কলকাতা, 30 সেপ্টেম্বর: অতিমারির জেরে গত দু’বছর বন্ধ থাকার আবার হতে চলেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান (Jadavpur University Convocation) ৷ আগামী ডিসেম্বর মাসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হবে ৷ তবে, এ বছর বার্ষিক সমাবর্তন হলেও, হবে না বিশেষ বা সাম্মানিক সমাবর্তন ৷ এমনটাই জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷
2019 সালে শেষবারের মতো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন হয়েছিল ৷ তারপর করোনাকালে দু’বছরে ছেদ পড়েছে ৷ তবে, 2019 সালের বার্ষিক সমাবর্তনে সাম্মানিক ডি লিট দেওয়া নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হওয়ায় করা যায়নি বিশেষ সমাবর্তন ৷ স্পেশাল বা বিশেষ সমাবর্তনে বিশিষ্টদের সাম্মানিক ডি লিট ও ডি এসসি ডিগ্রি দেওয়া হয় থাকে ৷ নিয়ম মাফিক বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কয়েকটি নাম চূড়ান্ত করার পর তা সইয়ের জন্য আচার্যের কাছে পাঠানো হয় ৷
সেই বছর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ছিলেন রাজ্যের তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (বর্তমান উপ-রাষ্ট্রপতি) (Jagdeep Dhankhar) ৷ যে চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তির নাম সাম্মানিক ডিগ্রির জন্য চূড়ান্ত করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, তাঁদের মধ্যে একজনের নাম নিয়ে আপত্তি তোলেন তৎকালীন আচার্য ৷ এই নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি ৷ এমনকি পড়ুয়াদের একাংশের বিক্ষোভ, সমাবর্তনে ভাষণ না দিয়েই তাঁকে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল ৷ তাই সেই বছর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ইচ্ছা থাকলেও করা যায়নি সাম্মানিক সমাবর্তন ৷
2019 সালে যে চার জনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছিল তাঁদের মধ্যে ছিলেন, প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষ, প্রাক্তন বিদেশসচিব সলমন হায়দার, আইএসআই-এর অধিকারিক সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিজ্ঞানী সিএনআর রাও ৷ তবে, সলমন হায়দারকে ডি লিট দেওয়া নিয়ে আপত্তি তোলেন জগদীপ ধনকড় ৷ আর 2021 সালে করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান কবি শঙ্খ ঘোষ ৷ এই পরিস্থিতিতে যেহেতু সেই সময় কারও হাতেই সাম্মানিক ডি লিট উপাধি তুলে দেওয়া যায়নি ৷ তাই এ বারেও সাম্মানিক সমাবর্তনের আয়োজনই করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷
আরও পড়ুন: যাদবপুরের প্রবেশিকায় ধার্য 'ফি', প্রতিবাদে ঘেরাও উপাচার্য ও দুই ডিন
পাশাপাশি, সেই সময় সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে উত্তাল হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি ৷ তাই বার্ষিক সমাবর্তনে যেই পড়ুয়াদের ডিগ্রি নেওয়ার কথা ছিল, তাঁরা রাজ্যপাল তথা আচার্যের উপস্থিতিতে ডিগ্রি নিতে অস্বীকার করেন ৷ তবুও, তৎকালীন রাজ্যপাল সমাবর্তনে যোগ দিতে এলে তাঁকে বাধা দেওয়া হয় এবং শেষ পর্যন্ত তাঁকে ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে যেতে হয় ৷ আর গত দু’বছর করোনার কারণে সমাবর্তন হয়নি ৷ সেই সময় পড়ুয়াদের বাড়িতেই সার্টিফিকেট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷