কলকাতা, ১ এপ্রিল: মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্য করতে এগিয়ে আসছে রাজ্যের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়। কোরোনা মোকাবিলায় আপৎকালীন ত্রাণ তহবিল গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তহবিলে সাধ্যমতো দান করতে এগিয়ে আসছে রাজ্যের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় । ইতিমধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও তাঁদের শিক্ষক, কর্মচারী, আধিকারিকদের একদিনের বেতন দান করার আবেদন জানিয়েছে । কলকাতা, যাদবপুর, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই গোটা রাজ্যের নতুন ও পুরনো মিলিয়ে বহু বিশ্ববিদ্যালয়ই একে একে এগিয়ে আসছে দানে। এক্ষেত্রে রাজ্যের কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের তহবিল থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দান করছে। আবার কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের শিক্ষক, কর্মচারী, আধিকারিকদের একদিনের বেতন বা তাঁদের ইচ্ছেমতো অর্থ দান করার আবেদন জানিয়ে রেখেছে। সেই অর্থ সংগ্রহ করে একত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করা হচ্ছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ টিচার্স ট্রেনিং, এডুকেশনাল প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (WBUTTEPA) তথা রাজ্যের B-ED বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা দিচ্ছি। এছাড়াও আমাদের অধীনে যে কলেজগুলি রয়েছে তাদেরও আবেদন করেছিলাম। কিছু কলেজ মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৩ লাখ হয়েছে। সেটাও আমরা আগামীকাল দিয়ে দিচ্ছি। মোট ১৩ লাখ টাকা আমরা দিচ্ছি। তবে, ১০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দিয়েছি কলেজগুলিকে। আশা করি আরও অর্থ সংগ্রহ হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী, আধিকারিক, শিক্ষকদের কাছেও আবেদন করেছি। তাঁরা এবং আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরাও সাধ্যমতো অর্থ দিচ্ছেন। বাকি অর্থ সংগ্রহ হলে সেটাও আমরা জমা করে দেব।" সোমা বন্দ্যপাধ্যায় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দায়িত্বেও রয়েছেন। তিনি জানান, "সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আধিকারিক ও কর্মচারীদের ইচ্ছামতো দান করতে বলা হয়েছে। সেই অর্থ সংগ্রহ হলে তাও ত্রাণ তহবিলে দিয়ে দেওয়া হবে।"
এদিকে সিধু-কানহু-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপক কর জানাচ্ছেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক, কর্মচারী ও শিক্ষকদের থেকে ৫ লাখ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ৫ লাখ দিয়ে মোট ১০ লাখ টাকা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দেওয়া হবে।" একই বিষয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাই সাহা বলেন, "আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষক, আধিকারিকসহ সর্বস্তরের কর্মচারীরা একদিনের বেতন মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে দেবেন। আশা করছি, অর্থের পরিমাণ ১৫ লাখের বেশি হবে।"
কুচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় নতুন এবং ছোটো। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ২ লাখ টাকা দিয়েছি। আমাদের শিক্ষক, কর্মচারী ও আধিকারিকদের থেকে আরও ১ লাখ ২৩ হাজার ৯০০ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেটাও আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি ।" অন্যদিকে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ আলি বলেন, "আমাদের সমস্ত শিক্ষক, কর্মচারী, আধিকারিকদের আমরা আবেদন করেছিলাম একদিনের বেতন দেওয়ার জন্য। কেউ যদি চান তাহলে বেশি বা কমও দিতে পারেন। স্বতঃস্ফূর্তভাবে শিক্ষক, কর্মচারী এমনকী চুক্তিভিত্তিক যাঁরা রয়েছেন তাঁরাও অনেকে দান করেছেন। ৫ লাখ ৩৫ হাজারের মতো অর্থ সংগ্রহ হয়েছে। আশা করি আগামীকাল অনলাইন ট্রান্সফার করে দিতে পারব মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে।"
ডায়মন্ড হারবার উইমেন'স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অনুরাধা মুখোপাধ্যায় বলেন, "আমরাও ত্রাণ তহবিলে অনুদান দেব। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় তরফ থেকে সবাইকে আবেদন জানানো হয়েছিল দান করার জন্য। সবাই এব্যাপারে উৎসাহী। আশা করি আর কয়েকদিনের মধ্যে সেই টাকা সংগ্রহ করে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা করে দিতে পারব।"