কলকাতা 7 এপ্রিল : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নপূরণ করতে তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট না দিয়ে কংগ্রেসকে ভোট দেওয়ার আবেদন করলেন অধীর চৌধুরী । বুধবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসে একথা বলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ।
তিনি বলেন, "বিজেপি যেমন কংগ্রেস মুক্ত ভারতবর্ষের স্বপ্ন দেখে, তেমনই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্য কংগ্রেস মুক্ত, বিরোধী মুক্ত বাংলা । একসময় তিনি বলতেন কংগ্রেসকে জাদুঘরে পাঠিয়েছেন । প্রাক্তন কংগ্রেসী হিসেবে নিজেকে ভাবলে লজ্জা বোধ হয় । অথচ নন্দীগ্রামে ভোটের সময় সমর্থন চেয়ে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধির কাছে চিঠি লিখেছেন । যা প্রমাণ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নৈতিক ভাবে পরাজিত হয়েছেন । নন্দীগ্রামের একটি বুথে দু’ঘন্টা বসে থাকলেন । শুধু তাই নয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লেখার বদলে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন ।"
কংগ্রেস যে সারা দেশে ধর্ম নিরপেক্ষ শক্তির মূল কান্ডারি তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি । তাঁর মতে, "মন্দিরে যাওয়ার জন্য কোনও পাণ্ডা ধরার প্রয়োজন নেই । সরাসরি আসতে পারেন সবাই । তাই নবান্নে প্রবেশের জন্য যদি সংযুক্ত মোর্চার শরণাপন্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হন, তাহলে তা অবাক হওয়ার মত ঘটনা হবে না । বিজেপির মতো সাম্প্রদায়িক দলকে রুখতে, ধর্মনিরপেক্ষ সরকার গঠনের যে স্বপ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দেখছেন, তা পূরণ করতে তৃণমূলকে নয়, ভোট কংগ্রেসকে দিতে বলছি ।"
সংযুক্ত মোর্চার জোটে আইএসএফ-এর যোগদান নিয়ে অস্বস্তি ছিল অধীরবাবুর । 28 ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডের ময়দানে সেই ছবি ধরা পড়েছে । এদিন তিনি বলেন, ‘‘2016 সালে বামেদের তরফে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট বাঁধার যে অস্বস্তি ছিল, তা এবার নেই । বরং সংযুক্ত মোর্চা গঠনে নেতৃত্ব দিয়েছে বামেরা । প্রদেশ কংগ্রেসের দু’জন ব্যক্তি উপস্থিত থাকলেও ব্যাটন ছিল বাম নেতৃত্বের কাছে । তাই আসন বণ্টনের প্রাথমিক তালিকায় যখন নতুন দল অর্ন্তভুক্ত করার জন্য সমঝোতা করতে বলা হয়েছিল, তা প্রদেশ কংগ্রেস মেনে নিয়েছে ।"
আব্বাস সিদ্দিকীর দল নিয়ে নিজের অবস্থান জানাতে গিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা এখন নবান্ন জয়কে পাখির চোখ করে এগোচ্ছি । আইএসএফ আমাদের কাছে যে কর্মসূচি দিয়েছে, তাতে সাম্প্রদায়িকতার গন্ধ নেই । তারা আমাদের শর্তে জোটে যোগদান করেছে ৷"
আরও পড়ুন : 8 রিটার্নিং অফিসারের বদলির পর কলকাতার ভোটে কি আরও কড়া হবে কমিশন ?
ব্যস্ত প্রচার সূচির ফাঁকে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে তিনি আরও বলেছেন, "চলতি নির্বাচনে প্রথম থেকে দু’টো দলের লড়াইয়ের কথা বলা হচ্ছে । দু’টো দলই দু’শোর বেশি আসন পাবে বলছে । অথচ মোট আসন সংখ্যা 294 । তাই সংযুক্ত মোর্চাকে তাদের মতো করে সিট জয়ের অঙ্ক সাজাতে হচ্ছে । এখনও পর্যন্ত 91টি সিটের লড়াইয়ে মোর্চা অপ্রাসঙ্গিক হবে না বলতে পারি । তবে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী যে ফের দল ভাঙনের সংকেত দেখছেন, তা দেখে লজ্জা লাগছে । আসলে যেভাবে দল ভাঙিয়ে নিজের দলকে বড় করেছেন, সেই খেলা খেলে আরেকটি দল বড় হচ্ছে । যা আগেও এবং এখনও নিন্দনীয় ।"