ETV Bharat / city

‘আলাপনের বদলি আসলে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত’ - Government of India

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেপুটেশনে দিল্লিতে ডেকেছে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ আইন অনুযায়ী বিষয়টি সঠিক হলেও এই সিদ্ধান্ত আসলে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রকাশ ৷ কেন ? এই প্রশ্নের উত্তরই ব্যাখ্যা করলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অরুণাংশু চক্রবর্তী ৷

‘আলাপনের বদলি আসলে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত’
‘আলাপনের বদলি আসলে কেন্দ্রের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত’
author img

By

Published : May 29, 2021, 5:49 PM IST

Updated : May 29, 2021, 10:50 PM IST

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেপুটেশনে দিল্লিতে ডেকে নিল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস ক্যাডার রুল, 1954 এর 6 (1) অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের আছে ৷ কারণ, এক্সটেনশন মানে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে ৷ তাই ওই পর্বেও তিনি ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস ক্যাডারের সদস্যই থাকবেন ৷ এক্সটেনশন পর্বে ব্যক্তি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি করবেন ৷ কোনও ক্যাডার হিসেবে চাকরি করবেন না ৷ তাই এই নিয়ে কোনও ধোঁয়াশা থাকা উচিত নয় ৷

কিন্তু যে 1954 সালের যে আইনের কথা উল্লেখ করে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নর্থ ব্লকে কেন্দ্রীয় সরকার ডেকে নিল, সেখানে স্পষ্ট বলা আছে যে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷ আর যাঁকে ডেপুটেশনে নেওয়া হবে, তাঁর অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন ৷ তবে রাজ্য সরকার যদি আপত্তি জানায়, তাহলে অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই নিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ৷ আর সেই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার মানতে বাধ্য ৷

এবার প্রশ্ন হচ্ছে যে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে কি এই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ? আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কি কথা বলা হয়েছিল এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ? তাই বলাই যায় যে এটা একটা প্রতিহিংসামূলক নির্দেশ ৷ যেহেতু কলাইকুণ্ডাতে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বেশিক্ষণ ছিলেন না, তাই প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে ফিরে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিলেন ৷ এর থেকে বোঝা যাচ্ছে যে রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি ৷ তাছাড়া আলোচনা হলে, তা ফলপ্রসূও হতে হবে ৷

তার উপর এখন যশ পরবর্তী জরুরি পরিস্থিতি চলছে ৷ সেই পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত প্রতিহিংসামূলক ও অনৈতিক ৷ যাঁকে তিনমাসের এক্সটেনশন দেওয়া হল রাজ্যের প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে কাজ করার জন্য ৷ তাঁকে রাতারাতি কেন দিল্লিতে ডাকা হল ? দিল্লিতে কি অফিসারের অভাব হয়েছে ? তার সঙ্গে সরকার যদি কোনও সিদ্ধান্ত তড়িঘড়ি করে নেয়, তাহলে সেটাকে বদ ও অসৎ উদ্দেশ্যে (ম্যালাফাইডি) করা বলে ধরতে হবে ৷ এখানেও ঠিক তাই ঘটেছে ৷ একাধিক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এই কথা জানিয়েছে ৷

এর থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে অপদস্থ করতে চাইছে ৷ কারণ, তিন মাসের জন্য ডেপুটেশনে গিয়ে কী করবে ? তাই বলছি যে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত আরবিট্রারি, স্বৈরতান্ত্রিক ৷

আরও পড়ুন : আলাপনকে নিয়ে অচলাবস্থায় কেন্দ্রকেই দুষছে সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মামলা হতেই পারে ৷ তবে সেই মামলা করতে করতেই তিনমাস কেটে যাবে ৷

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেপুটেশনে দিল্লিতে ডেকে নিল কেন্দ্রীয় সরকার ৷ ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস ক্যাডার রুল, 1954 এর 6 (1) অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের আছে ৷ কারণ, এক্সটেনশন মানে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে ৷ তাই ওই পর্বেও তিনি ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস ক্যাডারের সদস্যই থাকবেন ৷ এক্সটেনশন পর্বে ব্যক্তি আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় চাকরি করবেন ৷ কোনও ক্যাডার হিসেবে চাকরি করবেন না ৷ তাই এই নিয়ে কোনও ধোঁয়াশা থাকা উচিত নয় ৷

কিন্তু যে 1954 সালের যে আইনের কথা উল্লেখ করে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে নর্থ ব্লকে কেন্দ্রীয় সরকার ডেকে নিল, সেখানে স্পষ্ট বলা আছে যে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেই এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে ৷ আর যাঁকে ডেপুটেশনে নেওয়া হবে, তাঁর অনুমতি নেওয়া প্রয়োজন ৷ তবে রাজ্য সরকার যদি আপত্তি জানায়, তাহলে অবশ্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এই নিয়ে একতরফা সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে ৷ আর সেই সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার মানতে বাধ্য ৷

এবার প্রশ্ন হচ্ছে যে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে কি এই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ? আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কি কথা বলা হয়েছিল এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ? তাই বলাই যায় যে এটা একটা প্রতিহিংসামূলক নির্দেশ ৷ যেহেতু কলাইকুণ্ডাতে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বেশিক্ষণ ছিলেন না, তাই প্রধানমন্ত্রী দিল্লিতে ফিরে গিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিলেন ৷ এর থেকে বোঝা যাচ্ছে যে রাজ্যের সঙ্গে কোনও আলোচনা হয়নি ৷ তাছাড়া আলোচনা হলে, তা ফলপ্রসূও হতে হবে ৷

তার উপর এখন যশ পরবর্তী জরুরি পরিস্থিতি চলছে ৷ সেই পরিস্থিতিতে এই সিদ্ধান্ত প্রতিহিংসামূলক ও অনৈতিক ৷ যাঁকে তিনমাসের এক্সটেনশন দেওয়া হল রাজ্যের প্যানডেমিক পরিস্থিতিতে কাজ করার জন্য ৷ তাঁকে রাতারাতি কেন দিল্লিতে ডাকা হল ? দিল্লিতে কি অফিসারের অভাব হয়েছে ? তার সঙ্গে সরকার যদি কোনও সিদ্ধান্ত তড়িঘড়ি করে নেয়, তাহলে সেটাকে বদ ও অসৎ উদ্দেশ্যে (ম্যালাফাইডি) করা বলে ধরতে হবে ৷ এখানেও ঠিক তাই ঘটেছে ৷ একাধিক মামলায় সুপ্রিম কোর্ট এই কথা জানিয়েছে ৷

এর থেকে বোঝাই যাচ্ছে যে কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে অপদস্থ করতে চাইছে ৷ কারণ, তিন মাসের জন্য ডেপুটেশনে গিয়ে কী করবে ? তাই বলছি যে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্ত আরবিট্রারি, স্বৈরতান্ত্রিক ৷

আরও পড়ুন : আলাপনকে নিয়ে অচলাবস্থায় কেন্দ্রকেই দুষছে সিপিএম-কংগ্রেস-তৃণমূল

এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মামলা হতেই পারে ৷ তবে সেই মামলা করতে করতেই তিনমাস কেটে যাবে ৷

(মতামত লেখকের নিজস্ব)

Last Updated : May 29, 2021, 10:50 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.