কলকাতা, 23মার্চ : কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা চাকরিপ্রার্থীদের উঠে যেতে চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ অনশনকারী SSC চাকরিপ্রার্থীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, কলকাতা পুলিশের একাধিক আধিকারিক আসেন অনশন মঞ্চে। SSC যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের সভাপতি ইনসান আলিকে একপাশে ডেকে নিয়ে যান। তাঁর সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন অনশনকারী যান। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশের তরফে উঠে যেতে বলা হয়। কারণ, আর্মি থেকে নাকি ময়দান থানায় বলা হয়েছে SSC চাকরিপ্রার্থীরা বিশৃঙ্খলা করছে। তাই মৌখিকভাবে অনশনকারীদের উঠে যেতে বলা হয়। নাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে।
ঠিক কী হয়েছিল ?
পুলিশের সঙ্গে আলোচনার সময় উপস্থিত অনশনকারী প্রতাপ রায়চৌধুরি বলেন, "কিছুক্ষণ আগেই কলকাতা পুলিশের বড় বড় অফিসাররা এসেছিলেন। তাঁরা একটা ফোটোকপি নিয়ে আসেন। আমাদের SSC যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চের সভাপতি ইনসান আলিকে নিয়ে যান। ও ওখানে একা ছিল। আমিও দৌড়ে যাই কী হচ্ছে দেখার জন্য। কার্যত ওকে সব বড় বড় অফিসাররা ঘিরে ধরে। মৌখিকভাবে ওকে হুমকি দিতে থাকে যে, ভালোয় ভালোয় বলছি উঠে যাও, আমরা এখন তুলতে আসিনি। কিন্তু, এরপরে না উঠলে আমরা আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব। আমরা বললাম, আপনি কি আমাদের গ্রেপ্তার করতে এসেছেন? তখন তাঁরা বললেন, না আমরা গ্রেপ্তার করতে আসিনি। কিন্তু, যদি তোমরা উঠে না যাও তাহলে আমরা আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।"
অনশনের আজ ২৪তম দিন। হঠাৎ করে আজ উঠে যেতে বলার কারণ হিসাবে কী বলছে পুলিশ? প্রতাপ বলেন, "তাঁরা কারণ হিসেবে দেখাচ্ছেন আমরা বিনা অনুমতিতে বসে আছি। কিন্তু আপনাদের মারফত আমরা মানুষকে বলতে চাই যে ভারতীয় সংবিধানের ১৯ নম্বর ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে শান্তিপূর্ণ, নিরস্ত্রভাবে আন্দোলন করার অধিকার প্রতিটি মানুষের আছে। আমার কাছে ভোটার কার্ড আছে। আমি এই দেশের নাগরিক। এখানে যতজন বসে আছেন তাঁরা এই দেশের নাগরিক, ভারতীয় সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত তাঁরা। এটা আইনি অধিকার নয়, এটা মৌলিক অধিকার। আর সেটা পুলিশ আমাদের থেকে কেড়ে নিতে পারে না। পুলিশ আমাদেরকে একটা অভিযোগ পত্র দেখিয়েছে যেখানে আর্মি থেকে নাকি বলা হয়েছে, আমরা এখানে বিশৃঙ্খলা করছি। তাই আমাদের উঠে যেতে হবে। কিন্তু, কোনও অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট বা তুলে দেওয়ার অনুমতিপত্র দেখাননি।"
এই পরিস্থিতিতে না উঠলে জোর করে পুলিশ দিয়ে তুলে দেওয়ার আশঙ্কা করছেন? অনশন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব প্রদানকারী অর্পিতা দাস বলেন, "এটা তো হতেই পারে যে, দিদি ২৬ দিন অনশন করেছেন, সেই রেকর্ডটা হয়তো আমরা ভেঙে ফেলতে পারি। সেক্ষেত্রে আমাদের উঠিয়ে দেওয়ার জন্য একটা পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু, তাতে আমরা ভয় পাচ্ছি না। জোর করে হয়তো তুলে দিতে চাইবেন তাঁরা। বারে বারে উঠে যেতে বলবেন। কিন্তু, আমরা সেটা শুনব না। আমরা এখানেই বসে থাকব।"