কলকাতা, 16 জানুয়ারি : বিধানসভার দু'দিনের বিশেষ অধিবেশন ঘিরে শাসক এবং বিরোধী দলের মধ্যে তরজা চলছে । এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় কৃষি আইনের বিরোধিতায় সর্বসম্মত প্রস্তাব শান্তিপূর্ণভাবে গ্রহণ করা যাবে কি না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে শাসক দলের মধ্যেই । 2014 সালে এই রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার কৃষি সংক্রান্ত আইন চালু করেছিল । ওই আইন প্রত্যাহার করা হয় কিনা সেদিকেই কড়া নজর রয়েছে বিরোধীদের । এই অবস্থায় বিরোধীরা বিধানসভায় সংখ্যালঘু হলেও মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তাঁদের বক্তব্য রেকর্ড করে রাখতে চায় বলে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটতে পারেন । সেকারণে অতিরিক্ত সর্তকতা অবলম্বন করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ।
চলতি মাসের 27 এবং 28 তারিখ বিধানসভায় দু'দিনের স্বল্পকালীন অধিবেশন বসতে চলেছে । তার আগে সোমবার অর্থাৎ 25 জানুয়ারি অধ্যক্ষের কক্ষে সর্বদলীয় বৈঠক এবং বিধানসভার কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হবে বলে জানা গিয়েছে । সেই অধিবেশনে বিরোধীরা ফের বর্ধিত অধিবেশনের দাবি জানাবে অধ্যক্ষের কাছে । বিরোধী বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস চায় বিধানসভার অধিবেশন ন্যূনতম 15 দিন চলুক । বিরোধীদের দাবি, দু'দিনের অধিবেশনে সাধারণ মানুষের চাহিদার বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা যাবে না । ন্যূনতম দুই সপ্তাহের জন্য বিধানসভা অধিবেশন বসাতে হবে । গতকালই তারা এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে । যদিও এখনও পর্যন্ত বিরোধীদের আবেদনে সাড়া দেয়নি তৃণমূল কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণাধীন পরিষদীয় দপ্তর ।
আরও পড়ুন : কৃষি আইন বাতিলের প্রস্তাব নিয়ে 2 দিনের বিধানসভা অধিবেশন
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান জানিয়েছেন, "সরকারের বিরুদ্ধে তাঁরা ভোটাভুটি করাতে চান । যদিও দু'দিনের অধিবেশনে আস্থা ভোট করা সম্ভব নয় । সেকারণে অতিরিক্ত সময় চাওয়া হয়েছে ।" অন্তত দু'সপ্তাহ অধিবেশন না চললে আস্থা ভোট চাওয়া যাবে না । সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য যে বিরোধীদের এই কৌশল তা সকলে বুঝতে পারছেন । মুখ্যমন্ত্রী যদি বিধানসভার অধিবেশন বর্ধিত না করেন তাহলে সংশ্লিষ্ট দু'দিন বিধানসভার অধিবেশনে শোরগোল করবে বিরোধীরা । বিধানসভার সচিবালয় সূত্রে জানানো হয়েছে, চলতি বছর বাজেট অধিবেশন হবে ভোট অন অ্যাকাউন্ট । সেকারণে আপাতত বিধানসভার অধিবেশন বেশিদিন হবে না । এরপরেই ভোট অন অ্যাকাউন্টের জন্য অধিবেশন করতে হবে । তাই এখন অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে না বলে বিধানসভা সূত্রের খবর ।
আরও পড়ুন : বিধানসভা ভোটে ভালো ফলের আশায় "বিজয়ী যজ্ঞ" অনুব্রতর
সিপিআইএম বিধায়ক তথা বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "কর্মসংস্থান থেকে আমফান, মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ থেকে মানুষের নিত্যনৈমিত্তিক যন্ত্রণার বিষয়গুলিকে বিধানসভায় তুলে ধরা বিরোধীদের কাজ । সরকার যদি বিরোধীদের গুরুত্ব না দেয়, তাহলে বোঝা যায় রাজ্যের মানুষকে তারা বঞ্চিত করছে ।"