফরে যেতে । সেখানে সরেজমিনে গিয়ে তাঁদের দেখতে হবে কাজের কাজ কতটা হচ্ছে ।
রাজনৈতিক মহলের মতে, কোনও সন্দেহ নেই চাপের মুখে এই মুহূর্তে রাজধর্ম পালন করতে চাইছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী । বগটুইকে সামনে রেখেই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ এবং প্রশাসন । এখন দেখার, এই অবস্থায় আদৌ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার হাল ছেড়ে কি না !
আরও পড়ুন : Anarul Hossain Arrest : মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেতেই তৎপর পুলিশ, তারাপীঠ থেকে গ্রেফতার ‘পলাতক’ আনারুল