কলকাতা, 28 ফেব্রুয়ারি: ওড়িশায় পূর্বাঞ্চলীয় আন্তঃরাজ্য পরিষদ বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ দেওয়া নিয়ে কড়া সমালোচনা করল রাজ্যের বিরোধী শিবির ৷ কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরি মমতার এই বৈঠকে যোগ দেওয়ার সমালোচনা করে বলেন, ''বাংলার অগ্নিকন্যার গায়ে আজ আগুনের আঁচ লাগছে না ৷ অমিত শাহের মাধ্যমে BJP-র সঙ্গে সমঝোতা করতেই তিনি বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছেন৷'' বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ''নিজের আত্মরক্ষার জন্যই তিনি ছুটে গিয়েছিলেন৷''
অধীর চৌধুরি বলেন, ‘‘তাঁর আর সেই আওয়াজ নেই ৷ গোটা দিল্লি জ্বলছে, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর গায়ে সেই আগুনের আঁচ লাগছে না ৷ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার আঁচ বাংলার অগ্নিকন্যার গায়ে লাগছে না ৷ তাই নাটক করে, মানুষকে বিভ্রান্ত করে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠক করে বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে যে BJP-র বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা ক্ষীণ হয়ে আসছে ৷ BJP-র বিরুদ্ধে বলতে আপনি ভয় পাচ্ছেন পাছে CBI-ID দিয়ে আপনার বিপদ বেড়ে যায় ৷ তাই সমঝোতার পথ নিয়েছেন৷ তাই যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশ জ্বলছে, তার উল্লেখ নেই বৈঠকে ৷’’
অন্যদিকে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চারদিন অপেক্ষা করেছি শুধু মধ্যাহ্নভোজ, একান্ত মিটিংয়ের জন্য ৷ দিল্লির ঘটনায় রাষ্ট্রসংঘও উদ্বেগ জানালেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু বললেন না ৷ দিল্লির ঘটনার পর প্রথম সভা করবেন অমিত শাহ পশ্চিমবঙ্গেই ৷ এতেই প্রমাণ পাওয়া যায় বন্ধুত্ব ও বিশ্বাসের ৷ বুলবুলের টাকা চাওয়ার জন্য ওড়িশায় যেতে হয় না ৷ বাজেটের আগে চাইতে হয় ৷ যখন কারণ থাকে না, তখন তিনি বৈঠকে যান না ৷ কিন্তু তিনি এখন গিয়েছেন ৷’’
NRC-CAA নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন বৈঠকে কোনও কথা হয়নি ৷ এই প্রসঙ্গে সুজন বলেন, ‘‘কোনটা ঠিক, কোনটা ভুল জানিনা ৷ ওঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নেই ৷ ওঁর সব কথায় বিশ্বাস করবেন কেন?’’ মুখ্যমন্ত্রী খুব ঝগড়ার ভান দেখালেও ব্যক্তিগত বৈঠকে, খাবার টেবিলে, রাজভবনে একান্ত বৈঠকে আগ্রহ মুখ্যমন্ত্রীর ৷''
পুরীতে সমুদ্র ভ্রমণে গিয়েছেন মমতা ৷ মন্দিরে পুজো দেওয়া নিয়েও কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘চারদিন অপেক্ষা করতে হয় অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করার জন্য? ক্রমশ্য প্রকাশ্য, ধরা পড়ে যাচ্ছেন তিনি ৷ ’’