ETV Bharat / city

মোবাইলের সূত্র ধরে 8 মাস পর কিনারা কড়েয়ার বৃদ্ধ খুনের - KOLKATA POLICE

নভেম্বর মাস নাগাদ ওই মোবাইলে সিম ঢোকানো হয় । দ্রুত সেই মোবাইল ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করা হয় ডায়মন্ড হারবার এলাকা থেকে । তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা যায় তিনি এক ফেরিওয়ালার থেকে ওই মোবাইল কিনেছেন । তারপর সেই ফেরিওয়ালাকে আটক করে পুলিশ ৷ কড়েয়া বৃদ্ধ খুনের কিনারা হল এভাবেই ৷

karaya murder
কড়েয়ার বৃদ্ধ খুন
author img

By

Published : Feb 22, 2020, 9:52 PM IST

কলকাতা, 22 ফেব্রুয়ারি : কোনও CCTV ফুটেজ পাওয়া যায়নি । ঘটনাস্থানে ছিল না কোনও সূত্র । ফলে একটা সময় ভাবা হচ্ছিল, আরও অনেক ঘটনার মতোই কড়েয়ার বৃদ্ধ খুনের ঘটনাও থেকে যাবে রহস্যের আড়ালে । কিন্তু অন্য ভাবনা ভেবেছিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা । তাঁরা হাল ছাড়েনি । ছিল একটাই আশা । বৃদ্ধের মোবাইল ফোন নিয়ে গিয়েছিল আততায়ী । আর তাতেই ওত পেতে বসেছিল গোয়েন্দারা । সেই সূত্র ধরে কিনারা হল কড়েয়ার বৃদ্ধ খুনের । গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক যুবককে । পুলিশের দাবি, খুনের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে সে ।

6 জুন ৷ 2019 । কড়েয়ার 42 নম্বর ব্রড স্ট্রিটের ঘটনা । ওই ঠিকানায় মেয়ের সঙ্গে বসবাস করতেন ষাটোর্ধ্ব বিশ্বজিৎ বসু । ওই দিন একটু বেশি রাতে বিশ্বজিৎবাবুর মেয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন সদর দরজা বন্ধ । দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পরও কোনও সাড়াশব্দ পাননি বাবার । তখন প্রতিবেশীদের ডাকেন । খবর যায় কড়েয়া থানায় । পুলিশ এসে বাড়ির দরজা ভেঙে দেখতে পায়, চেয়ারের উপর বসানো রয়েছে বিশ্বজিৎ বাবুর দেহ । গলায় গভীর ক্ষত চিহ্ন । রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলে, ধারালো ছুরির আঘাতে খুন করা হয়েছে তাঁকে । ঘটনাস্থান থেকে উদ্ধার হয় ধারালো ছুরিটিও । ঘরের লন্ডভন্ড অবস্থা দেখে গোয়েন্দাদের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না লুটের উদ্দেশ্যেই এসেছিল দুষ্কৃতীরা । তবে বিশ্বজিৎবাবুর মেয়ে জানিয়ে দেন খুব বেশি কিছু খোয়া যায়নি । খোয়া গেছে কয়েকটি বাসন-কোসন আর বাবার মোবাইল ফোন । তদন্তে নেমে পুলিশ আশপাশের CCTV ফুটেজ খতিয়ে দেখে । না, আততায়ীর কোন ছবি পাওয়া যায়নি । বিশ্বজিৎবাবুর সম্পর্কিত সব দিক খতিয়ে দেখা হয় । কোনো সূত্র মেলেনি । তখন গোয়েন্দারা শুরু করেন ওই মোবাইল ফোনটিতে চোখ রাখার কাজ ।

অক্টোবর মাস পর্যন্ত সেই মোবাইলে কোন সিম ঢোকানো হয়নি । ফলে একটা সময় এই খুনের ঘটনার কিনারা হবে কিনা তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন উঠে যায় । নভেম্বর মাস নাগাদ ওই মোবাইলে সিম ঢোকানো হয় । দ্রুত সেই মোবাইল ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করা হয় ডায়মন্ড হারবার এলাকা থেকে । তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা যায় তিনি এক ফেরিওয়ালার থেকে ওই মোবাইল কিনেছেন । তারপর সেই ফেরিওয়ালাকে আটক করে পুলিশ, জানা যায় আট হাত ঘুরে ওই মোবাইল ফেরিওয়ালার কাছে এসেছে । তঁদের প্রত্যেককেই আটক করে পুলিশ । পরে জানা যায়, প্রথম যে ফেরিওয়ালা ওই মোবাইল কিনে ছিল, তা পারুলিয়া কোস্টাল থানা এলাকায় মুর্শিদ শেখের কাছে । পুলিশকে ওই ফেরিওয়ালা জানায়, এর আগেও এমন মোবাইল মুর্শিদের কাছ থেকে কিনেছে সে । তবে সে ভাবে তাকে চেনে না । জানে না বাড়ি কোথায় ।

ওই ফেরিওয়ালা পুলিশকে জানায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাসস্ট্যান্ডে আসে ওই যুবক । হোমিসাইডের অফিসারদের তাকে চিনিয়ে দিতে পারে সে । সেইমতো তিনদিন ধরে চালানো হয় নজরদারি । আর তাতেই পর্দা ফাঁস হল কড়েয়া খুনের । মুর্শিদ প্রথমে অবশ্য খুনের কথা স্বীকার করেনি । তাকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, এমনিতে ভাঙাচোরা পুরনো জিনিসপত্র কেনা বেচার কাজ করে সে । আর সেই ফাঁকেই দেখে কোথাও কোনও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা একা থাকছে । কড়েয়ার ব্রডস্ট্রিটের এই বাড়িতে ঘটনার কিছুদিন আগে ঘুরে গিয়েছিল সে । ঘটনার 15 দিন আগে প্রথমবার সে ওই বাড়িতে চুরির চেষ্টা করে । তখন সাফল্য আসেনি । পরে 6 জুন রাতে ঘরের ভিতরে ঢুকে শুরু করে চুরি । বিশ্বজিৎবাবু টের পেয়ে যাওয়ায় তাঁর গলায় ছুরি চালিয়ে দেয় । তারপর পাঁচিল টপকে উধাও হয়ে যায় । পুলিশের দাবি, এই ধরনের আরও এক ঘটনা ফলতা এলাকার ঘটিয়েছে অভিযুক্ত । সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে । আশা করা হচ্ছে, অভিযুক্তের মাধ্যমে সেই ঘটনারও কিনারা করা সম্ভব হবে ।

কলকাতা, 22 ফেব্রুয়ারি : কোনও CCTV ফুটেজ পাওয়া যায়নি । ঘটনাস্থানে ছিল না কোনও সূত্র । ফলে একটা সময় ভাবা হচ্ছিল, আরও অনেক ঘটনার মতোই কড়েয়ার বৃদ্ধ খুনের ঘটনাও থেকে যাবে রহস্যের আড়ালে । কিন্তু অন্য ভাবনা ভেবেছিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা । তাঁরা হাল ছাড়েনি । ছিল একটাই আশা । বৃদ্ধের মোবাইল ফোন নিয়ে গিয়েছিল আততায়ী । আর তাতেই ওত পেতে বসেছিল গোয়েন্দারা । সেই সূত্র ধরে কিনারা হল কড়েয়ার বৃদ্ধ খুনের । গ্রেপ্তার করা হয়েছে এক যুবককে । পুলিশের দাবি, খুনের বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে সে ।

6 জুন ৷ 2019 । কড়েয়ার 42 নম্বর ব্রড স্ট্রিটের ঘটনা । ওই ঠিকানায় মেয়ের সঙ্গে বসবাস করতেন ষাটোর্ধ্ব বিশ্বজিৎ বসু । ওই দিন একটু বেশি রাতে বিশ্বজিৎবাবুর মেয়ে বাড়ি ফিরে দেখেন সদর দরজা বন্ধ । দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকির পরও কোনও সাড়াশব্দ পাননি বাবার । তখন প্রতিবেশীদের ডাকেন । খবর যায় কড়েয়া থানায় । পুলিশ এসে বাড়ির দরজা ভেঙে দেখতে পায়, চেয়ারের উপর বসানো রয়েছে বিশ্বজিৎ বাবুর দেহ । গলায় গভীর ক্ষত চিহ্ন । রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারপাশ । ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলে, ধারালো ছুরির আঘাতে খুন করা হয়েছে তাঁকে । ঘটনাস্থান থেকে উদ্ধার হয় ধারালো ছুরিটিও । ঘরের লন্ডভন্ড অবস্থা দেখে গোয়েন্দাদের বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না লুটের উদ্দেশ্যেই এসেছিল দুষ্কৃতীরা । তবে বিশ্বজিৎবাবুর মেয়ে জানিয়ে দেন খুব বেশি কিছু খোয়া যায়নি । খোয়া গেছে কয়েকটি বাসন-কোসন আর বাবার মোবাইল ফোন । তদন্তে নেমে পুলিশ আশপাশের CCTV ফুটেজ খতিয়ে দেখে । না, আততায়ীর কোন ছবি পাওয়া যায়নি । বিশ্বজিৎবাবুর সম্পর্কিত সব দিক খতিয়ে দেখা হয় । কোনো সূত্র মেলেনি । তখন গোয়েন্দারা শুরু করেন ওই মোবাইল ফোনটিতে চোখ রাখার কাজ ।

অক্টোবর মাস পর্যন্ত সেই মোবাইলে কোন সিম ঢোকানো হয়নি । ফলে একটা সময় এই খুনের ঘটনার কিনারা হবে কিনা তা নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন চিহ্ন উঠে যায় । নভেম্বর মাস নাগাদ ওই মোবাইলে সিম ঢোকানো হয় । দ্রুত সেই মোবাইল ব্যবহারকারীকে চিহ্নিত করা হয় ডায়মন্ড হারবার এলাকা থেকে । তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা যায় তিনি এক ফেরিওয়ালার থেকে ওই মোবাইল কিনেছেন । তারপর সেই ফেরিওয়ালাকে আটক করে পুলিশ, জানা যায় আট হাত ঘুরে ওই মোবাইল ফেরিওয়ালার কাছে এসেছে । তঁদের প্রত্যেককেই আটক করে পুলিশ । পরে জানা যায়, প্রথম যে ফেরিওয়ালা ওই মোবাইল কিনে ছিল, তা পারুলিয়া কোস্টাল থানা এলাকায় মুর্শিদ শেখের কাছে । পুলিশকে ওই ফেরিওয়ালা জানায়, এর আগেও এমন মোবাইল মুর্শিদের কাছ থেকে কিনেছে সে । তবে সে ভাবে তাকে চেনে না । জানে না বাড়ি কোথায় ।

ওই ফেরিওয়ালা পুলিশকে জানায় একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাসস্ট্যান্ডে আসে ওই যুবক । হোমিসাইডের অফিসারদের তাকে চিনিয়ে দিতে পারে সে । সেইমতো তিনদিন ধরে চালানো হয় নজরদারি । আর তাতেই পর্দা ফাঁস হল কড়েয়া খুনের । মুর্শিদ প্রথমে অবশ্য খুনের কথা স্বীকার করেনি । তাকে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, এমনিতে ভাঙাচোরা পুরনো জিনিসপত্র কেনা বেচার কাজ করে সে । আর সেই ফাঁকেই দেখে কোথাও কোনও বৃদ্ধ-বৃদ্ধা একা থাকছে । কড়েয়ার ব্রডস্ট্রিটের এই বাড়িতে ঘটনার কিছুদিন আগে ঘুরে গিয়েছিল সে । ঘটনার 15 দিন আগে প্রথমবার সে ওই বাড়িতে চুরির চেষ্টা করে । তখন সাফল্য আসেনি । পরে 6 জুন রাতে ঘরের ভিতরে ঢুকে শুরু করে চুরি । বিশ্বজিৎবাবু টের পেয়ে যাওয়ায় তাঁর গলায় ছুরি চালিয়ে দেয় । তারপর পাঁচিল টপকে উধাও হয়ে যায় । পুলিশের দাবি, এই ধরনের আরও এক ঘটনা ফলতা এলাকার ঘটিয়েছে অভিযুক্ত । সে বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে । আশা করা হচ্ছে, অভিযুক্তের মাধ্যমে সেই ঘটনারও কিনারা করা সম্ভব হবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.