কলকাতা, 26 জুন : প্রতিদিন বাড়ছে জ্বালানির দাম । সঙ্গে লকডাউন। এই দুইয়ের চাপে রাস্তায় নামতে চাইছে না বেসরকারি বাসগুলি। তাই বেসরকারি বাসগুলিকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "পয়লা জুলাই থেকেই 6 হাজার বাসই রাস্তায় নামছে। প্রতিদিনই জ্বালানির দাম বাড়ছে। তবে আমরা বাস ভাড়া বাড়াব না। পয়লা জুলাই থেকে রাস্তায় আরও 500 বাস নামবে। বেসরকারি বাস মালিকদের কাছে আবেদন করছি, আপনারা রাস্তায় বাস নামান। প্রতিটি বেসরকারি বাস-মিনিবাসকে আর্থিক সাহায্য করবে রাজ্য সরকার। আগামী তিন মাস প্রতিটি বেসরকারি বাসকে 15 হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। পয়লা জুলাই থেকে এই আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। পাশাপাশি বাস চালক ও কনডাক্টরদের স্বাস্থ্যবিধির আওতায় আনা হবে।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, 1 জুলাই থেকে মেট্রো চালু করার সম্মতি দেওয়া হয়েছে । আজ নবান্নে মেট্রো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পর রাজ্য সরকারের তরফ থেকে মেট্রো চলাচলের সম্মতি দেওয়া হয়েছে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, যতগুলি সিট আছে ততজন যাত্রী নিয়েই মেট্রো পরিষেবা চালু হোক। আনলক ওয়ান চালু হতেই খুলে গিয়েছে শহরের অধিকাংশ অফিস। ফলে মেট্রো পরিষেবা চালু হলে যাত্রীদের সুবিধা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চালু হোক শহরের লাইফ লাইন, এমনই চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
তবে পরবর্তী লকডাউনে আরও এক ঘণ্টা বাড়ল শিথিলতা। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, "সকাল 5টা থেকে রাত 10টা পর্যন্ত লকডাউনে শিথিলতা আনা হয়েছে।" পাশাপাশি আজ রাজ্যে কোরোনা পরীক্ষার খরচ বেঁধে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, "বেসরকারি হাসপাতালগুলি কোরোনা পরীক্ষার জন্য 2,200 টাকা করে নিতে পারবে।"
স্পেশাল ট্রেন, আন্তর্জাতিক ও আন্তঃরাজ্য বিমান পরিষেবা চালু করা নিয়েও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "আন্তর্জাতিক বিমানের যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোনওরকম স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। প্রতিদিন হটস্পট রাজ্যগুলি থেকে 10টি করে ট্রেন ঢুকছে পশ্চিমবঙ্গে। এইভাবে রাজ্যে কোরোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে। রাজ্য কতদিকে খেয়াল রাখবে? কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আমরা আবদেন জানিয়েছি যে, আরও কিছুদিন আন্তর্জাতিক ও আন্তঃরাজ্য বিমান পরিষেবা বন্ধ রাখা হোক। "
আজ বেসরকারি স্কুলগুলির অপ্রয়োজনীয় ফি নেওয়ার বিষয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "স্কুলগুলির ফি বাড়ানো উচিত নয়। পাশাপাশি কেউ ফি দেবেন না এটাও ঠিক নয়। কারণ স্কুলগুলিকে তাদের কর্মী, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন দিতে হবে। তাই স্কুলগুলির কাছে আবেদন, অন্যান্য খাতে ফি না নিয়ে শুধুমাত্র টিউশন ফি নেওয়া হোক। সবাই মানবিক হন এই আবেদনই রাখছি।"
কোরোনা বিধি ভাঙা নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলিকে নিশানা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, "কেউ কেউ ভাষার সন্ত্রাস চালাচ্ছে।" তিনি আরও বলেন, তৃণমূল রাজনৈতিক জমায়েত করে না। এবছর 21 জুলাই সমাবেশও আগের মতো হবে না।