কলকাতা, 23 এপ্রিল : শুরু করেছিলেন চলতি বছরের 6 ফেব্রুয়ারি ৷ পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আগে উপস্থিত হয়েছিলেন বিজেপির জনসভায় ৷ সেখান থেকেই বিধানসভা ভোটের প্রচার কার্যত শুরু করে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি ৷
তার পর গত মার্চের সাত তারিখ সেই প্রচারকেই চরমে তুলেছিলেন কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড থেকে ৷ সেই থেকে যতবার এসেছেন বঙ্গে, ততবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ৷ বিশেষ করে তৃণমূল নেত্রীকে উদ্দেশ্য করে তাঁর ‘দিদি...ও...দিদি’ ডাক সাড়া ফেলে দিয়েছে এবারের নির্বাচনী প্রচারে ৷
কিন্তু এবারের বিধানসভা নির্বাচনের শেষ প্রচারে একবারও চিরাচরিত ঢঙে ‘দিদি...ও...দিদি’ ডাক শোনা গেল নরেন্দ্র মোদির মুখে ৷ এমনকী, একবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম মুখে আনলেন না ৷ তাঁর সরকারের সমালোচনার কথা বললেন ৷ শুধু বিজেপির ইস্তাহারে যে বিষয়গুলির উল্লেখ রয়েছে, সেগুলিই বলে গেলেন ৷
স্বাভাবিক ভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে, যে ডাক মোদির মুখে শুনে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে হাততালির ঝড় উঠত, সেই কথা কেন একবারও উল্লেখ করলেন না তিনি ? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, নির্বাচনী জনসভায় নেতাদের এমন কিছু বলতে যাতে জনতা উদ্বেলিত হয় ৷ প্রচুর হাততালি পড়ে ৷ তাতে নেতা ও জনতার মধ্যে একটা যোগসূত্র তৈরি হয় ৷ কিন্তু ভার্চুয়াল প্রচারে সেই সুযোগ নেই ৷ তাই সুকৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি ৷
কিন্তু কেন তিনি একবারও মমতার সমালোচনায় সরব হলেন না ? সেক্ষেত্রে তো জনতার সঙ্গে যোগসূত্র তৈরি করার ব্যাপার নেই ৷ বরং মমতার সমালোচনা করলে রাজনৈতিক লাভ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিজেপির ৷
রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, শেষ দুই দফায় তৃণমূল কংগ্রেসের গড়ে ভোট ৷ মমতার সমালোচনা করেও সেভাবে লাভ করতে পারবে না বিজেপি ৷ তাই সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখিয়ে বাংলার 69টি আসনের মানুষের মন পাওয়ার চেষ্টা করলেন প্রধানমন্ত্রী ৷
যদিও বিজেপির হার নিশ্চিত বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতা তাপস রায় ৷ বরানগরের ঘাসফুল প্রার্থীর বক্তব্য, করোনা ম্যানেজমেন্টে মোদির সরকার যে ব্যর্থ দেশের মানুষ এখন বুঝতে পারছে । সবাইকে ভুল বোঝালেও, এবার প্রশ্নের মুখে তিনিও। তাই বাকি সব ছেড়ে তিনি কী করেছেন বা কী করতে চান সে কথাই বলছেন । উন্নয়নে নিরিখে ভোট হলে তৃণমূলের কোন বিরোধিতা নেই ।
অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা রোহন মিত্র জানাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রীর সবকিছুই তো স্ক্রিপ্টেড । কিন্তু মানুষের দুর্ভোগ, তাদের ভোগান্তি লুকোনোর জায়গা কোথায় । সময় যত এগোচ্ছে করোনায় কেন্দ্রীয় সরকারের খোকলা চেহারা প্রকাশ্যে আসছে ।
আরও পড়ুন : বিজেপির বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রতিশ্রুতি আসলে জুমলা : ডেরেক
আর সিপিএমের অনাদি সাহুর বক্তব্য, ‘‘দেখুন উনি কী বলেন তাতে মানুষের কোন আগ্রহ আছে বলে আমার মনে হয় না । এই মুহূর্তে মানুষের সবথেকে প্রধান আগ্রহ কীভাবে তারা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে পারবে । এখানে মোদি-দিদি দুজনেই ব্যর্থ । এর জবাব তাঁদের দিতেই হবে ।’’