কলকাতা, 1 অক্টোবর: উৎসবের মরশুমে গঙ্গাবক্ষে ফিরল প্য়াডেল স্টিমার (Paddle Steamer) ৷ শুক্রবার হুগলি নদীতে বহু প্রাচীন এই জলযানটি ফের একবার যাত্রা শুরু করে ৷ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় আট দশক আগে (1944 সালে) এই প্য়াডেল স্টিমারটি তৈরি করেছিল একটি ব্রিটিশ সংস্থা ৷ তবে, জলে নামানোর আগে সেটিতে বেশ কিছু সময়োপযোগী পরিবর্তন ও সংস্কার করা হয়েছে ৷
এই 'হেরিটেজ' জলযানের (Heritage River Cruise) নাম 'পিএস ভোপাল' ৷ শুক্রবার, দুর্গাপুজোর পঞ্চমী তিথিতে কলকাতা বন্দর থেকে সফর শুরু করে এই প্য়াডেল স্টিমারটি ৷ ভারতীয় উপমহাদেশে এই ধরনের উদ্য়োগ এটাই প্রথম ৷ কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্য়ান বিনীত কুমার (Vinit Kumar) এই প্রসঙ্গে বলেন, "এই জলযানটি কার্যত নিজের অন্তিমকালে পৌঁছে গিয়েছিল ৷ কিন্তু, এবার সেটি আরও 25 বছর চলবে ৷ আসলে এটির রক্ষণাবেক্ষণ করা বিরাট ঝক্কি ৷ তাই এটিকে কোনও বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয় ৷"
আরও পড়ুন: পুজোয় এক ফোনেই দুয়ারে স্পেশাল মেনু ! সৌজন্যে ডাব্লিউবিসিএডিসি
এই স্টিমারের একতলায় একটি ভ্রাম্যমান সংগ্রহশালা তৈরি করা হয়েছে ৷ সেখানে সামুদ্রিক নানা সামগ্রীর পাশাপাশি সারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তুলে আনা শিল্প সংস্করণও থাকছে ৷ প্রাচীন এই জলযানের ভিতরে রয়েছে আস্ত একটি হলঘর ৷ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সেই ঘরটি মুড়ে দেওয়া হয়েছে দামি বার্মা সেগুনে ৷ এছাড়াও প্য়াডেল স্টিমারের উপরের ডেকে রয়েছে একটি খোলা অংশ ৷
বন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, প্রাচীন এই জলযানটিকে নতুন রূপ দিতে খরচ হয়েছে প্রায় 6 কোটি টাকা ৷ এই কাজে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত দিয়েছে ইস্টার্ন নেভিগেশন নামে একটি বেসরকারি সংস্থা ৷ তাদের পক্ষ থেকে যশবন্ত সিংহী জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের শরিক হতে পেরে তাঁরা অত্যন্ত খুশি ৷ এর জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাতেও ভোলেননি যশবন্ত ৷ তাঁর মতে, এই প্য়াডেল স্টিমারের সংস্কার আদতে ভারতীয় ইতিহাসের সংরক্ষণেরই নামান্তর ৷
যশবন্ত জানিয়েছেন, স্টিমারটির মূল কাঠামো এবং গড়নে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি ৷ তবে, তাতে নতুন, অত্যাধুনিক ইঞ্জিন বসানো হয়েছে ৷ লাগানো হয়েছে নতুন প্রপেলার ৷ যাতে স্টিমারে সওয়ার যাত্রীরা জাহাজ ভ্রমণের অনুভূতি পেতে পারেন ৷