কলকাতা , 1 জুলাই : কসবার ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলল তৃণমূল কংগ্রেস । তার দেহরক্ষীকে রাজভবনে দেখতে পাওয়ার অভিযোগ তুলল রাজ্যের শাসকদল । সেই অভিযোগের পক্ষে প্রকাশ করা হয়েছে ছবিও ৷
বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে সংবাদিক সম্মেলন করেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায় ৷ তিনি বলেন , "প্রতারক দেবাঞ্জন দেবের দেহরক্ষী রাজভবনে কেন? ঘনিষ্ঠতার গুরুত্ব আপনারা বুঝতেই পারছেন । তদন্তকারীদের গোচরে বিষয়টি আনছি , আসল তথ্য সামনে আসুক । রাজ্যপালের সঙ্গে প্রতারকের দেহরক্ষীর যোগ থাকলে তা দেশের পক্ষে ভয়ঙ্কর । "
ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পর বিজেপির তরফ থেকে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে দেবাঞ্জনের ছবি প্রকাশ্যে এনে অভিযোগ করা হয় এই ঘটনার সঙ্গে শাসকদলের যোগ রয়েছে । যদিও তৃণমূল কংগ্রেস গোটা বিষয়টি অস্বীকার করেছে । শাসকদলের বক্তব্য অভিযুক্তের সঙ্গে ছবি থাকা মানে তাঁরাও অপরাধের সঙ্গে যুক্ত এমন নয় ৷ কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের সেই যুক্তি মানতে রাজি হয়নি রাজ্যের বিরোধীদল ।
এবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেবাঞ্জন দেবের দেহরক্ষীর ছবি প্রকাশ্যে এনে রাজভবনকে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে দিল তৃণমূল । একটি ছবি প্রকাশ করে রাজ্যপালকে নিশানা করেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় । তাঁর দাবি, কসবা ভুয়ো টিকাকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবের দেহরক্ষীর সঙ্গে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে এই ছবিতে দেখা যাচ্ছে ।
তিনি অভিযোগ করেন, " এই দেহরক্ষীর মাধ্যমে অনেকের কাছে খাম যেত । যদি দেখা যায় এই দেহরক্ষীর সঙ্গে রাজ্যপালের কোনও সম্পর্ক রয়েছে তাহলে তা ভয়ানক । প্রতারকের দেহরক্ষী রাজ্যপালের বৃত্তে গেল কী করে, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । তদন্ত করে সত্যটা জানা প্রয়োজন । "
একইসঙ্গে, 1996 সালের জৈন-হাওয়ালা মামলা নিয়েও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সুর চড়ান সুখেন্দুশেখর রায় । প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগেই রাজ্যপালকে নিশানা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, " উনি তো নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত । 1996 সালের জৈন-হাওয়ালা কেলেঙ্কারির চার্জশিটে নাম ছিল ওনার ।"
বৃহস্পতিবার সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, " আমাদের সাংবাদিক বৈঠকের পর জৈন-হাওয়ালা মামলার মূল অভিযুক্ত সুরেন্দ্র জৈনের মৃত্যু হয়েছে । তাঁর মৃত্যু কাকতলীয় কি না জানি না । আমাদের সাংবাদিক সম্মেলনের পর আসল লোক মারা গেল । প্যানিক অ্যাটাক হল না গলায় মাছের কাঁটা ঢুকে গেল, এটা যিনি নীরব রয়েছেন তিনি বলতেন পারবেন । এমন দুর্নীতিগ্রস্ত রাজ্যপালকে নিয়োগ করার আগে প্রধানমন্ত্রীর দেখা উচিত ছিল । এমন অভিযুক্ত রাজ্যপালকে বরখাস্ত করা উচিত । "
আরও পড়ুন : হাওয়ালা-জৈন কেলেঙ্কারির চার্জশিটে নাম ছিল ধনকড়ের, অভিযোগ মমতার
এতদিন দেবাঞ্জনের সঙ্গে একাধিক নেতা-মন্ত্রীর ছবি প্রকাশ্যে এনে রাজ্যের শাসকদলের উপর চাপ তৈরি করেছিল বিজেপি । এবার উলটো চাপ তৈরির করতে শুরু করল তৃণমূলও । উল্লেখ্য, বুধবারই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে ভুয়ো টিকাকাণ্ডের পিছনে বিজেপির চক্রান্ত থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে দেবাঞ্জনের ছবি নিয়েও মুখ খুলেছিলেন তিনি । এবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেবাঞ্জনের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল তৃণমূল কংগ্রেস ।