ETV Bharat / city

বিহারে অস্ত্র কারখানার পর্দা ফাঁস করল কলকাতা STF, গ্রেপ্তার 7

author img

By

Published : Jun 29, 2020, 4:51 PM IST

জেরা চালিয়ে বিহারে অস্ত্র কারখানার পর্দা ফাঁস করল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স । উদ্ধার হয়েছে 43 সেমি ফিনিশড 9 MM পিস্তল । গ্রেপ্তার করা হয়েছে 7 জনকে।

ছবি
ছবি

কলকাতা, 29 জুন : জেলবন্দী অভিযুক্তদের জেরা করে বড়সড় অস্ত্র কারখানার হদিশ পেল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স । কলকাতা পুলিশের টিম বিহারের স্পেশাল টাস্কফোর্সের সহযোগিতায় সেই রাজ্যের বৈশালির কারখানায় হানা দেয় । উদ্ধার হয়েছে 43 সেমি ফিনিশড 9 MM পিস্তল । গ্রেপ্তার করা হয়েছে 7 জনকে।


পুলিশ সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার করা হয় শওকত আনসারিকে । অস্ত্র কারবারের সূত্র ধরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখন ওই ব্যক্তি রয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলে । পুলিশ হেপাজতে থাকাকালীন শওকত কোনও কথা স্বীকার করেনি । এরপর তাকে আবার জেল হেপাজতে জেরা করা হয় । তখনই সাফল্য পান গোয়েন্দারা । 29 মে আসানসোলের কুলটির নিয়ামতপুরে রেড চালায় কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স । মেলে অস্ত্র কারখানার হদিস। সেখানেই পাওয়া যায় 350 সেমি অটোমেটিক 7 MM পিস্তল । ঘটনায় মহম্মদ ইসার আহমেদ, মহম্মদ আরিফ, সুরজ কুমার সাউ, উমেশ কুমার সাউ, অরুণ বর্মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা চলছিল এই অস্ত্র কারা বানাত। এই ব্যক্তিরাই কি অস্ত্র বানানোর কৌশল শিখে নিয়েছিল ? নাকি অস্ত্র বানাত অন্য কেউ, তা জানার চেষ্টা চলছিল । সেই সূত্র ধরেই বিহারের বৈশালির এই অস্ত্র কারখানার পর্দা ফাঁস করল স্পেশাল টাস্কফোর্স। সেখান থেকে ধৃত 7 জনের মধ্যে 3 জন মুঙ্গেরের বাসিন্দা । তাদের নাম মহম্মদ লাড্ডান, মহম্মদ লালন এবং মহঃ পারভেজ । তারা মুঙ্গেরের বেআইনি অস্ত্র কারখানার হাব কাশেম বাজারের বাসিন্দা । 3 জনই অস্ত্র তৈরির ইঞ্জিনিয়ার। গোয়েন্দারা জেনেছেন, কুলটিতেও কাজ করছিল মুঙ্গেরের অস্ত্র তৈরির “ইঞ্জিনিয়াররা"। প্রশ্ন হল এই ইঞ্জিনিয়ার কারা?

আসলে একটা সময় বিহারের মুঙ্গের ছিল অস্ত্র কারবারের মুক্তাঞ্চল । সেখানে তৈরি দেশি ঘোড়া ছড়িয়ে পড়ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকী তা যেত বাংলাদেশেও । গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ঢাকায় হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত হয়েছিল মুঙ্গেরি অস্ত্র । হাত কাটা নাসিরুল্লাহ সেই অস্ত্র নানাভাবে ঢুকিয়েছিল বাংলাদেশে । সাধারণ লেদ মেশিনে অসাধারণ এক বেআইনি কারবার চলত মুঙ্গেরে । দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এইসব অস্ত্রের দাম অনেকটাই কম । যারা নিখুঁত দক্ষতায় অস্ত্র বানিয়ে ফেলে তাদেরকে বলা হয় ইঞ্জিনিয়ার। অস্ত্র কারবারিদের কোড নেম । গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, বেআইনিভাবে ভারতে ঢোকা বিদেশি 9 MM বা 7 MM পিস্তলের দাম পড়ে যায় 60 থেকে 70 হাজার টাকা। সেখানে মুঙ্গের ইঞ্জিনিয়ারদের তৈরি 9 MM পিস্তল পাওয়া যায় 10 থেকে 15 হাজার টাকায়। স্বাভাবিকভাবেই পাড়ায় পাড়ায় গজিয়ে ওঠা "ডন"-এর কাছে কদর রয়েছে মুঙ্গেরের ওই ইঞ্জিনিয়ারদের হাতের কাজের।


সম্প্রতি বিহার প্রশাসন কড়া মনোভাব নেওয়ায় ওইসব ইঞ্জিনিয়াররা ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে । গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে এমনই তথ্য। সেটা প্রথম সামনে আসে কাঁকিনাড়া অস্ত্র কারখানার পর্দা ফাঁসের পর । 2018 সালের 30 জুলাই সুকু শেখ নামে মালদার কালিয়াচকের এক জালনোটের কারবারিকে STF পাকড়াও করে। তাদের সঙ্গেই ধরা পড়ে আমজাদ রায়ান এবং আব্দুল্লাহ নামে মুঙ্গেরের দুই বাসিন্দা। তাদের কাছে উদ্ধার হয় 1 লাখ টাকার জালনোট এবং 40 টি সেমি ফিনিশড 9 MM পিস্তল। তাদের জেরা করেই জানা যায়, কাকিনাড়ার লাড্ডু কারখানার আড়ালে অস্ত্র কারখানার কথা। পরে আগরপাড়া উষুমপুর এবং রাজারহাটে একই কায়দায় অস্ত্র কারখানা গজিয়ে ওঠার খবর মেলে। গতবছর 10 সেপ্টেম্বর উত্তর 24 পরগনার মিনাখাঁয় শফিকুল গাজির অস্ত্র কারখানার খোঁজ পায় পুলিশ। সেখানেও অস্ত্র বানাচ্ছিল দু'জন ইঞ্জিনিয়ার। তাদের নাম শামসের আলম এবং মহম্মদ ফিরোজ। নিয়ামতপুরে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বিহারের বৈশালিতে ধৃত পারভেজ, লালনদের যোগ রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর।

কলকাতা, 29 জুন : জেলবন্দী অভিযুক্তদের জেরা করে বড়সড় অস্ত্র কারখানার হদিশ পেল কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স । কলকাতা পুলিশের টিম বিহারের স্পেশাল টাস্কফোর্সের সহযোগিতায় সেই রাজ্যের বৈশালির কারখানায় হানা দেয় । উদ্ধার হয়েছে 43 সেমি ফিনিশড 9 MM পিস্তল । গ্রেপ্তার করা হয়েছে 7 জনকে।


পুলিশ সূত্রে খবর, ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রেপ্তার করা হয় শওকত আনসারিকে । অস্ত্র কারবারের সূত্র ধরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখন ওই ব্যক্তি রয়েছে প্রেসিডেন্সি জেলে । পুলিশ হেপাজতে থাকাকালীন শওকত কোনও কথা স্বীকার করেনি । এরপর তাকে আবার জেল হেপাজতে জেরা করা হয় । তখনই সাফল্য পান গোয়েন্দারা । 29 মে আসানসোলের কুলটির নিয়ামতপুরে রেড চালায় কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স । মেলে অস্ত্র কারখানার হদিস। সেখানেই পাওয়া যায় 350 সেমি অটোমেটিক 7 MM পিস্তল । ঘটনায় মহম্মদ ইসার আহমেদ, মহম্মদ আরিফ, সুরজ কুমার সাউ, উমেশ কুমার সাউ, অরুণ বর্মাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানার চেষ্টা চলছিল এই অস্ত্র কারা বানাত। এই ব্যক্তিরাই কি অস্ত্র বানানোর কৌশল শিখে নিয়েছিল ? নাকি অস্ত্র বানাত অন্য কেউ, তা জানার চেষ্টা চলছিল । সেই সূত্র ধরেই বিহারের বৈশালির এই অস্ত্র কারখানার পর্দা ফাঁস করল স্পেশাল টাস্কফোর্স। সেখান থেকে ধৃত 7 জনের মধ্যে 3 জন মুঙ্গেরের বাসিন্দা । তাদের নাম মহম্মদ লাড্ডান, মহম্মদ লালন এবং মহঃ পারভেজ । তারা মুঙ্গেরের বেআইনি অস্ত্র কারখানার হাব কাশেম বাজারের বাসিন্দা । 3 জনই অস্ত্র তৈরির ইঞ্জিনিয়ার। গোয়েন্দারা জেনেছেন, কুলটিতেও কাজ করছিল মুঙ্গেরের অস্ত্র তৈরির “ইঞ্জিনিয়াররা"। প্রশ্ন হল এই ইঞ্জিনিয়ার কারা?

আসলে একটা সময় বিহারের মুঙ্গের ছিল অস্ত্র কারবারের মুক্তাঞ্চল । সেখানে তৈরি দেশি ঘোড়া ছড়িয়ে পড়ত দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এমনকী তা যেত বাংলাদেশেও । গোয়েন্দা সূত্রে খবর, ঢাকায় হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত হয়েছিল মুঙ্গেরি অস্ত্র । হাত কাটা নাসিরুল্লাহ সেই অস্ত্র নানাভাবে ঢুকিয়েছিল বাংলাদেশে । সাধারণ লেদ মেশিনে অসাধারণ এক বেআইনি কারবার চলত মুঙ্গেরে । দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এইসব অস্ত্রের দাম অনেকটাই কম । যারা নিখুঁত দক্ষতায় অস্ত্র বানিয়ে ফেলে তাদেরকে বলা হয় ইঞ্জিনিয়ার। অস্ত্র কারবারিদের কোড নেম । গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, বেআইনিভাবে ভারতে ঢোকা বিদেশি 9 MM বা 7 MM পিস্তলের দাম পড়ে যায় 60 থেকে 70 হাজার টাকা। সেখানে মুঙ্গের ইঞ্জিনিয়ারদের তৈরি 9 MM পিস্তল পাওয়া যায় 10 থেকে 15 হাজার টাকায়। স্বাভাবিকভাবেই পাড়ায় পাড়ায় গজিয়ে ওঠা "ডন"-এর কাছে কদর রয়েছে মুঙ্গেরের ওই ইঞ্জিনিয়ারদের হাতের কাজের।


সম্প্রতি বিহার প্রশাসন কড়া মনোভাব নেওয়ায় ওইসব ইঞ্জিনিয়াররা ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে । গোয়েন্দাদের কাছে এসেছে এমনই তথ্য। সেটা প্রথম সামনে আসে কাঁকিনাড়া অস্ত্র কারখানার পর্দা ফাঁসের পর । 2018 সালের 30 জুলাই সুকু শেখ নামে মালদার কালিয়াচকের এক জালনোটের কারবারিকে STF পাকড়াও করে। তাদের সঙ্গেই ধরা পড়ে আমজাদ রায়ান এবং আব্দুল্লাহ নামে মুঙ্গেরের দুই বাসিন্দা। তাদের কাছে উদ্ধার হয় 1 লাখ টাকার জালনোট এবং 40 টি সেমি ফিনিশড 9 MM পিস্তল। তাদের জেরা করেই জানা যায়, কাকিনাড়ার লাড্ডু কারখানার আড়ালে অস্ত্র কারখানার কথা। পরে আগরপাড়া উষুমপুর এবং রাজারহাটে একই কায়দায় অস্ত্র কারখানা গজিয়ে ওঠার খবর মেলে। গতবছর 10 সেপ্টেম্বর উত্তর 24 পরগনার মিনাখাঁয় শফিকুল গাজির অস্ত্র কারখানার খোঁজ পায় পুলিশ। সেখানেও অস্ত্র বানাচ্ছিল দু'জন ইঞ্জিনিয়ার। তাদের নাম শামসের আলম এবং মহম্মদ ফিরোজ। নিয়ামতপুরে কাজ করা ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে বিহারের বৈশালিতে ধৃত পারভেজ, লালনদের যোগ রয়েছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে খবর।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.