কলকাতা, 20 নভেম্বর : বারবার বয়ান বদল । তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছিল ধৃত ট্যাক্সিচালক উত্তম রাম । সোমবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করানোর সময়েও সে স্বীকার করেনি নির্যাতনের কথা । কিন্তু মঙ্গলবার স্বীকার করে নিয়েছে । পুলিশের দাবি, উত্তম যা বলেছে তাতে ধর্ষণের বিষয়টি স্পষ্ট হচ্ছে ৷ ফলে পঞ্চসায়রে গণধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া ধন্দ কেটে গেল অনেকটাই ।
তদন্তকারী অফিসার জানাচ্ছেন, উত্তম অপরাধের মানসিকতাতেই ছিল । সে কারণে নরেন্দ্রপুরের যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে, সেখানকার CCTV এড়িয়ে যেতে চেয়েছে সে । আজ ফের তদন্তকারীরা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করতে তাকে নিয়ে যায় ঘটনাস্থানে । আজ সে যে রুট দিয়ে নির্যাতিতাকে নিয়ে গেছিল তার স্পষ্ট বর্ণনা দেয় । ওই রাস্তার উপরেই আছে একটি ক্লাব । সেই ক্লাবে আছে CCTV ক্যামেরা । ওই CCTV-র ফুটেজ পেয়েছে পুলিশ । তবে তা ঘটনা ঘটিয়ে ফেরার সময়কার । তদন্তকারীদের মনে খটকা ছিল ৷ যাওয়ার সময়ের CCTV ফুটেজ পাওয়া গেল না কেন? আসলে উত্তম জানত ওই ক্লাবে CCTV ক্যামেরা আছে । আর তাই ক্লাবের পিছনের রাস্তা দিয়ে সে ঘুর পথে যায় । অনেক খানি ঘুরে দ্বিতীয় একটি সেতু দিয়ে পার হয় খাল তারপর ঘুরে আসে ওই ক্লাবের বিপরীত দিকের রাস্তায় । পুলিশের ধারণা, অপরাধের মানসিকতা ছিল তার । সে কারণেই এড়িয়ে যেতে চেয়েছিল CCTV ক্যামেরা ।
ঘটনায় আদৌ তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি ছিল কিনা তা অবশ্য এখনও পরিষ্কার নয় । তবে ক্লাবের পিছনের রাস্তা দিয়ে যাবার সময় চেনা কাউকে সে গাড়িতে তুলেছিল কিনা সেটি এখনও পরিষ্কার হয়নি । কারণ কঠিন প্রশ্ন পেলেই উত্তম মত্ত অবস্থার কথা বলে তা এড়িয়ে যাচ্ছে । তবে যে ভাবে বারবার বয়ান বদল করছে তাতে সে কতখানি মত্ত ছিল সে বিষয়েও পুলিশের সন্দেহ রয়েছে । লালবাজার সূত্রে খবর, ঘটনার সময় গাড়িতে উত্তম একাই ছিল বলে জেরায় জানিয়েছে সে । CCTV ফুটেজও একই কথা বলছে । দেখা যাচ্ছে গাড়ির সামনের সিটে বসেছিলেন নির্যাতিতা । তাঁকে নরেন্দ্রপুরের ঘটনাস্থানে নিয়ে গিয়ে গাড়ির মধ্যেই নির্যাতন করেছে বলে জানিয়েছে উত্তম ।
এ দিকে মঙ্গলবার গোপন নির্যাতিতার জবানবন্দি নেয়নি আলিপুর আদালত । নিয়মের জটিলতায় আটকে গেছে । আদালতের নির্দেশ বিশেষজ্ঞকে সঙ্গে নিয়ে নেওয়া হবে তাঁর গোপন জবানবন্দি । এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা জানিয়েছেন, "আমরা এই প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি ।"